এন্ড্রু কিশোরকে নিবেদন করে ভাই-বোনের গান

ভাই-বোনের এই গান করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরকে। ছবি: সংগৃহীত
ভাই-বোনের এই গান করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরকে। ছবি: সংগৃহীত

শাকিব খান ও ববি অভিনীত রাজত্ব ছবিতে ‘তুমি ছাড়া’ গানটি গেয়ে আলোচনায় এসেছিলেন দোলা। এরপর আরও কয়েকটি গান প্রকাশিত হয় তাঁর। একটু ভিন্ন ধরনের কণ্ঠের কারণে সংগীতাঙ্গনে তাঁর আলাদা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। সেই দোলা এবার নতুন একটি গান নিয়ে শ্রোতাদের সামনে হাজির হলেন। ‘জলভ্রম’ নামের সেই গানে তাঁর সঙ্গে র‍্যাপে অংশ নেন তৌফিক আহমেদ।

‘জলভ্রম’ গানটির তৈরির পেছনে যে মানুষটির ভাবনা কাজ করেছে, তিনি গায়ক ও সংগীত পরিচালক অদিত, দোলার বড় ভাই। ভাই-বোনের নতুন এ গান উৎসর্গ করা হয়েছে সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরকে। অদিত জানান, ‘জলভ্রম’ গানটিতে তিনি ক্ল্যাসিক্যালের সঙ্গে হিপহপ এবং রক ধাঁচের একটা সমন্বয় করেছেন।

অদিত বললেন, ‘বাংলাদেশ অনেক বড় মাপের ক্ল্যাসিক্যাল আর্টিস্ট আছে, কিন্তু তাঁদের নিয়ে খুব একটা কাজ করা হয় না। আমি ‘জলভ্রম’ দিয়ে শুরুটা করলাম। এ ধরনের প্রজেক্টের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে শাস্ত্রীয় সংগীতের শিল্পীদের নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সংগীত নিয়ে এ রকম কাজ করার স্বপ্ন দেখি।’

ক্লাসিক্যাল, রক আর হিপহপের অভূতপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছে পুরো গানটিতে। ৯ জুলাই ফ্যাটম্যান ফিল্মসের ইউটিউবে এটি উন্মুক্ত হয়েছে। ‘জলভ্রম’ গানটি লিখেছেন আবদার রহমান। র‌্যাপ অংশ র‌্যাপার তৌফিক নিজেই লিখেছেন। সুর করেছেন যৌথভাবে অদিত, দোলা ও মুত্তাকী হাসিব। দলের সদস্যদের নিয়ে পুরো গানটির সংগীত পরিচালনা করেছেন অদিত রহমান।

‘জলভ্রম’ গানটি দিয়ে কী বোঝাতে চেয়েছেন? ‘নজরুলের অনেকগুলো গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে একটা সুর করলাম। ‘জলভ্রম’ হচ্ছে পানির সঙ্গে পানির যে দ্বন্দ্ব। আমরা বোঝাতে চেয়েছি, আমরা সবাই মানুষ, সবার রক্তের রং একই। মানুষের সঙ্গে মানুষের যে দ্বন্দ্ব, যার কারণে এত ধ্বংসযজ্ঞ, একে “জলভ্রম” গানে প্রতীকীভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’ বললেন অদিত।

অদিত ও দোলার মা আকলিমা জহিরের বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের বন্ধু ছিলেন এন্ড্রু কিশোর। এই শিল্পীর সঙ্গে কাজ করারও কথা ছিল অদিতের। তাঁর প্রয়াণের সময়ে প্রকাশ করা গানটি তাই তাঁকেই উৎসর্গ করেছেন দুই ভাই-বোন। অদিত বললেন, ‘আমার মায়ের বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের বন্ধু তিনি। তাঁকে আমি কিশোর কাকা ডাকি। কাকার সঙ্গে যখনই দেখা হতো বলতেন, তোর সঙ্গে বসব। সেই বসাটা আর হয়নি। এর মধ্যে তো কাকা আমাদের ছেড়ে চলেই গেলেন। মনটাও ভীষণ খারাপ হয়। গানটাও মুক্তি দেব না ভাবছিলাম। এর মধ্যে কাছের একজন বড় ভাই বললেন, কাকার সম্মানে হলেও গানটি মুক্তি দেওয়া উচিত। তখন ভাবলাম, আসলেই গানটা মুক্তি দেওয়া উচিত। তাঁর মতো বাংলাদেশের এত বড় মাপের একজন শিল্পীকে গান উৎসর্গ করতে পেরে আমরা সম্মানিতবোধ করছি।’