যেন মায়ের পাশে গিয়ে বসেছেন শাহরুখ খান

বলিউড তারকা শাহরুখ খানকে ‘বেটা’ সম্বোধন করতেন দিলীপ কুমার ও সায়রা বানু। শাহরুখও বাবার মতো শ্রদ্ধা ও সম্মান করতেন দিলীপ কুমারকে। সকালে পিতৃতুল্য দিলীপ কুমারের মৃত্যুর খবর শুনে সরাসরি চলে গেছেন সায়রা-দিলীপের মুম্বাইয়ের বাড়িতে। সায়রার পাশে গিয়ে বসেছেন, যেন পিতার মরদেহর সামনে শোকাহত মায়ের শোকের ভাগ নিতে হাজির হয়েছে পিতাহারা সন্তান!

দিলীপ কুমারের মরদেহের সামনে বসা সায়রা বানুর পাশে শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত

হেমা মালিনী পরিচালিত ছবি ‘দিল আশনা হ্যায়’ মহরতে গিয়ে শাহরুখকে পছন্দ হয়ে যায় দিলীপ কুমারের। শাহরুখের অভিনয়ও পছন্দ করতেন দিলীপ-সায়রা দুজনই। সায়রা বানু তখন বলেছিলেন, তাঁদের সন্তান থাকলে, সে শাহরুখের মতোই হতো।

বছর কয়েক আগে দিলীপ কুমার যখন অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান শাহরুখ। খুব খুশি হয়েছিলেন দিলীপ-সায়রা। টুইটে সায়রা বানু লিখেছিলেন, ‘মুহ বোলা বেটা শাহরুখ দেখা করতে এসেছিল। আর শাহরুখ! অল্প বয়সে মা–বাবাকে হারিয়েছিলেন। অভিনয়জীবনের শুরু থেকেই তিনি যেন ছিলেন দিলীপ কুমারের ভাবশিষ্য। সেই প্রিয় অভিনেতার মৃত্যুতে শোকাহত শাহরুখ গিয়ে হাজির হন সায়রা বানুর পাশে।

অসুস্থ অবস্থায় দিলীপ কুমার ও সায়রা বানুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন শাহরুখ খান

দিলীপ কুমার প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ খান বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, দিলীপ কুমার শুধু আমার নয়, সব অভিনেতার আদর্শ। তাঁর মতো মেথড-অভিনেতা হিন্দি ছবির দুনিয়ায় পাওয়া কঠিন। তাঁর ক্ষেত্রে “আইকন” শব্দটি অনেক ছোট। শুধু আমাকে নয়, তাঁর অভিনয় আমার বাবাকেও প্রভাবিত করেছিল। আমার বাবা ওয়ালিদ সাহেব “মুঘল-ই-আজম” ছবির অডিশন দেওয়ার জন্য দিল্লি থেকে মুম্বাই এসেছিলেন। তিনি অডিশনে বাদ পড়েছিলেন। দিলীপ সাহেবকে দেখে তাঁর মনে হয়েছিল যে তিনিও অভিনেতা হতে পারেন।

শাহরুখ খান ও দিলীপ কুমার। ছবি: সংগৃহীত

আমার বাবা আর দিলীপ সাহেবের ঘর দিল্লির একই জায়গায় ছিল। বাবার সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল। আমার আম্মিও দিলীপ সাহেবের অনেক বড় ভক্ত ছিলেন। আম্মি অনেক সময় বলতেন, আমার লুক অনেকটা দিলীপ সাহেবের মতো। কিন্তু আমার আগে তা মনে হতো না। আমি ভাবতাম, আম্মিরা এ রকমই বলেন। কিন্তু সিনেমায় কাজ করার জন্য মুম্বাইতে আসার পর আম্মির কথা সত্যি মনে হয়। কেতন মেহতার অফিসে দিলীপ কুমারের কিছু পুরোনো ছবি দেখি। তখন মনে হয়েছিল যেন নিজের ছবিই দেখছি। দিলীপ সাহেব আর সায়রাজি প্রায়ই বলতেন, তাঁদের যদি ছেলে হতো, সে আমার মতোই হতো। আমার জন্য এটা অনেক বড় প্রাপ্তি আর গর্বের। সত্যি বলতে, দিলীপ সাহেব আর সায়রাজি আমাকে নিজের সন্তানের মতো আপন করে নিয়েছেন আর তাঁরা আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করেন। দিলীপ সাহেব যত বড় অভিনেতা, তিনি ততটাই বড় মাপের মানুষও। একবার এক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তাঁকে সম্মানিত করার সুযোগ পেয়েছিলাম আমি। এই মুহূর্তটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত। ওই সময় তিনিও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। দিলীপ সাহেব ভারতীয় চলচ্চিত্র দুনিয়ার এক স্তম্ভ।’