বিবিসির চোখে ২১ শতকের সেরা টিভি সিরিজ
শীর্ষে ’দ্য ওয়্যার’
চলচ্চিত্র নিয়ে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি জরিপ করেছে বিবিসি। ২০১৯ সালে করেছে নারী পরিচালিত সেরা ১০০ ছবির তালিকা। ২০১৮ সালে করেছে সর্বকালের সেরা ১০০ বিদেশি ছবির তালিকা। এতদিন চলচ্চিত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল তাদের দৃষ্টি। এবার অন্য দিকে দৃষ্টি দিয়েছে তারা। ২১ শতকের সেরা টিভি সিরিজ কী—৪৩টি দেশের ২০৬ জন টিভি বিশেষজ্ঞের কাছে জানতে চেয়েছিল বিবিসির কালচার বিভাগ। তাদের পাওয়া উত্তর নিয়ে ১০০টি টিভি সিরিজের তালিকা করা হয়।
বিবিসির তালিকার শীর্ষে আছে ‘দ্য ওয়্যার’। ২০০২ সালে এইচবিওতে মুক্তি পাওয়া এই সিরিজের পটভূমিতে আছে মাদক ব্যবসা। যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম বাল্টিমোরের অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়েছে এই ব্যবসা। এই সাম্রাজ্যের মূল হোতা অ্যাভন বার্কসডেল। তার আছে নিজস্ব গুন্ডা বাহিনি। অন্য ব্যবসায়ীরা কোনো ধরনের বেয়াড়াপনা করলেই তাদের পেছনে লেলিয়ে দেওয়া হয় এই বাহিনি। শুধু তা–ই নয়, নামকরা আইনজীবী, বিভিন্ন লেফটেন্যান্টের সঙ্গেও তার সুসম্পর্ক। আইনের কলকবজায় আটকা পড়লে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন তারা। মাদক ব্যবসা দিয়ে পুরো পশ্চিম বাল্টিমোরকে গ্রাস করে ফেলেছে বার্কসডেল বাহিনি।
বার্কসডেল বাহিনিকে ঠেকানোর দায়িত্ব পান গোয়েন্দা জেমস ম্যাকনাল্টি। পুলিশের নরহত্যা ও নারকোটিকস দলকে নিয়ে মাঠে নামেন তিনি। শুরু হয় ইঁদুর–বিড়াল খেলা। মাদক সন্ত্রাসী ও পুলিশের লড়াই নিয়েই সিরিজটির গল্প। তবে শুধু টান টান উত্তেজনার থ্রিলার নয়, সিরিজটিতে উঠে এসেছে মাদকের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের জীবনের গল্প। আছেন মাদক সেবনকারী, বিক্রেতা, পুলিশ থেকে রাজনীতিবিদ পর্যন্ত।
সিরিজটির নির্মাতা ডেভিড সাইমন। গোয়েন্দা এড বার্নসকে সহযোগী লেখক হিসেবে নিয়ে এর আগে তিনি বানিয়েছেন পুলিশ ড্রামা সিরিজ ‘দ্য কর্নার’। বাল্টিমোরে মাদক পাচার তদন্তে নজরদারি প্রযুক্তির ব্যবহার করেছিলেন এড বার্নস। পুলিশ বিভাগে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য দেখে তখন তিনি হতাশ হন। সাইমন যখন ’বাল্টিমোর সান’ পত্রিকার হয়ে ক্রাইম বিভাগে কাজ করতেন, তখন তাঁকেও অনেক অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছে। এনবিসিতে কাজ করার সময় এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই সাইমন তৈরি করেছিলেন ‘হোমিসাইড: লাইফ অব দ্য স্ট্রিট’। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় এনবিসি থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। তারপরই তৈরি হয় ‘দ্য ওয়্যার’–এর ধারণা। এইচবিওতে সিরিজটি মুক্তি পাওয়ার পরে রাতারাতি জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে যায়।