দেহঘড়ি আর চলবে না: মমতাজ

আবদুর রহমান বয়াতি
আবদুর রহমান বয়াতি

একসময় আমি পালাগান করতাম। পালাগান গাইতে গিয়ে ২০ বছর আগে আবদুর রহমান বয়াতির সঙ্গে পরিচয় হয়। তাঁর নাম আরও অনেক আগেই শুনেছি। আমরা মুগ্ধ হয়ে তাঁর গান শুনতাম। আমি তখন জুনিয়র শিল্পী। আমার ওস্তাদ রাজ্জাক দেওয়ানের সঙ্গে ওনার বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। বাউলশিল্পীদের একটি সংগঠন ছিল। সেই সংগঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি ছিলেন। এই সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রমেও তাঁর সঙ্গে দেখা হতো, কথা হতো। খুব সরল মনের একজন মানুষ ছিলেন তিনি। একটা ব্যাপার খেয়াল করেছি, আবদুর রহমান বয়াতি নিজের ব্যাপারে খুব উদাসীন ছিলেন।

আবদুর রহমান বয়াতির প্রায় সব গানই আমার খুব পছন্দের। বেশি ভালো লাগত ‘মন আমার দেহঘড়ি’ গানটি। তাঁর মৃত্যুর খবরটি শুনে খুব খারাপ লাগছে। সেই দেহঘড়ি আর চলবে না।

আবদুর রহমান বয়াতির সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয় বছর দুয়েক আগে। বিটিভিতে ‘ভবের হাট’ নামে একটি অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই অনুষ্ঠানে তিনিও এসেছিলেন। আর দেখা হয়নি। এরপর তো তিনি অসুস্থই হয়ে গেলেন। তিনি বেশ অর্থকষ্টে ছিলেন। তাঁর চিকিৎসার সাহায্যার্থে সরকারিভাবে কিছু সহযোগিতা করা হয়েছিল। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে এসেছিল।

আবদুর রহমান বয়াতির মতো শিল্পীকে নিয়ে কথা বলাটা অনেকটা দুঃসাহসই বলা যায়। শুধু বলব, তাঁর মতো শিল্পীর চলে যাওয়া বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গন এমনকি লোকগানের জগতের জন্য বড় একটা ক্ষতি, যা কখনোই পূরণ হবে না।

আরেকটি কথা, আবদুর রহমান বয়াতিদের মতো লোকগানের সঙ্গে জড়িত অসংখ্য শিল্পীর গান একেবারেই অরক্ষিত অবস্থায় আছে। এগুলো সংরক্ষণের জন্য এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। আর এ ব্যাপারে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় থেকে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া না হলে কিছুদিন পর এসব গান আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। ans