অঞ্জন চৌধুরী পিন্টুর হাতে আবারও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০-এর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছে ‘বিশ্বসুন্দরী’। আর এ ছবির প্রযোজক হিসেবে আজ বুধবার অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এর আগে ২০০৯ সালে ‘মনপুরা’ চলচ্চিত্রের জন্যও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছিলেন অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু। ‘মনপুরা’ ৬টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিল।

এবার বিশ্বসুন্দরী পেয়েছে ৮টি পুরস্কার, যার মধ্যে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের সম্মাননা ছাড়াও পুরস্কৃত হয়েছেন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা সিয়াম আহমেদ, পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু, গীতিকার কবির বকুল, সুরকার ও গায়ক ইমরান মাহমুদুল, গায়িকা দিলশাদ নাহার কনা ও প্রয়াত নৃত্য পরিচালক সুমন রহমান।

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের একজন অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে দুই দশকের বেশি সময় ধরে শিল্প-সংস্কৃতি-শিক্ষা-ক্রীড়া সর্বক্ষেত্রেই বিশেষ ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছেন। সামাজিক দায়বদ্ধতা হিসেবে সুস্থ ধারার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। ২০০১ সালে নির্মাণ করেন তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত ছবি ‘লালসালু’। ৮টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিল ছবিটি। পরবর্তীতে তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত ‘লালন’ প্রযোজনা করেন তিনি, যা ১টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়।

‘বিশ্বসুন্দরী’একটি দৃশ্যে সিয়াম ও পরীমনি
ছবি: সান মিউজিক এন্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেডের সৌজন্যে

একই বছর আবু সাইয়ীদ পরিচালিত ‘শঙ্খনাদ’-এর সঙ্গে যুক্ত হন প্রযোজক অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু। ছবিটি ২টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। ২০০৫ সালে প্রয়াত তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ পরিচালিত ‘অন্তর্যাত্রা’ ছবিটিরও বাংলাদেশ অংশের স্বত্ব কিনে নেন অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, যা দেশ-বিদেশে প্রশংসা কুড়ায়।

‘বিশ্বসুন্দরী’র একটি দৃশ্যে পরীমনি ও সিয়াম। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়াত চিত্রনায়িকা সারাহ বেগম কবরীর প্রথম চলচ্চিত্র ‘আয়না’ (২০০৬) বেসরকারি বেশ কিছু পুরস্কারসহ সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত হয়। এ ছবিটিও প্রযোজনা করেন অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু। সুস্থ ধারার চলচ্চিত্রের প্রতি পৃষ্ঠপোষকতার অঙ্গীকার থেকে চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত বিশ্বসুন্দরী চলচ্চিত্রটিও প্রযোজনা করেন তিনি। কারণ, রুম্মান রশীদ খানের লেখা বিশ্বসুন্দরীর গল্প একজন বীরাঙ্গনা মাকে নিয়ে। যাঁরা দেশের জন্য নিজের সম্ভ্রম বিলিয়ে দিয়েছেন, আমাদের সেই ‘বীর মাতারাই’ প্রকৃত সুন্দরী। বিশ্বের সেরা সুন্দরী। তাঁরাই ‘বিশ্বসুন্দরী’। এই ভাবনা থেকে নির্মিত ছবির গল্পকে পৃষ্ঠপোষকতা করার প্রয়োজন মনে করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু।

বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রথম ঢেউ কিছুটা কমে যাওয়ার পর সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি যখন স্থবির হয়ে পড়েছিল; প্রেক্ষাগৃহ মালিক, পরিবেশকদের কথা মাথায় রেখে ২০২০ সালের ১১ ডিসেম্বর চলচ্চিত্রটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির ঝুঁকি নেওয়ার সাহস করেন প্রযোজক অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু। এ বিষয়টিকে সাধুবাদ জানান চলচ্চিত্র বিশ্লেষকেরা। বিশ্বসুন্দরী টানা ১১৭ দিন প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকার দুটি মাল্টিপ্লেক্স থিয়েটারে (স্টার সিনেপ্লেক্স, বসুন্ধরা সিটি ও ব্লকবাস্টার সিনেমাস, যমুনা ফিউচার পার্ক) ছবিটি একাধারে ১৬ সপ্তাহ প্রদর্শিত হয়েছে।