'শ্রেয়সী'র বাড়ল সময়

গ্যালারি টোয়েন্টি ওয়ানে আয়োজিত শ্রেয়সী প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া দুটি চিত্রকর্ম
গ্যালারি টোয়েন্টি ওয়ানে আয়োজিত শ্রেয়সী প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া দুটি চিত্রকর্ম

প্রদর্শনী শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল ৪ অক্টোবর। কিন্তু দর্শকদের আগ্রহের কারণে ‘গ্যালারি টোয়েন্টি ওয়ান’-এ শুরু হওয়া ‘শ্রেয়সী’ শিরোনামের দলীয় প্রদর্শনীটি এখন চলবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। জানালেন শিল্পী এবং গ্যালারির উদ্যোক্তা শামীম সুব্রানা।
বাইরে ঝুম বৃষ্টি। কাকভেজা হয়েই ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোডের সুবিশাল ভবনের স্বয়ংক্রিয় লিফটের দরজা খুলে গ্যালারি টোয়েন্টি ওয়ানে ঢুকতেই একটি চমৎকার ভাস্কর্য চোখে পড়ল। ‘দ্য ডোর’ ভাস্কর্যটি দেখে মনে হলো, যেন প্রদর্শনীকক্ষে আসা দর্শকদের স্বাগত জানাতেই দরজায় অপেক্ষারত এক নারী। রং, রেখা আর ক্যানভাসের আশ্রয়ে চমৎকার আরও কিছু চিত্রকর্ম দেয়ালে ঝুলছে। মেঝেতে সাজানো আরও কয়েকটি ভাস্কর্য। নানান অভিব্যক্তি নিয়ে নারীরা যেন মূর্ত হয়েছেন সেখানে।
‘শ্রেয়সী’ নামটি সহজেই বলে দেয়, এখানে স্থান পাওয়া কাজগুলোর বিষয়বস্তু, শিল্পীর ভাবনা, উদ্দেশ্য—সবকিছুর সঙ্গেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে নারী কিংবা নারী-সংশ্লিষ্টতা। বাস্তবতাও তাই। শিল্প ও সামাজিক সংগঠন ‘সাঁকো’র আয়োজনে প্রদর্শিত শ্রেয়সীর নেপথ্যেও রয়েছে নারীর সর্বাঙ্গীণ উপস্থাপন। অংশ নিচ্ছেন সাঁকোর আট শিল্পী ফারেহা জেবা, ফরিদা জামান, ফারজানা ইসলাম, কনকচাঁপা চাকমা, কুহু, নাইমা হক, রেবেকা সুলতানা ও সুলেখা চৌধুরী। এ ছাড়া সংগঠনের বাইরে আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে নিজেদের শিল্পকর্ম প্রদর্শন করছেন আরও তিনজন—শিল্পী মিনি করিম, সামিনা নাফিজ ও শামীম সুব্রানা।
প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া প্রতিটি শিল্পকর্মই মুগ্ধতা ছড়ায়। নারীর প্রধান সৃষ্টিশীলতার প্রতীক মাতৃত্বের নানা দিক, অবস্থান, ত্যাগ, প্রাপ্তি ও প্রকৃতির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশে শিল্পী সুলেখা চৌধুরীর ‘মা’ ছবিটি অ্যাক্রিলিক মাধ্যমে করা। একটু এগোলেই শিল্পী কনকচাঁপা চাকমার বেশ কয়েকটি চিত্রকর্ম। ‘সবুজের ওপর সুখ’ ছবিটিতে দেখা যায়, পাহাড়ের গায়ে বসে মনের সুখে দুই নারী গল্প করছেন। মূলত আদিবাসী নারীর সুন্দর সুখের কিছু মুহূর্তের গল্প আর পাহাড়ের নয়নাভিরাম দৃশ্যের প্রকাশ উঠে এসেছে শিল্পীর সব কটি কাজে। শিল্পী ফারজানা ইসলাম বরাবরের মতোই পিতলের ভাস্কর্য নিয়ে হাজির হয়েছেন।
আয়োজক সংগঠন ‘সাঁকো’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কনকচাঁপা চাকমা জানালেন, ১২ বছর ধরে নারী শিল্পীদের জন্য একটি পাটাতন হিসেবে কাজ করছে এই সংগঠন। নিজেদের কাজ প্রদর্শন করার পাশাপাশি, সাঁকোর মাধ্যমে আরও বিভিন্ন সামাজিক দায়িত্ব পালনের সঙ্গেও যুক্ত আছেন সদস্য শিল্পীরা। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন সময়ে শিল্পী সমাজ ছাড়াও সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশেও এসে দাঁড়িয়েছে সাঁকো। ভবিষ্যতে সাঁকোর এই পরিধি আরও বাড়বে এমন আশাবাদও জানিয়েছেন প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা।
ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোডের ৭৫১ বাড়ির ১১ তলায় অবস্থিত গ্যালারিটি প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে সবার জন্য। আগ্রহী যে কেউই ঘুরে আসতে পারেন ধানমন্ডির এ ঠিকানায় নতুন জায়গা পাওয়া গ্যালারিটি।
শেষ হলো নিরাভরণ থিয়েটারের প্রথম পর্ব
নিরাভরণ থিয়েটার ঢাকার অদূরে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলায় নিয়মিত নাট্যচর্চারত একটি নাট্যদল। তাদের অষ্টম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে দুই পর্বের উৎসবের প্রথম পর্ব শুরু হয়েছিল ১১ অক্টোবর। চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত।
জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে গতকাল প্রথম পর্বের শেষ দিন মঞ্চস্থ হয় স্কাইলাসের প্রমিথিউস বাউন্ড-এর আশ্রয়ে আনন জামানের রচনা ও মোস্তাফিজুর নুর নির্দেশনায় মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের প্রমিথিউস। প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় মঞ্চায়ন হবে নাটক।