পুরস্কার দিলেন এবং নিলেন তারকারা

রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন শামীম আরা নীপা ও তাঁর দল নৃত্যাঞ্চল । ছবি: সাহাদাত পারভেজ
রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন শামীম আরা নীপা ও তাঁর দল নৃত্যাঞ্চল । ছবি: সাহাদাত পারভেজ

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘দেবে আর নেবে, মেলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে।’ সেটাই যেন হলো গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানে। আলো ঝলমল মঞ্চে তিন ঘণ্টার মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে দাঁড়ালেন দেশের চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, সংগীতসহ বিনোদনজগতের তারকারা। কণ্ঠশিল্পী, অভিনয়শিল্পী, চিত্রপরিচালক, চিত্রনাট্যকারও হলেন সম্মানিত। তাঁরা আড্ডা দিলেন, কথা বললেন, উৎসবমুখর পরিবেশে পুরস্কার দিলেন এবং নিলেন।
জাঁকজমক এ আয়োজনের শুরুতেই বরেণ্য অভিনেতা রাজ্জাকের হাতে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার-২০১৪ তুলে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় পাঠকদের সরাসরি ভোটে তারকা জরিপ, বিচারকমণ্ডলীর রায়ে টিভি সমালোচক ও চলচ্চিত্র সমালোচক পুরস্কার দেওয়া-নেওয়া। ১৪ জনের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে। আর পুরস্কার দেওয়ার জন্য উপস্থাপক বিভিন্ন সময়ে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি অঙ্গনের সফল তারকাদের।
শুরুতে দেওয়া হয় সমালোচক পুরস্কার। সমালোচকদের বিবেচনায় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেডের মৃত্তিকা মায়া। পুরস্কারটি দিতে মঞ্চে আসেন বরেণ্য অভিনয়শিল্পী সারাহ্ বেগম কবরী ও ক্রিকেটার আকরাম খান। চলচ্চিত্রটির প্রযোজক হিসেবে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর। এ বিভাগে শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে শিখন্ডী কথা ছবির জন্য পুরস্কার পান মহম্মদ হান্নান। প্রয়াত এই পরিচালকের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন তাঁর ছেলে ও মেয়ে। পুরস্কার দিতে মঞ্চে আসেন অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন ও মহিলা ফুটবলার সুইনু প্রু মারমা। সমালোচকদের বিবেচনায় চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ পুরুষ শিল্পী হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন যৌথভাবে মৃত্তিকা মায়া ছবির জন্য রাইসুল ইসলাম আসাদ ও শিখন্ডী কথা ছবির জন্য রাখাল সবুজ। পুরস্কারটি তুলে দেন অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ ও ক্রিকেটার গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। চলচ্চিত্রে নারী শিল্পীর শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পান একই বৃত্তে ছবিতে অভিনয়ের জন্য নাজনীন চুমকি। তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন চিত্র অভিনেতা আলমগীর ও মহিলা ক্রিকেটার সাথিরা জাকির জেসি। এ বিভাগের পুরস্কার নির্ধারণে জুরিবোর্ডে পরিচালক শহিদুল ইসলাম খোকনের সভাপতিত্বে সদস্য হিসেবে ছিলেন অনুপম হায়াৎ, রোকেয়া প্রাচী ও নাদির জুনাইদ।
সমালোচকদের বিচারে ছোট পর্দায় (টেলিভিশন) শ্রেষ্ঠ নির্দেশক হিসেবে পুরস্কার পান পাড়ি নাটকের জন্য

ওয়াহিদ আনাম। পুরস্কারটি তুলে দেন তারানা হালিম ও ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস। জং কুটুম্বপুর নাটকের জন্য শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকারের পুরস্কার পেয়েছেন পান্থ শাহরিয়ার। এটি তুলে দেন নাট্যাভিনেত্রী মিতা চৌধুরী ও ক্রিকেটার হাসিবুল হোসেন। এ বিভাগে শ্রেষ্ঠ টিভি অভিনয়শিল্পীর পুরস্কার পেয়েছেন পুরুষ শাখায় সেই রকম চা খোর নাটকে অভিনয়ের জন্য মোশাররফ করিম। একই বিভাগে নারী শাখায় সীমানা পেরিয়ে নাটকে অভিনয়ের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন ফারজানা ছবি। এ দুটি পুরস্কার তুলে দেন বিপাশা হায়াত ও ক্রিকেটার নাসির হোসেন এবং ঈশিতা ও ক্রিকেটার জাভেদ ওমর বেলিম। সমালোচক বিভাগে নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদারের সভাপতিত্বে জুরিবোর্ডে ছিলেন ইনামুল হক, সালাহউদ্দিন লাভলু, তারানা হালিম ও ইস্রাফিল শাহিন।
চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনে সমালোচক বিভাগের পর শুরু হয় দর্শক জরিপে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়ার পালা। ২০১৩ সালে দর্শকের ভোটে শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন ‘এক্স প্রেম’ গানের জন্য আসিফ আকবর। জনপ্রিয় এ শিল্পীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন কণ্ঠশিল্পী আবিদা সুলতানা ও ক্রিকেটার এনামুল হক জুনিয়র। শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পীর পুরস্কার পান ‘আকাশ হতে চাই’ গানের জন্য ন্যান্সি। তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দী ও ক্রিকেটার জাহানারা।
দর্শকদের ভোটে সেরা পুরুষ অভিনয়শিল্পী হয়েছেন সিকান্দর বক্স এখন বিরাট মডেল নাটকে অভিনয়ের জন্য মোশাররফ করিম। নারী শাখায় যদি ভাল না লাগে দিও না মন ২ নাটকে অভিনয়ের জন্য তিশা। এ দুটি পুরস্কার তুলে দেন রোকেয়া প্রাচী ও ক্রিকেটার এহসানুল হক সিজান এবং তৌকীর আহমেদ ও শ্যুটার শারমিন আক্তার রত্না। দর্শকদের ভোটে চলচ্চিত্রে অভিনয় শাখায় পুরুষ শিল্পী হিসেবে পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী ছবিতে অভিনয়ের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন শাকিব খান। নারী বিভাগে একই ছবিতে অভিনয়ের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন জয়া আহসান। এ দুটি পুরস্কার তুলে দেন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী মিশা সওদাগর ও ক্রিকেটার লতা মণ্ডল এবং ফুটবলার আমিনুল এবং অভিনেত্রী দিতি।