তামাশা
তারকার পিছু ছাড়ে না পাপারাজ্জির ক্যামেরা। তার সঙ্গে নতুন যোগ হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা, সমালোচনা, তর্কবিতর্ক। ট্রোল হওয়াটা যেন তাঁর নিয়তি! ‘মানুষ’ পরিচয়ের চেয়ে ‘তারকা’ পরিচয়টিকে বিক্রি করার ধুম পড়ে যায়। এমনকি মৃত্যুর পরও তাঁদের নিয়ে আলোচনা যেন থামেই না। অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লার মৃত্যুর পর আরও একবার সেসবেরই পুনরাবৃত্তি হলো। বলা হলো, তিনি খুন হয়েছেন, তাঁর প্রেমিকা শেহনাজ গিলের ভূমিকা নিয়ে কাদা ছোড়া হলো। শুধু তা-ই নয়, সুশান্তের সঙ্গে তুলনা করে মিম পর্যন্ত বানানো হলো, সিদ্ধার্থের পরিবারের কান্নাকাটির দৃশ্য থেকে ভিডিও বানিয়ে নেটে ছেড়ে দেওয়া হলো। এ সবকিছু নিয়েই চরম বিরক্ত ভারতীয় স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান জাকির খান। অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লার মৃত্যুর পর অনলাইনে তাঁকে বিক্রি করা নিয়ে প্রতিবাদী এক কবিতা লিখেছেন তিনি। নিজের ইনস্টাগ্রামে সেই কবিতা শেয়ার করেছেন বলিউড তারকা আনুশকা শর্মা। এ পর্যন্ত কবিতাটা পড়া হয়েছে পাঁচ লাখের বেশিবার।
তামাশা
জাকির খান
ওরা তোমায় মানুষ মনে করে না।
এ জন্য না আছে কোনো লাইন না কোনো সীমানা।
তাদের কাছে তোমার লাশ
রুহ ছেড়ে যাওয়া কোনো শরীর নয়।
খালি ছবি তোলার আরেক মওকা।
যত খুশি তোলা যায়।
এ যেন দাঙ্গায় পুড়তে থাকা ঘর থেকে
বাসন চুরির চেষ্টা।
এরপর তুমি আর কোন কাজে আসবে?
বড়জোর
১০টা ছবি
৫টা খবর
৩টি ভিডিও
২টি গল্প
একটি পোস্ট...ব্যস, এই তো!
এ কারণে তোমার মৃত্যু
তামাশা হয়েই থাকবে।
কান্নায় জর্জর মা তামাশা
শোকে কাতর বাবা তামাশা
পাগলপারা বোন,
সাহস হারানো ভাই,
তোমাকে যারা ভালোবাসে, সবাই
তাদের কাছে নিছকই তামাশা।
তুমি বেঁচে থাকলেও
কথা ছিল।
তোমার মৃত্যুর পরে
তোমার শোকাতুর স্বজনেরা
এখন তাদের খিদে মেটাবে।
শুধুই বলছি...
এই জীবনই বেছে নিয়েছি
আমি আর তুমি!
বেঁচে থাকতে এ কথা
জানা থাকলে
তোমার হয়তো
কষ্ট কম হবে
শেষবারের মতো চোখ বন্ধ
হওয়ার আগে।
তাই আনন্দে থাকো
তোমার বন্ধুদের সাথে
ভালোবাসো আপনজনদের
শেখো অনেক কিছু
গড়ো নতুন সম্পর্ক।
খালি ওদের জন্য বেঁচো না
যতটুকু সময় আছে
নিজের জন্য বাঁচো
কারণ তাদের কাছে
তুমি মানুষই নও।
অনুবাদ: শরীফ নাসরুল্লাহ