জার্মান ভাষায় বঙ্গবন্ধুর জীবনী

বাংলা একাডেমীর আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে গতকাল বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা নতুন বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ষ ছবি: প্রথম আলো
বাংলা একাডেমীর আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে গতকাল বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা নতুন বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ষ ছবি: প্রথম আলো

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম বিষয়ে জার্মান ভাষায় প্রথম প্রকাশিত হলো একটি বই। ইম গ্যাদিকেন এন বঙ্গবন্ধু শীর্ষক গ্রন্থটির প্রকাশনা অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল বুধবার। বিকেলে বাংলা একাডেমীর আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক কাজল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বইটির সম্পাদক মসয়ূদ মান্নান গ্রন্থটি সম্পাদনা ও প্রকাশের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন। গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে বার্লিনের বাংলাদেশ দূতাবাস।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক সালাহ্উদ্দীন আহ্মদ। সঞ্চালনা করেন রামেন্দু মজুমদার।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সালাহ্উদ্দীন আহ্মদ ক্রমান্বয়ে বিশ্বের সব উল্লেখযোগ্য ভাষায় বঙ্গবন্ধুর মহান জীবনদর্শন তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তিনি বলেন, এতে বিশ্ববাসী জানতে পারবে কী করে কৃত্রিম-সাম্প্রদায়িক পাকিস্তান রাষ্ট্রের নিগড় ভেঙে স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্রে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে বঙ্গবন্ধু জন্ম দিয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র।
স্বাগত বক্তব্যে শামসুজ্জামান খান বলেন, বঙ্গবন্ধু বিষয়ে জার্মান ভাষায় বইটির প্রকাশ একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এর মধ্য দিয়ে বহির্বিশ্ব বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্যের সন্ধান পাবে।
গ্রন্থটির সম্পাদক মসয়ূদ মান্নান জানান, ইউরোপে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শন পরিচিত করার উদ্দেশ্যে জার্মান ভাষায় এ বই প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে শেখ হাসিনা, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, আসমা জাহাঙ্গীর, কামাল হোসেন, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, বারবারা দাশগুপ্ত, এনায়েতুর রহিম, সৈয়দ বদরুল আহসান প্রমুখের লেখা স্থান পেয়েছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত জীবনপঞ্জি এবং সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের জার্মান অনুবাদও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর ত্যাজদীপ্ত, আপসহীন, সংগ্রামী জীবনের মধ্য দিয়ে বাঙালিকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম-অসাম্প্রদায়িক জাতি-রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। শেখ মুজিবুর রহমান প্রকৃতই বলেছেন, তিনি ক্ষমতা চাননি বরং চেয়েছেন বাংলার সাধারণ মানুষের অধিকার। তিনি বলেন, জার্মান ভাষায় বঙ্গবন্ধুবিষয়ক বই প্রকাশের মধ্য দিয়ে পাশ্চাত্য পৃথিবীতে এই মহান নেতা সম্পর্কে নতুন আগ্রহ তৈরি হবে বলে আশা করা যায়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে প্রখ্যাত জাপানি চলচ্চিত্র পরিচালক নাগিসা ওসিমা নির্মিত রহমান দ্য ফাদার অব বেঙ্গল শীর্ষক ২৮ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এই তথ্যচিত্র গতকালই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হয়েছে বলে জানান বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। আজ বিকেল চারটায় তথ্যচিত্রটি আবার প্রদর্শিত হবে।

জাদুঘরে শোক দিবসের অনুষ্ঠান
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর গতকাল বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের ওপর আলোচনা সভা, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও শিশু চিত্রকলা প্রদর্শনীর আয়োজন করে। কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক সালাহ্উদ্দীন আহ্মদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক সুলতানা শফি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশীদ ছিলেন প্রধান বক্তা। সভাপতিত্ব করেন জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি এম আজিজুর রহমান।
জাদুঘর লবিতে প্রদর্শিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবন নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্র এবং বিভিন্ন জাতীয় দিবসে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আয়োজিত শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশু চিত্রকলা প্রদর্শনী।