সুন্দরের সংজ্ঞা
কোঁকড়া চুল থেকে ধারালো মুখমণ্ডল—স্কুলে পড়ার সময় নিজের চেহারার কোনো কিছুই তাপসী পান্নুর পছন্দ ছিল না। তখন তাঁর কাছে সৌন্দর্যের সংজ্ঞাই ছিল অন্য রকম। আর তাঁর এই সৌন্দর্যবোধ তৈরি করে দিয়েছিলেন সেই সময়কার টিভি তারকারা। সেই ধারণায় কোঁকড়া চুল, ভিন্ন রকমের চেহারার কোনো ঠাঁই ছিল না। আর এই বিচারেই তাপসীর মনে হতো, টিভি পর্দার সুন্দর নারীদের চেয়ে তিনি একেবারে আলাদা। নিজেকে ভালো না বেসে তাই তাঁদেরই ভালোবাসতেন তিনি।
অন্যদের চেয়ে দেখতে আলাদা বলে নিরাপত্তাহীনতায়ও ভুগতেন তাপসী পান্নু। কোঁকড়া চুল সোজা করতে এমনকি ওষুধও ব্যবহার করেছিলেন তিনি। একটি সাময়িকীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে তাপসী বলেন, ‘প্রচলিত নায়িকাদের সঙ্গে আমার একদমই মিল ছিল না। আমার হরিণীর মতো চোখ ছিল না, ছিল না ছোট্ট টিকলো নাক। আমার নাকটা ছিল বেশ বড়, যাকে বলে রাজনাক। অভিনেত্রীদের মতো আমার মোহনীয় ঠোঁট, হাওয়ায় উড়িয়ে দেওয়ার মতো রেশমি চুল ছিল না। আমার চুল ছিল কোঁকড়া। খেয়াল করলাম, টিভিতে দেখা কোনো অভিনেত্রীর চুল আমার মতো নয়। স্কুলে পড়াকালীন দুবার সেলুনে গিয়ে রাসায়নিক দিয়ে চুল সোজা করার চেষ্টা করেছিলাম, আমাদের সময়ে যেসব পাওয়া যেত আরকি। তাতে আমার চুল গেল নষ্ট হয়ে। চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে গেল, দেখে ভীষণ হতাশ হয়ে পড়লাম। যখন চুল পড়তে শুরু করল, তখন ভয় পেয়ে গেলাম।’
সৌন্দর্যের সেই বাজারচলতি ধারণাটার বদল হলো কী করে? তাপসী বলেন, ‘সৌন্দর্যের প্রচলিত মাপকাঠিতে আমাকে মাপা যেত না। বছরের পর বছর আমি নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করেছি, আর দুঃখজনকভাবে ব্যর্থ হয়েছি, যতক্ষণ না উপলব্ধি করেছি, আমার যা আছে, সেসবই আমাকে ভালোবাসতে হবে। আজ আমি বুঝি, যদি প্রকৃত অর্থে নিজেকে ভালোবাসা যায়, তাহলে বোঝা যাবে যে এগুলো কত সুন্দর।’
হালের বলিউডের সবচেয়ে সফল নারী তারকাদের একজন তাপসী পান্নু। চলতি বছর ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে তাঁর তিনটি ছবি। সেগুলো হচ্ছে হাসিন দিলরুবা, অ্যানাবেল সেতুপতি ও রেশমি রকেট। মুক্তির অপেক্ষায় আছে আধা ডজন ছবি। আর এই মুহূর্তে করছেন ও লাড়কি হ্যায় কাঁহার শুটিং।