সুরের মূর্ছনায় মুখরিত ভাওয়াইয়া উৎসব

রংপুর নগরে ভাওয়াইয়া উৎ​সবে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করছেন স্থানীয় শিল্পীরা l ছবি: মঈনুল ইসলাম
রংপুর নগরে ভাওয়াইয়া উৎ​সবে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করছেন স্থানীয় শিল্পীরা l ছবি: মঈনুল ইসলাম

শিল্পীর কণ্ঠে একের পর এক ভাওয়াইয়া গান। দর্শক-শ্রোতার উপচে পড়া ভিড়। সুরের মূর্ছনায় মুখরিত হয়ে উঠেছিল রংপুরের কেন্দ্রীয় মিনার চত্বর।
মাটি ও মানুষের প্রাণের গান শুনতে মাঠের বাইরে ফুটপাতেও ছিল উপচে পড়া দর্শক। নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ ছুটে আসেন এ অঞ্চলের প্রিয় ভাওয়াইয়া গান শুনতে। রাত যত বাড়ে, দর্শকের ভিড়ও তত বাড়তে থাকে।
‘আজ ধীরে বোলাও গাড়ি রে গাড়িয়াল আস্তে বোলাও গাড়ি’, ‘আসা যাওয়ার ঘাটাকোনাত বসাইছে পিরিতির ফান্দ’, ‘ও মোর কালা রে কালা’, ‘ও মুই না শোনং না শোনং তোর বৈদেশিয়ার কথা রে ও মোক ছাড়িয়া গেলু কেনে’—এমনই অনেক ভাওয়াইয়া গানের সুরের মূর্ছনায় দর্শক–শ্রোতা মুগ্ধ হন।
গানের তালে নৃত্যও হয়েছে। বিকেল থেকে একটানা রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দর্শক-শ্রোতা প্রাণভরে উপভোগ করেছেন ভাওয়াইয়া সংগীত।
রংপুরের সাংস্কৃতিক সংগঠন সাউন্ড টাচের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসবে গত শনিবার ছিল ভাওয়াইয়া গান নিয়ে উৎসব।
উৎসবে রংপুর বিভাগের আট জেলা দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও রংপুরের ভাওয়াইয়াশিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেছেন।
ভাওয়াইয়া গান শুনতে আসা বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর সদস্য বিপ্লব প্রসাদ বললেন, মাটি ও মানুষের এই গান শুনে মনটা যেন ভরে গেল।
অধ্যাপক শাশ্বত ভট্টাচার্য বলেন, ‘গান শুনতে আমি একা আসিনি। সন্তানকেও নিয়ে এসেছি। অনেক দিন পর এমন আয়োজনে প্রাণটা ছুঁয়ে গেল।’ বিশিষ্ট সাহিত্যিক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, উপচে পড়া দর্শক দেখে বলতে হয়, এ গান মানুষের কত না প্রিয়।
গান করতে আসা শিল্পী জান্নাতুল মাওয়া বলেন, ‘লোকসংগীত টিকিয়ে রাখতে আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে।’
আয়োজক সংগঠন সাউন্ড টাচের সাধারণ সম্পাদক মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, এ অঞ্চলের ভাওয়াইয়াশিল্পীদের একসঙ্গে করে প্রতিবছরই এই আয়োজন করা হয়। ভবিষ্যতে আরও বড় আয়োজন করার চিন্তাভাবনা রয়েছে।