বন্ধুদের কাছে অহনা ছিলেন 'জিরাফ'

অহনা
অহনা

 নিজের ভালো নাম অহনা রহমান হলেও এই মডেল অভিনেত্রীকে পরিচিত এবং কাছের মানুষেরা ডাকেন ‘লাকি’ নামে। অবশ্য স্কুলজীবনে অহনাকে তাঁর কাছের বন্ধুরা যে উপাধি দিয়েছিলেন, সেটি বেশ মজার। অনেক লম্বা হওয়ার কারণে তখন বন্ধুরা অহনাকে ডাকতেন ‘জিরাফ’ বলে।
ছোটবেলায় পাড়ার খেলার সঙ্গীদের কাছে প্রতিদিন মার খেতেন অহনা। এভাবে নিয়মিত মার খেয়ে মায়ের কাছে এসে বিচার দেওয়া অনেকটা অভ্যাসে পরিণত হয় তাঁর। ফলে অভিযোগ শুনে শুনে ক্লান্ত বিরক্ত অহনার মা একদিন তাঁকে বললেন, এখন থেকে যে বা যাঁরা তাঁকে মারবে, তাঁদের মার দিয়ে না এলে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ। এর পরের কাহিনি হলো, খেলার সঙ্গীদের যাঁরাই অহনাকে মার দিত, তাঁদেরকে উল্টো কয়েক ঘা লাগিয়ে দিয়ে তিনি ছুটতেন মায়ের কাছে।
অনেকেই হয়তো জানেন না, স্কুলজীবনে ‘বিচ্ছু বাহিনী’ নামে একটা দল গঠন করে সে দলের দলনেতা ও সেরা ‘বিচ্ছু’ তকমাটি পেয়েছিলেন তিনি নিজেই। বিচ্ছু বাহিনীর প্রধান হয়ে এ সময় তাঁর একমাত্র কাজ ছিল অপ্রিয় মানুষদের মাথায় চুইংগাম লাগিয়ে দেওয়া।
স্কুলজীবনের এক বার্ষিক বনভোজনে অহনা তাঁর স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গিয়েছিলেন বোটানিক্যাল গার্ডেনে। সেখানে তখন চলছিল নায়ক মান্নার একটি সিনেমার শুটিং। মান্নাকে চর্মচক্ষে দেখতে পাওয়াটা সে সময় অহনার জন্য ছিল আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো ঘটনা। এমনকি মান্না যখন অহনাকে গালে হাত ছুঁইয়ে আদর করে দিয়েছিলেন, অহনার কাছে তা ছিল স্বপ্নের মতো। ফলে মান্নার স্পর্শ পাওয়া গালটি ওই রাতে নাকি অহনা কাউকে—এমনকি তাঁর মাকেও স্পর্শ করতে দেননি।
ছোটবেলা থেকে দুটো লক্ষ্য সামনে নিয়ে বড় হয়েছেন অহনা—পাইলট হবেন, নয় অভিনয়শিল্পী। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় লক্ষ্যতেই নিজের ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন তিনি।
একটি পণ্যের বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে মিডিয়াজগতে পদার্পণ তাঁর। ছোটপর্দায় অসংখ্য নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি একাধিক চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন।
আপনি কি জানেন, আজ সবাই যাঁকে অভিনয়শিল্পী হিসেবে চেনেন, সেই অহনা স্কুলে পড়ার সময়ে বেশ কয়েকটি নাটক লিখেছিলেন। এখানেই শেষ নয়, এ সময় নিজের লেখা নাটকের নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
অনেকেই হয়তো জানেন না যে একজন সফল অভিনেত্রী হওয়ার পাশাপাশি অহনা একজন সফল ঘটকও। অহনার ঘটকালিতে এর মধ্যেই তাঁর ছয়জন বন্ধুবান্ধবীর বিয়ে হয়েছে।
গ্রন্থনা: আবদুল ওয়াজেদ