এফডিসিতে দিতির জন্য শোক

দিতি
দিতি

অভিনেত্রী দিতির মৃত্যর খবর আসার পরপরই থমকে গিয়েছিল পুরো এফডিসি। সবার মুখে আলোচনার বিষয় ছিল তার এই মৃত্যু। মারা যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সংবাদটি চলে আসে এফিডিসিতে। দিতির দীর্ঘদিনের কর্মস্থল, হেঁটে বেড়ানো রাস্তা, চেনা ফ্লোরগুলোও যেন থমকে গেছে। এমনিতেই আজ সারাদিন কোনো ফ্লোরে শুটিং ছিল না। কিন্তু চিরাচরিত ভিড় ছিল ক্যান্টিন, কড়ইতলাসহ সবখানেই। বিকেল নাগাদ সেই ভিড় রূপ নিয়েছিল একেকটি শোকসভায়। সবখানেই আলোচনায় ছিল দিতির বর্নাঢ্য চলচ্চিত্র জীবন, তাঁর অকাল মৃত্যু এবং সব ছাপিয়ে তাঁর দুরারোগ্য অসুখ ও দীর্ঘদিনের অসুস্থতার যন্ত্রণা। কে জানে, এ কারনেই বিকেলটা মেঘলা ছিল কিনা।

মেঘলা বিকেলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির বারান্দায় বসে কথা হলো সমিতির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমানের সঙ্গে। বললেন, ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমের মাধ্যমে দিতি চলচ্চিত্রে পা রাখেন। চলচ্চিত্রের একটা স্বর্ণযুগের সূচনা হয়েছিল তাঁকে দিয়ে। আমার যতদূর মনে পড়ে, আজমল হুদা মিন্টুর “ডাক দিয়ে যাই” চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি অভিনয় শুরু করেন। তারপর তো অসংখ্য ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়েছেন দিতি।’
সাইদুর রহমানের পাশেই ছিলেন পরিচালক শিবলী জামান। তার “হাসি” ও “রাজা বাদশা” চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন দিতি। অভিনয়ের পাশাপাশি “হাসি” ছবিতে একটি গানও গেয়েছিলেন গুণী এ অভিনেত্রী। সেই স্মৃতি স্মরণ করে শিবলী বললেন, ‘প্রচন্ড মিশুক ছিলেন তিনি। সব জায়গায় সব পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারতেন। একজন ভাল অভিনেত্রীকে হারালাম আমরা।’
সমিতির অফিসের ভেতরে ছিলেন পরিচালক আমজাদ হোসেন। ১৯৮৫ সালের দিকে দিতি অভিনয় করেছিলেন তার পরিচালনায় ‘হীরামতি’ চলচ্চিত্রে। এই ছবিটির মাধ্যমেই প্রয়াত অভিনেতা সোহেল চৌধুরীর অভিষেক। আমজাদ হোসেনের দাবী, এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়েই দিতি ও সোহেল চৌধুরীর পরিচয়, প্রণয় এবং যেটা পরবর্তীতে রূপ নেয় বিয়েতে। বললেন, ‘দিতিকে নিয়ে কাজ করার বড় সুবিধা হলো, তাঁর কাছ থকে সহযোগিতা পাওয়া যেত। চলচ্চিত্র ছাড়াও আমার বেশ কয়েকটি টিভি নাটকে কাজ করেছেন দিতি। তার রুহের মাগফেরাত কামনার পাশাপাশি প্রার্থনা করি, আর যেন কারও এমন অসুখ না হয়।’
শিল্পী সমিতির অফিসে গিয়ে দেখা মিললো না কোনো শিল্পীর। অফিস কর্মকর্তা জানালেন, শিল্পী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দেশের বাইরে। সহ সভাপতি ওমর সানি দিতির মৃত্যু সংবাদ শুনে হাসপাতালে গেছেন। শিল্পী সমিতির সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেবেন পরে কোথায় শোকসভা আয়োজন করা হবে।
সেখান থেকে বেরুতেই দেখা হলো পরিচালক শফিক হাসানের সঙ্গে। বললেন, ‘দিতি ম্যাডাম সর্বশেষ আমার পরিচালনায় ‘‘ধুমকেতু’’ ছবিতে অভিনয় করেছেন। ছবিতে তাঁরর অংশের শুটিং শেষ করেছি আগেই। এখন মুক্তির অপেক্ষায় আছে ছবিটি। আমার মনে হয় এটাই দিতির শেষ ছবি।’
দিতি অভিনীত সর্বশেষ ছবি মুক্তি পায় গেল মাসে। ‘সুইটহার্ট’ নামে ছবিটি পরিচালনা করেছেন ওয়াজেদ আলী।