ছেলেটি আমাকে খুবই ভালোবাসত

নুসরাত ফারিয়া, ছবি: আনন্দ
নুসরাত ফারিয়া, ছবি: আনন্দ

ঘটনা—২০০৭ সালের। আমরা ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে থাকি। আমি তখন শহীদ আনোয়ারা গার্লস স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। সেই সময় একটি ছেলের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। ছেলেটির নাম এখানে বলতে চাইছি না। আমাদের বাসার অল্প একটু দূরে তার বাসা। আমার বারান্দা থেকে তার ঘরের বারান্দা দেখা যেত। চোখাচোখি ওখান থেকেই শুরু। এরপর বারান্দা থেকে বারান্দা। কয়েক দিন পর বাসার ছাদ থেকে ছাদে দুজন একে অপরের ভালো লাগাগুলো প্রকাশ করতে থাকি। তা শুধু ইশারায় চলত। একসময় লুকিয়ে লুকিয়ে সপ্তাহে এক দিন বুধবার রাতে আমাদের বাসার টিঅ্যান্ডটি টেলিফোন থেকে তার সঙ্গে কথা বলতাম। তত দিনে তার সঙ্গে মুখোমুখি দেখা হয়নি। ভালোবাসার প্রকাশটা ওই দূর থেকেই হতো।
পরের বছর আমি সপ্তম শ্রেণিতে উঠি। আর ছেলেটি সে বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ওই বছরই আমার বাসা থেকে একটি মুঠোফোন কিনে দেওয়া হলো। তখন থেকে প্রতিদিন ফোনে কথা হতো। ছেলেটি আমাকে খুবই ভালোবাসত। একদিন দুজনের মুখোমুখি দেখা করার সিদ্ধান্ত হলো। সেদিন তার সামনে গিয়ে আমি খুবই লাজুক হয়ে গিয়েছিলাম। ওই এক দিনই আমাদের দুজনের মুখোমুখি দেখা হয়েছিল। মনে আছে ওই দিন আমি সাদা সালোয়ার-কামিজ পরেছিলাম আর ছেলেটি ব্লু জিনস আর সাদা শার্ট পরেছিল।
এভাবে চলতে চলতে এক বছরের মাথায় আমাদের ভালোবাসার সম্পর্কটা মা জেনে গেলেন। আর তখনই বারান্দা কিংবা ছাদে যাওয়ার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হলো। আমার ফোনটিও চেক করা শুরু হলো। এ অবস্থার মধ্যে ফোনে কথা বলা, বারান্দা কিংবা ছাদে গিয়ে দেখাদেখি কমে আসে। সম্পর্কের ছেদ পড়তে শুরু হয়। এভাবেই একদিন ছেলেটি হারিয়ে যায়। আজও মাঝেমধ্যে ছেলেটির কথা মনে পড়ে। হয়তো সে এখনো ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকাতেই আছে। কিন্তু আর দেখা হয় না।
শফিক আল মামুন