ভাড়া বাকি বলে বের করে দেওয়া লোকটির দৈনিক আয় কোটির ওপর

সিলভেস্টার স্ট্যালন
ছবি: সংগৃহীত

বাসা ভাড়া দেওয়ার অর্থ ছিল না। বাসার মালিক তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। নিউইয়র্কের উদ্বাস্তুদের ভিড়ে মিশে যান তিনি। তিন সপ্তাহ কাটান পোর্ট অথরিটি বাসস্ট্যান্ডে। তারপর একদিন খুঁটিতে সাঁটানো পোস্টারে নজর পড়ে। সেটি দেখে নিরুপায় হয়ে ‘সফট পর্নো’ ঘরানার সিনেমায় নাম লেখান। পারিশ্রমিক ২০০ ডলার। সেই থেকে অভিনয়ের শুরু। পরে মূল ধারার অভিনয়ে আকৃষ্ট হন। অভিনয় তাঁর ভাগ্য খুলে দেয়। এখন প্রতিদিন তাঁর আয় এক কোটি টাকার বেশি। সবার প্রিয় এই অভিনেতার নাম সিলভেস্টার স্ট্যালন। আজ তাঁর জন্মদিন। ১৯৪৬ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

হার না মানা সংগ্রামে

ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে সিলভেস্টার স্ট্যালনকে একাধিক সিনেমায় এক্সট্রা হিসেবে অভিনয় করতে হয়েছে। সিনেমায় একটি বা দুটি দৃশ্য তাঁকে দেখা যেত। এসব চরিত্রে হোটেলে গাদাগাদি করে বসে থাকা, নাচা, মূল চরিত্রের পেছন দিয়ে হেঁটে যাওয়া, কোনো দৃশ্যে ধাওয়া খেয়ে দৌড়ানো—এসব করতে হয়েছে। শুধু টাকার জন্যই করতে হয়েছিল এসব কাজ।

‘রকি’ সিনেমা দিয়ে সফলতার খাতায় নাম লেখান সিলভেস্টার স্ট্যালন
ছবি: সংগৃহীত

ভাগ্যবদল

১৯৬৮ সালে ‘স্কয়ার রুট’ সিনেমা দিয়ে অভিনয় শুরু। তাঁর ভাগ্য বদলে দেয় ‘রকি’ সিনেমা। স্ট্রাগলিং মুষ্টিযোদ্ধার চরিত্রে অভিনয় করে রাতারাতি তারকা বনে যান। সেরা অভিনেতাসহ ১০টি শাখায় সিনেমাটি অস্কার মনোনয়ন পায়। আর তাঁকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

সবচেয়ে বেশি যা শুনতে হয়

সিলভেস্টার স্ট্যালনকে সবচেয়ে বেশি শুনতে হয়, তিনি কত টাকার মালিক। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৪৫০ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া তাঁর প্রকৃত বয়স কত, কয়টা বিয়ে করেছেন, গার্লফ্রেন্ড আছে কি না, তাঁর উচ্চতা কত, এমন প্রশ্ন প্রায়ই শুনতে হয় এই অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালককে।

স্ত্রীর সঙ্গে সিলভেস্টার স্ট্যালন
ছবি: সংগৃহীত

হিরোর হিরো

অসংখ্য ভক্তের তিনি প্রিয় হিরো। কিন্তু তাঁর হিরো কোনো অভিনেতা নন। ব্যক্তিগত জীবনের তিনি তৈলচিত্র খুবই পছন্দ করেন। এই কাজে কিছুটা সময়ও কাটে। তিনি লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চিকে হিরো মনে করেন।

ছিনতাই নয়, অভিনয়

বাসা থেকে তাঁকে বের করে দেওয়ার পর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন। থাকতেন বাসস্ট্যান্ডে। এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তাঁর অবস্থা এতই শোচনীয় ছিল যে সেই প্রাপ্তবয়স্কদের সিনেমায় অভিনয় না করলে হয়তো ছিনতাই করতে হতো।

বছরের সবচেয়ে খারাপ অভিনেতা

তাঁর অভিনীত ‘রাইনস্টোন’ ১৯৮৪ সালের সেরা বাজে ছবি হিসেবে ১০টি শাখায় মনোনয়ন পায়। পরে তাঁর ক্যারিয়ারের গতি কিছুটা কমে যেতে থাকে।

সিলভেস্টার স্ট্যালন
ছবি: সংগৃহীত

চুল কাটাতে এক মিলিয়ন অফার

একটি পানীয়ের বিজ্ঞাপনের জন্য তাঁকে চার মিলিয়ন ডলার অফার করা হয়। তিনি রাজি হননি। কারণ তাঁকে চুল কাটাতে হবে। চুল কাটার জন্য সেই কোম্পানি পরে তাঁকে আরও এক মিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। তবুও রাজি হননি স্ট্যালন।

‘গডফাদার’ তাঁর জন্য হতাশার নাম

‘গডফাদার’ সিনেমায় ছোট একটি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অডিশন দিয়েছিলেন। কিন্তু মুখ কালো করে ফিরতে হয় তাঁকে। হতাশ হয়ে অভিনয় ছেড়ে লেখায় মনোযোগী হতে চেয়েছিলেন। পরে তিনি একটি চিত্রনাট্য লিখে শেষ করেছিলেন।

স্ত্রী ও তিনি মেয়ের সঙ্গে সিলভেস্টার স্ট্যালন
ছবি: সংগৃহীত

প্রিয় অক্ষর ‘এস’

ইংরেজি ‘এস’ অক্ষরটি তাঁর ভীষণ পছন্দ। এ জন্য চার সন্তানের নাম রেখেছিলেন এস দিয়ে।

১৪ স্কুল থেকে বহিষ্কার
শৈশবে তাঁর আচরণ ছিল অনেকটাই গুন্ডাদের মতো। বেশির ভাগ সময় স্কুলে মারামারিতে জড়াতেন। গুন্ডাদের মতো ছিল তাঁর আচরণ। সমাজবিরোধী ও সহিংস আচরণের জন্য ১৩ বছরের বয়সে ১৪ বার স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হন সিলভেস্টার স্ট্যালন।

সিলভেস্টার স্ট্যালন
ছবি: সংগৃহীত