পাঁচ প্রশ্ন

রেজা আরিফ
রেজা আরিফ

সম্প্রতি মঞ্চে এসেছে আরশিনগর নাটকের দলের প্রযোজনা সে রাতে পূর্ণিমা ছিল। শহীদুল জহিরের উপন্যাস থেকে এটি সরাসরি মঞ্চে নির্দেশনা দিয়েছেন রেজা আরিফ। আজকের পাঁচ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শফিক আল মামুন

উপন্যাসকে নাট্যরূপ না দিয়ে সরাসরি মঞ্চে নাট্যোপযোগী করে উপস্থাপনা কতটুক সম্ভব?
থিয়েটারের একটা নিজস্ব ভাষা আছে। থিয়েটার সেই ভাষা দর্শককে শোনায়। মজার ব্যাপার হলো, উপন্যাসের গল্প এবং গল্প বলার ভঙ্গি থিয়েটারের সঙ্গে ভীষণভাবে মিলে যায়। এ কারণেই উপন্যাসকে আমরা নাট্যরূপ দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করিনি—উপন্যাসের গল্পকে সরাসরি মঞ্চে এনেছি। আর নাট্যরূপ দেওয়ার মতো বর্বর কাজটি আমরা করতেও চাইনি।

নাট্যরূপ দেওয়াকে‘বর্বর কাজ’ বলছেন কেন?
সে রাতে পূর্ণিমা ছিল উপন্যাসে গল্প বলার ভঙ্গিটি খুব স্বতঃস্ফূর্ত, সরাসরি ও সৌন্দর্যময়। সব মিলিয়ে বলা যায়, গড়নটি নিজস্ব। আমরা সেটাকেই এই নাটকে বাংলা বর্ণনাত্মক রীতিতে উপস্থাপন করেছি। উপন্যাস নিজেই একটি শিল্পমাধ্যম। বাংলা বর্ণনাত্মক রীতিতে উপন্যাসের গল্পকে যদি নাট্যরূপ দেওয়া হয়, তাহলে গল্পের সৌন্দর্য কমে যায় বলে আমি মনে করি। একধরনের অঙ্গহানিও ঘটে—এটাকেই আমি ‘বর্বর কাজ’ বলেছি।

উপন্যাসের সরাসরি নাট্য মঞ্চায়ন—ঢাকার মঞ্চে এ ধরনের কাজ হয়েছে কি?

সম্ভবত এর আগে ঢাকার মঞ্চে কেউ-ই এ ধরনের কাজ করেনি। তবে আমার নাট্যগুরু সেলিম আল দীন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এ ধরনের কাজ করেছেন, উপন্যাসকে অবিকৃতভাবে মঞ্চে এনেছেন—সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর উপন্যাস কাঁদো নদী কাঁদো। তিনি এটাকে বলতেন ‘উপন্যাসের মঞ্চভ্রমণ।’

‘সে রাতে পূর্ণিমা ছিল’ উপন্যাসকে মঞ্চে রূপ দেওয়ার আগে আপনি কি ভেবেছিলেন, এটিকে চূড়ান্তভাবে মঞ্চে উপস্থাপন আদৌ সম্ভব?

প্রথম প্রথম ভীষণ ভয় ছিল। বিশেষত শহীদুল জহিরের মতো এত বড় মাপের লেখকের উপন্যাসকে মঞ্চে আনা খুবই কঠিন। আমার কাছে বিষয়টি চ্যালেঞ্জও ছিল। দলের সবার সহযোগিতা নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি কাজটি করতে পেরেছি।

যাঁরা এ প্রযোজনায় অভিনয় করেছেন, তাঁদের অভিনয়ে নির্দেশক হিসেবে আপনি কতটা সন্তুষ্ট?

যাঁরা নাটকটিতে অভিনয় করেছেন, তাঁদের সবাই নাট্যকলা বিভাগের স্নাতক বা স্নাতকোত্তর বিভাগের ছাত্রছাত্রী। নাটক শিক্ষা ও অভিনয় সম্পর্কে অভিজ্ঞতা আগে থেকেই সবার কমবেশি ছিল। ফলে, এ রকম চ্যালেঞ্জিং কাজ সহজেই তাঁরা করতে পেরেছেন। আমার ভাবনার জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছেন তাঁরা।