'গান করলেই শিল্পী হওয়া যায় না'

ক থো প ক থ ন: অনুপ ঘোষাল। ভারতের বাংলা গানের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশ টিভি আমন্ত্রণ জানিয়েছে তাঁকে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দেশ টিভিতে তিনি গান গেয়েছেন। তাঁর আগে বিকেলে প্রথম আলোকে বিশেষ সাক্ষাৎকার দেন তিনি

অনুপ ঘোষাল  ছবি: খালেদ সরকার
অনুপ ঘোষাল ছবি: খালেদ সরকার

স্বাধীনতার দিনে...
২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে এবার আমি বাংলাদেশে এসেছি। এ দেশের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমি নিয়মিতই যাই। আমার পূর্বপুরুষের বাড়িও শরীয়তপুরের ছোটগাঁও গ্রামে। এখন ভৌগোলিকভাবে আমরা ভিন্ন হলেও সংস্কৃতি ও মানসিকভাবে তো এক, আত্মা এক।
গানে হাতেখড়ি...
আমি বেড়ে উঠেছি সংগীতময় এক পরিবারে। ছোট থেকে গানের ভেতর বড় হয়েছি। মা আর বোনের কাছে আমার গানে হাতেখড়ি। একসময় ‘শিশু মহল’ নামে গানের অনুষ্ঠানে গান করতাম। তখন আমি এত ছোট ছিলাম যে মাইক্রোফোনের নাগাল পাওয়ার জন্য আমাকে বালিশের ওপর বসিয়ে দেওয়া হতো।
সত্যিকারের গুরু চাই...
বিভিন্ন গুরুর কাছে গান শিখেছি। ধ্রুপদি সংগীত শিখেছি সুখেন্দু গোস্বামীর কাছে। দেবব্রত চক্রবর্তীর কাছে শিখেছি রবীন্দ্রসংগীত—এভাবে নানাজনের কাছে গান শিখে আমার মনে হয়েছে, গানের ক্ষেত্রে সত্যিকারের গুরু পাওয়া খুবই জরুরি। একটা কথা বলা দরকার, গান করলেই শিল্পী হওয়া যায় না। এ জন্য কঠোর সাধনার প্রয়োজন।
‘বাহ্! এ তো দারুণ গান করে’...
১৯৬৮ সালের কথা। গুপি গাইন বাঘা বাইন ছবিতে গান গাইতে পারা আমার জন্য ছিল বড় ঘটনা। গানের ভুবনে আমি তখন একেবারেই নতুন। সত্যজিৎ রায় আমার গান শুনলেন। বললেন, ‘বাহ্! এ তো দারুণ গান করে’। এর পরই এল তাঁর ছবিতে গান গাওয়ার সুযোগ। পরে তাঁর হীরক রাজার দেশে ছবিতেও আমি গান করেছি।
এবং সত্যজিৎ...
সত্যজিৎ রায়ের স্ত্রী আমার মায়ের বন্ধু ছিলেন। তাঁর মাধ্যমেই সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে পরিচয় ও গান গাওয়ার সুযোগ। কোনো ছবিতে গান গাওয়ার আগে সত্যজিৎ রায় ২১-২২ দিন ধরে মহড়া করতেন। তারপর সবকিছু ঠিকঠাক হলে গান ধারণ করতেন। তিনি ছিলেন দারুণ পারফেকশনিস্ট। ফলে তাঁর সঙ্গে কাজ করতে গেলে আলাদা প্রস্তুতির দরকার হতো।
নজরুলের গান...
অবিশ্রান্তভাবে আমি নজরুলের গান গেয়েছি। কারণ, নজরুলের জীবনসংগ্রাম আমাকে বিমোহিত করে। এ ছাড়া তাঁর গানগুলোও অসাধারণ।