সে ছেলে আমার জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল

ফারিয়া শাহরিন। ছবি: সংগৃহীত
ফারিয়া শাহরিন। ছবি: সংগৃহীত

ঈদুল আজহায় কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো হয়েছে ফারিয়া শাহরিনের একাধিক নাটক। ভিন্ন স্বাদের সেসব গল্পের নাটকে অভিনয় করতে পেরে আনন্দিত ফারিয়া। ঈদের নাটকসহ অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।

বড় বিরতির পর অনেকগুলো নাটকে কাজ করলেন। কেমন লাগল?
মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার পাট চুকিয়ে দেশে ফিরে অভিনয়ে ব্যস্ত হই। পরিচালকেরা আমাকে নিয়ে চমৎকার কিছু গল্পে কাজ করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এর মধ্যে আবার করোনা মহামারি শুরু হয়। রোজার ঈদে কোনো কাজ করা হয়নি। কোরবানির ঈদে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করেছি। বহুদিন পর আমার ঈদ চাঙা। নতুন একটি বিজ্ঞাপনচিত্রও প্রচার হচ্ছে। মাঝে দেশে ছিলাম না। এবার দেশে ফেরার পর অনেক কাজ করছি।

নাটকগুলো থেকে সাড়া কেমন? কাজের অভিজ্ঞতাও জানতে চাই।
'ফ্রাস্ট্রেশন', 'ওস্তাদ আলিচাদ বক্সি', 'সাদা মানুষ' ও 'বাট কিন্তু হোয়াট মানে ভালোবাসা' নাটকে অভিনয় করেছি। দর্শকের প্রতিক্রিয়াও ছিল খুবই ভালো, কাজের অভিজ্ঞতাও অসাধারণ। প্রতিদিনই ফেসবুকে নতুন পরিচালকের ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাচ্ছি। এই পরিচালকদের সঙ্গে আমি কখনোই কাজ করিনি। মাঝখানে তো ঝামেলার কারণে নাটকের কাজ থেকে দূরে ছিলাম। কোনো কাজকর্ম করিনি। অনেক দিন পর ফিরে ভালো লেগেছে।

কী ঝামেলা?
বাংলাদেশের বিনোদন অঙ্গনে কাস্টিং কাউচ নিয়ে প্রথম আলোয় আমার একটা সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। সংবাদমাধ্যমে কথা বলার কারণে বিনোদন অঙ্গনের অনেকে আমাকে ভুল বুঝেছিলেন।

কাস্টিং কাউচ নিয়ে যা বলেছিলেন, দিন শেষে তা কি সত্য প্রমাণিত হয়েছে?
আমি যা বলেছিলাম, তা ঠিক ছিল। দিন শেষে তা প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু সবাই ভেবেছিলেন, ঢালাওভাবে সবাইকে বলেছিলাম। আসলে তা নয়। পরে সবাই নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। দেশে ফেরার পর সবাই ভালো কাজের প্রস্তাব দিয়েছেন।

ফারিয়া শাহরিন। ছবি: সংগৃহীত
ফারিয়া শাহরিন। ছবি: সংগৃহীত

তিন বছর আগে কাস্টিং কাউচ নিয়ে কথা বলেছিলেন। এখন কাজ করতে গিয়ে কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েছে?
আমার মনে হয়, পরিবর্তন এসেছে। গুটিকয় মানুষ, যারা আমাকে যন্ত্রণা দিত, তারা একদম সোজা হয়ে গেছে। আজেবাজে ফোনকল এখন আর পাই না। এখন শান্তিমতো কাজ করছি। মাঝে অভিনয়ের সম্মানী নিয়ে ঝামেলা করছিল, এখন সেটাও ঠিক হয়ে গেছে।

শুধু কাস্টিং কাউচ, নাকি অন্য কারণেও অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন?
পড়াশোনার কারণে। ব্যক্তিগত কারণে জীবনটাকে ব্যালান্স করতেও পারছিলাম না।

পড়াশোনা শেষ, কাজ করছেন। এখন কি সব ঠিকঠাক?
এখন সবই ঠিকঠাক। সবকিছু ব্যালান্সড। কাজে ফিরে এখন অনেক উপভোগ করছি। মাঝে এ–ও ভাবছিলাম, পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে চাকরি করব। এখন সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেছি। ভবিষ্যতে ব্যবসা করার ইচ্ছা আছে। কারণ, এ অঙ্গনে তো আজীবন কাজ করতে পারব না।

মাঝে শুনছিলাম বিয়ে করবেন?
বিয়ে তো আমি করতেই চাই। করোনার কারণে বিয়েটা করতে পারলাম না।

ফারিয়া শাহরিন। ছবি: সংগৃহীত
ফারিয়া শাহরিন। ছবি: সংগৃহীত

করোনা কি বিয়ে ঠেকিয়ে দিয়েছে?
(হাসি) করোনার কারণে তো অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়।, তাই করোনা না গেলে বিয়ে করা সম্ভব নয়।

বর ঠিক করা আছে?
হ্যাঁ। আমরা একে অপরকে পছন্দ করি। করোনার কারণে আসলে কিছুই হচ্ছে না। করোনা কেটে গেলে নিশ্চিত বিয়ে।

ফেসবুকে অনেক ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাচ্ছেন বলছিলেন। ফেসবুকে অভিনয়ের প্রশংসা বেশি পান, নাকি প্রেমের প্রস্তাব?

প্রেমের প্রস্তাব বেশি পাই। কিন্তু নাটক প্রচারের কিছুদিন অভিনয়ের প্রশংসাও পাচ্ছি।

প্রেমের প্রস্তাব পেলে কেমন লাগে?
প্রেমের প্রস্তাবে মজাই লাগে। আসলে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। ভবিষ্যতে যখন প্রেমের প্রস্তাব পাব না, কষ্ট লাগবে মনে হয়।

ফেসবুকে প্রেমের প্রস্তাব পাওয়ার খবর বয়ফ্রেন্ড জানে?
আমার বয়ফ্রেন্ড সবই জানে। আমরা দুজন দুজনের প্রতি বিশ্বস্ত। আমার বয়ফ্রেন্ড আমাকে বিশ্বাস করে, আমিও তার বিশ্বাসের অমর্যাদা করি না।

অনেকে আবার বিশ্বস্ততার প্রমাণ দিতে ফেসবুকের পাসওয়ার্ডও দেয়।
এই ভুল তো আমিও করেছি। একজনকে আমার পাসওয়ার্ড দিয়েছিলাম। আমার আক্কেল হয়ে গেছে। সে ছেলে আমার জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল। আমি মনে করি, প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রাইভেসি থাকা উচিত। বিশ্বাস রাখতে হবে। তার পাসওয়ার্ড আমি চাই না, আমারটাও সে চায় না। আমরা একে অপরকে বিশ্বাস করি।