ছুরি-কাঁচি পিছু ছাড়ছে না জোলির

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে দুই বছর আগে অস্ত্রোপচার করেছিলেন অস্কারজয়ী হলিউডের অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। এবারে ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ডিম্বাশয় এবং ফেলোপিয়ান টিউবসও ফেলে দিতে হয়েছে তাঁর। নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় ‘অ্যাঞ্জেলিনা জোলি পিট: ডায়েরি অব এ সার্জারি’ শীর্ষক লেখায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ৩৯ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেত্রী। ডিম্বাশয় এবং ফেলোপিয়ান টিউবস অপসারণ করায় ভবিষ্যতে আর মা হতে পারবেন না জোলি।

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি লিখেছেন, ‘দুই বছর আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে স্তন অপসারণের কথা লিখেছিলাম আমি। ক্যানসারে মারা গেছেন আমার মা, নানি ও খালা। রক্ত পরীক্ষায় আমার শরীরে ক্যানসারের জিন ধরা পড়ে। ত্রুটিপূর্ণ এই জিনের কারণে আমার ৮৭ শতাংশ স্তন ক্যানসার এবং ৫০ শতাংশ ডিম্বাশয় ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ছিল।’

‘অনেক দিন আগে থেকেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ডিম্বাশয় ও ফেলোপিয়ান টিউবস অপসারণের পরিকল্পনা করছিলাম। এই অস্ত্রোপচার স্তন অপসারণের অস্ত্রোপচারের চেয়ে কম জটিল হলেও, এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি। অস্ত্রোপচারের তারিখ ঠিক করার আগে চিকিৎসকদের পরামর্শে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম আমি।’

‘দুই সপ্তাহ আগে আমার চিকিৎসকের কাছ থেকে ফোন-কল পেলাম। আমার রক্ত পরীক্ষায় প্রাথমিক ক্যানসারের লক্ষণ ধরা পড়ার সম্ভাবনার কথা জানালেন তিনি। যত দ্রুত সম্ভব ডিম্বাশয় পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিলেন তিনি। সেদিনই আমি সার্জনের কাছে গেলাম। তিনি আমার মায়ের চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন। মায়ের মৃত্যুর দিন তাঁকে আমি শেষ দেখেছিলাম। আমাকে দেখে তিনি বললেন, আমাকে দেখতে ঠিক আমার মায়ের মতো লাগছে। আমি কান্নায় ভেঙে পড়লাম। স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফলাফলে তেমন খারাপ কিছু ধরা না পড়ায় আমি প্রচণ্ড খুশি হলাম।’

‘গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় আমার একটি ডিম্বাশয়ে ছোট্ট একটি টিউমার ধরা পড়ে। তবে ক্যানসারের কোনো রকম লক্ষণ দেখা যায়নি। আমার পরিবারের তিনজন সদস্য ক্যানসারে মারা গেছেন। আমার মায়ের ডিম্বাশয়ের ক্যানসার ধরা পড়েছিল তাঁর ৪৯ বছর বয়সে। আমার বয়স এখন ৩৯। চিকিৎসকেরা সবকিছু পর্যালোচনা করে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ডিম্বাশয় এবং ফেলোপিয়ান টিউবস অপসারণের সিদ্ধান্ত নিলেন এবং আমিও রাজি হয়ে গেলাম।’

‘আমি আর সন্তান ধারণ করতে পারব না। মেনোপোজসহ শারীরিক আরও কিছু পরিবর্তনও আসবে। এত কিছুর পরও আমি ভয় পাচ্ছি না বা ভেঙে পড়ছি না। কারণ এটাই জীবনের অংশ। জীবনে সমস্যা আসে এবং তা সমাধানেরও অনেক পথ খোলা থাকে। একাধিক পথ থেকে সঠিক পথকে বেছে নিতে হয়। জ্ঞানই শক্তি।