প্রতীক্ষার শেষ নেই যেখানে

বাংলায় রূপান্তরের পর ফেইমের এই নাটকের নাম দাঁড়ায় ‘অন্তহীন প্রতীক্ষা’

গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকের রচিত স্যামুয়েল বেকেটের ‘ওয়েটিং ফর গডো’ বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত নাটকগুলোর একটি। এটি মঞ্চে আসার পর বদলে গিয়েছিল সমকালীন নাটকের ধারা। অ্যাবসার্ড বা অদ্ভুত রসের নাটকের নবধারার সূচনা করেছিল এই নাটক। জটিল আঙ্গিক আর গভীর দার্শনিকতায় ভরা সংলাপ নিয়ে নাটকটি সাধারণ দর্শকদের টানবে কি না, এমন সংশয় নিয়ে দেশে দেশে মঞ্চস্থ হয়েছে এই নাটক। তবে চট্টগ্রামে এই সংশয় ভুল প্রমাণিত হলো। ফেইম স্কুল অব ড্যান্স ড্রামা অ্যান্ড মিউজিকের নাট্য বিভাগের প্রযোজনায় গত মঙ্গলবার এ নাটকের দুটি প্রদর্শনীতেই দর্শক ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।

বাংলায় রূপান্তরের পর ফেইমের এই নাটকের নাম দাঁড়ায় ‘অন্তহীন প্রতীক্ষা’। থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের (টিআইসি) মিলনায়তনে মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা ও সন্ধ্যা সাতটায় দুটি প্রদর্শনী হয় নাটকটির।
নাটকের নির্দেশনা দেন ফেইমের পরিচালক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক অসীম দাশ। নাটকের অভিনয়, সেট, পোশাক, আলো ও শব্দ—সবই ছিল সুচিন্তিত, টান টান। অ্যাবসার্ড নাটক বলেই হাস্যরসের উপাদানের ছড়াছড়ি ছিল পুরো নাটকে।

নাটকে দেখা যায়, গোগো ও ডিডি নামে দুজন লোক গডো নামের কারও জন্য অপেক্ষা করছে। তাদের অপেক্ষার যেন কোনো শেষ নেই। অপেক্ষা করে থাকার সময়টুকুতে তারা নানান উপায় খুঁজে বের করে সময় কাটানোর। এতে তারা শুধু বিভ্রান্তই হয়। দুই অঙ্কের নাটকে প্রতিটি অঙ্কের শেষে গডোর কাছ থেকে খবর আসে। সঙ্গে সঙ্গে দর্শকেরা নতুন আশা খুঁজে পান।

তবে গডো কে, কেন তিনি আসবেন বা কী জন্য তার অপেক্ষায় থাকা—এসবের কোনো কিছুর ব্যাখ্যা মেলে না। আশা-নিরাশার দ্বন্দ্বে দুলতে দুলতে দর্শক নাটকের অন্তিমে পৌঁছান। নাটকে অভিনয় করেছেন মুবিদুর রহমান, কমল বড়ুয়া, দীপ্ত চক্রবর্তী, ফরহাদ হোসেন ও পূজা বিশ্বাস।