লোকার্নোর প্রতিযোগিতা বিভাগে বাংলাদেশের ছবি

তরুণ নির্মাতা মেহেদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত
তরুণ নির্মাতা মেহেদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত

দেশের বাইরে থেকে একের পর এক সুখবর নিয়ে ফেরেন বাংলাদেশের তরুণ নির্মাতা মেহেদী হাসান। এবার লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের 'বেস্ট ইন্টারন্যাশনাল শর্ট ফিল্ম' বিভাগে প্রতিযোগিতার জন্য প্রথম কোনো বাংলাদেশের ছবি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে মেহেদী হাসানের 'দ্য বোরিং ফিল্ম'। ১৬ মিনিট দৈর্ঘ্যের ছবিটির ভাবনা, চিত্রনাট্য, পরিচালনা ও সম্পাদনা সবই নিজে সেরেছেন মেহেদী হাসান। শুধু তা–ই নয়, ছবির একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন নিজে। ছবিটি প্রযোজনা করেছে মাহাজাবীন খান ও মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন।

২০১৭ সাল থেকে মেহেদী এই ছবির ওপর কাজ করছেন। একটিই চরিত্র। যে চরিত্র মেহেদীর মতোই ঢাকা শহরে থাকে, আশপাশে নির্মাণাধীন ভবনের শব্দে যে চরিত্রটির রাতে ঘুম আসে না। তাই একদিন ঘুমের উদ্দেশ্যে চরিত্রটি চলে যায় কাছের চিড়িয়াখানায়।

সারা বিশ্ব থেকে জমা হওয়া প্রায় ২ হাজার ২০০ সিনেমার ভেতর ৩৪টি দেশ থেকে যে ৪৩টি ছবি লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। তার ভেতর ১২টি ছবি আবার কেবল সুইজারল্যান্ডের, 'বেস্ট সুইস শর্ট ফিল্ম' বিভাগে প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত। বাকি ৩২টি ছবির একটি, বাংলাদেশের দ্য বোরিং ফিল্ম। উৎসবের আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইটে ছবিগুলো সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বের উঠতি নির্মাতাদের বিচিত্র সব ধরনের ভাবনার, নান্দনিক রুচির আর দৃষ্টিভঙ্গির ছবি উপস্থাপন করতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত। মহামারিকালে আমাদের উৎসবটি অনলাইলে চলে যাওয়ায় বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ এখন ছবিগুলো দেখতে পারবেন। আশা করি, এই সিনেমাগুলো আমাদের যতটা আলোড়িত করেছে, আপনাদেরও ঠিক ততটাই নাড়া দেবে।'

আগামী ৫ থেকে ১৫ আগস্ট মহামারির দিনে লকডাউনের বাস্তবতায় লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হবে অনলাইনে।

ছবির একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন নিজে। ছবি: সংগৃহীত
ছবির একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন নিজে। ছবি: সংগৃহীত

মেহেদী হাসান এর আগে বেশ কয়েকটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। সেগুলোর ভেতর ফটোগ্রাফস অব আ স্কুল টিচার, আ'ম টাইম, ডেথ অব আ রিডার উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে তিনি তাঁর প্রথম ফিচার ফিল্ম 'স্যান্ড সিটি' নিয়ে কাজ করছেন। লকডাউনে শেষ করেছেন এর পঞ্চম দফার চিত্রনাট্য। এরপর ছবিটি নির্মাণের ফান্ডিং এর জন্য, আন্তর্জাতিক প্রযোজক যুক্ত করার উদ্দেশ্যে বিশ্বের নামকরা চলচ্চিত্রের বাজারগুলোতে উপস্থাপন করবেন।

এর আগে ৭০তম লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবে ওপেন ডোরস হাব থেকে মেহেদী হাসানের এই চলচ্চিত্র প্রকল্পটি সিএনসি পুরস্কার পায়। এই পুরস্কারের আওতায় ছবিটি বানাতে মেহেদী পেয়েছিলেন আট হাজার ইউরো। সঙ্গে সুযোগ ছিল সুইজারল্যান্ডের একটি ১০০ বছরের পুরোনো ভিলায় ২ মাস থেকে ঘুরে ঘুরে জাদুঘর দেখা আর পাণ্ডুলিপি ঘষামাজার সুযোগ। কান চলচ্চিত্র উৎসবের একটি বিশেষ আয়োজন উৎসবের লা ফেব্রিক দ্য সিনেমা দ্য ম্যুন্দ বিভাগেও স্থান করে নেয় প্রকল্পটি।