পূজার দিনে

ঢাকের বাদ্য আর উলুধ্বনির আহ্বানে বছর ঘুরে আবার এল শারদীয় দুর্গোৎসব। পূজা মানেই আনন্দ। সেই আনন্দ ছুঁয়ে গেছে তারকাদেরও। পূজার দিন মানেই পূজামণ্ডপে ঘুরে বেড়ানো। দেবীদর্শন। বিনোদনজগতের তিন তারকা পূজার দিনের স্মৃতিচারণা করলেন দেব দুলাল গুহর কাছে।

সুবীর নন্দী
সুবীর নন্দী

পূজার আনন্দ অনেক গুণ বেড়ে গেছে—সুবীর নন্দী
এবার আমার পূজার আনন্দ অনেক গুণ বেড়ে গেছে। আমার নাতি হয়েছে। শিবম, ওর বয়স ১০ মাস। ওর জন্য নতুন জামা কেনা শেষ। এই জামা পরেই দাদুভাই আমাদের সঙ্গে পূজায় মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরবে। এখন আর পূজার ছুটিতে গ্রামে যাওয়া হয় না। ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন মঠ, জগন্নাথ হল, ফার্মগেট, মতিঝিল ও কলাবাগানের পূজামণ্ডপগুলোয় যাব। আমাদের সময় পূজায় হৃদয়ের টানটা ছিল বেশি। এখন উল্লাস বেশি হয়। সেসব দিন আর ফিরে আসবে না। এবার পূজা আর ঈদ উপলক্ষে কয়েকটি টিভি চ্যানেলে গান গেয়েছি। আমার গানের অ্যালবাম বেরিয়েছে। নাম গানের সুরে আমায় পাবে।

কেউ আর রং দেয় না —অপর্ণা ঘোষ

অপু বিশ্বাস, কিশোর ও অপর্ণা ঘোষ। ছবি: প্রথম আলো
অপু বিশ্বাস, কিশোর ও অপর্ণা ঘোষ। ছবি: প্রথম আলো


পূজার মজাটা তো ছোটবেলায়ই বেশি থাকে। চট্টগ্রামে আমাদের পাড়ায় বেশ জাঁকজমকভাবে পূজা হয়। ছোটবেলায় পূজার সময় দলবেঁধে গুনে গুনে চট্টগ্রামের সব কটি মণ্ডপে যেতাম। এখন আমি টিভি আর চলচ্চিত্রে নিয়মিত কাজ করছি। সবাই আমাকে চেনেন। তাই এখন নিজের পাড়া ছাড়া আর কোথাও যাওয়া হয় না। পূজার সময় বাসায়ই থাকি। আত্মীয়স্বজন আসেন। যেহেতু বেশির ভাগ সময় ঢাকায় থাকি, পরিবারের সবার সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য এটাই সবচেয়ে ভালো উপলক্ষ। দশমীতে ছোটবেলা থেকে প্রতিবছরই পতেঙ্গা সৈকতে যাই, বিসর্জন দেখি। এখন পূজার দিনে সকালে উঠে স্নান করে নতুন শাড়ি পরে মণ্ডপে যাওয়া, বড়দের প্রণাম করি। তারপর বরণের সময় সিঁদুর খেলা, রং খেলা খুব মিস করি। এখন ছোটরা মজা করে, আমি দেখি। মন বলছে, আমাকে কেউ রং দিয়ে যাক। কিন্তু কেউ আর রং দেয় না। ভাবে, আমি যদি আবার কিছু মনে করে বসি!
দল ভারী করে পূজা দেখতে বের হই —কিশোর
পূজা বলতে ছেলেবেলার পূজাকেই বুঝি। কত মজা হতো তখন! আমার কাছে সবচেয়ে আকর্ষণের বিষয় ছিল ঢাকের শব্দ। কিছু না বুঝেই ঢাকের কাছে চলে যেতাম। ঢাকির ঢাক বাজানো দেখতাম। এভাবে দেখতে দেখতে একদিন ঢাক বাজানো শিখেও গেলাম! এখন আমি পূজায় বাড়ি গেলে শখের বশে ঢাক বাজাই। এখন পূজার ছুটিতে বাড়ি যাওয়া হয় না। পুরান ঢাকার পূজামণ্ডপগুলোয় ঘুরে ঘুরে পূজা দেখি। আর যদি বাড়ি যাওয়ার সুযোগ হয়, তবে মা-বাবা আর ছোট ভাইয়ের জন্য পূজার উপহার সঙ্গে নিতে ভুলি না। সময়টা বদলেছে, আমি বড় হয়েছি, কিন্তু পূজা উদ্যাপনের মধ্যে তেমন পার্থক্য দেখি না। কারণ, আমি সব সময়ই এলাকার মানুষের খুব প্রিয়, সবার সঙ্গে মিশি, কথা বলি। আগে শুধু দু-তিনজন বন্ধুর সঙ্গে পূজা দেখতে বের হতাম, এখন দল ভারী করে বের হই। খুব মজা করি।

পূজার সময়টা খুব মিস করছি
—অপু বিশ্বাস
ছোটবেলায় পূজায় অনেক মজা হতো। তখন অবশ্য আমি অপু বিশ্বাস হয়ে উঠিনি। মহালয়া থেকেই শুরু হতো পূজার আমেজ। মহালয়া দেখার জন্য খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতাম। তার আগেই কেনাকাটা শুরু হয়ে যেত। পূজার সময় নানা ধরনের মেলা হয়। মেলা থেকে নানান জিনিসপত্র কিনতাম।
২০০৬ সালে কোটি টাকার কাবিন ছবিটি মুক্তির পর নিজের মতো করে পূজা উদ্যাপনের সুযোগ শেষ হয়ে যায়। এরপর ছবিতে ব্যস্ততা বেড়ে যায়।
২০১১ সালে শাকিবকে সঙ্গে নিয়ে বগুড়ায় পূজা উদ্যাপন করতে গিয়েছিলাম। গভীর রাতে আমরা পূজামণ্ডপে যাই। তবে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল। চলচ্চিত্রে ব্যস্ততা বাড়ার পর যখনই পূজামণ্ডপে গিয়েছি, প্রতিবারই গিয়েছি গভীর রাতে।
নায়িকা হওয়ার আগের পূজার সময়গুলো এখন খুব মিস করি। বছরের বেশির ভাগ সময় ছবির কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। পূজার সময় আত্মীয়স্বজন, যাঁদের সঙ্গে অনেক দিন দেখা হয় না, এই সময় বাড়ি এলে অনেকের সঙ্গে দেখা হয়। কয়েকটা দিন ভালোভাবেই কেটে যায়। এবারও ইচ্ছে ছিল পূজায় বগুড়া যাব। কিন্তু ৩ অক্টোবর কাতার যেতে হবে। তিনটি ছবির শুটিংয়ের জন্য ২০ দিন দেশের বাইরে ছিলাম। এখন ছবিগুলোর ডাবিংয়ের কাজ চলছে। তাই এবার পূজায় বগুড়া যাওয়া হচ্ছে না। খুব খারাপ লাগছে। পূজার সময়টা খুব মিস করছি।
অনুলিখন: মনজুর কাদের