পুরান ঢাকায় নতুন ছবি

বিউটি বোর্ডিংয়ের ‘ম্যাট্রিম্যানিয়া’ প্রদর্শনীতে ভিনদে​িশ এক দর্শক
বিউটি বোর্ডিংয়ের ‘ম্যাট্রিম্যানিয়া’ প্রদর্শনীতে ভিনদে​িশ এক দর্শক
নর্থব্রুক হলের লাইব্রেরিতে নেপাল পিকচার লাইব্রেরির সংগ্রহ
নর্থব্রুক হলের লাইব্রেরিতে নেপাল পিকচার লাইব্রেরির সংগ্রহ

ছোট্ট ঘরের দেয়ালের রং গোলাপি। ঘরজুড়ে রুপালি আলো। সে আলোয় কিছু ছবি স্থির! ছবি না বলে একেকটা গল্প বলা ভালো। গল্পগুলোর দিকেই অবাক দৃষ্টি দর্শনার্থীদের। কেউ যেমন বিস্মিত হচ্ছেন, কেউ তেমনি ‘খিল খিল’ হাসিতে ঘরকে আলোকোজ্জ্বল করে তুলছেন। ছবিগুলোর আক্ষরিক নাম ‘ম্যাট্রিম্যানিয়া’—মানে বিয়েতে তোলা মজার সব ছবি। তুলেছেন ভারতীয় আলোকচিত্রী মহেশ শান্তারাম। বিউটি বোর্ডিংয়ের তিনরঙা তিন ঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে তাঁর তোলা ছবি। প্রতিটি ছবিই একেকটা বিয়ের গল্প বলছে। ঘরে ঢোকার আগেই ছবি সম্পর্কে আলোকচিত্রীর দেয়া এক পাতার বর্ণনা দেয়ালে সাঁটা। তার একটা বাক্য এমন—‘ভারতের যা কিছু ভালো, আর যা কিছু ভুল, সবকিছুই সারমর্ম আকারে উঠে আসে একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে।’
নানা বিষয় নিয়ে বিশ্বের ৩৩ জন আলোকচিত্রীর তোলা ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে এবারের ‘ছবি মেলা’য়। অষ্টমবারের মতো এর আয়োজন করেছে দৃক ও পাঠশালা। প্রদর্শিত হচ্ছে ঢাকার ১১টি ভেন্যুতে। এর মধ্যে পুরান ঢাকায় রয়েছে তিনটি। বিউটি বোর্ডিং, লালকুঠির নর্থব্রুক হল ও ওয়াইজঘাটের বুলবুল ললিতকলা একাডেমি।
বিউটি বোর্ডিংয়ের নিচতলায় ভারতের শান্তারামের ‘ম্যাট্রিম্যানিয়া’ আর দোতলায় চলছে তুরস্কের ইউসুফ সেভিঙ্কলির ‘ক্লেয়ারভয়েন্স’ প্রদর্শনী দুটি।

পুরান ঢাকার গলিতে ​িভড় লেগেছে ছবি মেলার দর্শকদের ছবিগুলো তুলেছেন হাবিবুল হক/দৃক
পুরান ঢাকার গলিতে ​িভড় লেগেছে ছবি মেলার দর্শকদের ছবিগুলো তুলেছেন হাবিবুল হক/দৃক


নর্থব্রুক হলের প্রদর্শনী দুটি অন্য রকম। শূন্য হলরুম। ওপর থেকে আটটি বৃত্তাকার ছবি ঝুলছে। মঞ্চেও রাখা আছে বিশাল আকৃতির চৌকোণ একটি ছবি। দূর থেকে মনে হবে, যেন বৃত্তের ভেতরে থাকা ছবিগুলো তাকিয়ে আছে মঞ্চের বড় ছবিটার দিকে। এই ছবিগুলো যার ক্যামেরা ঘুরে নর্থব্রুক হলে এসেছে, তিনি গুয়াতেমালার আলোকচিত্রী লুই গঞ্জালেস পালমা। এই হলের পাশেই লাইব্রেরি। সেখানে আরেকটি প্রদর্শনী। বিশালাকৃতির টেবিলজুড়ে নেপাল পিকচার লাইব্রেরির কিছু ছবি। টেবিলের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পাড়ি দিতে দিতে চোখে পড়বে সাদা-কালো সব ছবি। প্রতিটি ছবিই বহন করে নেপালিদের রঙিন জীবনকে।
পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাটের বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে বসেছে একজন আলোকচিত্রীর ছবির পসরা। তাঁর প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘ইজিপ্ট, মাই লাভ’। ডেনি ডাইমুরের প্রতিটি ছবিতেই ফুটে উঠেছে মিসরের জীবনযাপন, টের পাওয়া যায় মিসরের প্রতি আলোকচিত্রীর ভালোবাসা।
‘ছবি মেলা’ সম্পর্কে কিউরেটর এ এস এম রেজাউর রহমান বললেন, ‘এবারের ছবি মেলায় ছবি কীভাবে প্রদর্শিত হবে, সেই বিষয়টিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ছবির সঙ্গে স্থান এবং পরিবেশের আবহ মিলিয়ে তবেই প্রদর্শিত হচ্ছে।’