মিজানুর রহমান আরিয়ান
ফেসবুক

প্রথম সিনেমা নেটওয়ার্কের বাইরে মুক্তির পর প্রতিক্রিয়া কী?

ঠিক এ রকম ফিল পেয়েছিলাম ২০১৭ সালে, যখন আমার পরিচালিত বড় ছেলে নাটকটি প্রচারিত হয়। মানুষের প্রচুর প্রশংসা, ভালো লাগা পাচ্ছি। এমন একটা মাধ্যমে সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, যেখানে টাকা দিয়ে সিনেমা দেখতে হয়। তাই ভালো লাগাটা বেশি। এই সিনেমার জন্য জীবনের সবচেয়ে বেশি কষ্ট করেছি। বেশি কষ্টের জন্য যখন বেশি ভালো লাগা পাই, বেদনাটা মধুর হয়ে যাচ্ছে আরকি।

কষ্টটা কী ছিল?

টানা ১৭ দিন শুটিং। কাস্টিংয়ের বিগ টিম। বারবার প্যানেলে বসা। যতটা পারা যায় নির্ভুলভাবে দর্শকের সামনে ছবিটি পৌঁছে দেওয়া। ছবিটি মুক্তি পর্যন্ত সব মিলিয়ে ১৩ মাসের একটা ভ্রমণ। অনেক বেশি এফোর্ট দিয়েছি। যে রকম ফিডব্যাক প্রত্যাশা করেছি, ও রকমই পাচ্ছি। মাঝেমধ্যে হয় না, কষ্ট করলাম, কিন্তু ফিডব্যাক পেলাম না—প্রথম সিনেমার ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। মানুষ বলছে পয়সা উশুল, আমি বলছি কষ্ট উশুল।

মিজানুর রহমান আরিয়ান পরিচালিত ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’তে অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ, নাজিফা তুষি, ইয়াশ রোহান, ফারিণ, অর্ষা, তাসনুভা তিশা, খায়রুল বাশার ও জোনায়েদ বোগদাদী
কোলাজ : চরকি

যাঁদের নিয়ে কাজ করেছেন, তাঁরা সবাই তরুণ। তাঁদের মধ্যে একজনকে নিয়ে শুধু আগে কাজ করেছেন। আট তরুণকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?

আগে আমি শুধু ইয়াশ রোহানকে নিয়ে কাজ করেছি। আমার প্রথম সিনেমার গল্প। প্রথম যখন সব কটি চরিত্র নিয়ে ভাবি বা চিত্রনাট্য তৈরি হয়, তখন এমন কাউকে খুঁজছিলাম, মাত্রই যারা ভার্সিটি শেষ করেছে। দেখলেই মনে হবে, ওরা বন্ধু। ও রকম খুঁজতে খুঁজতেই ওদের চারজনকে একত্র করি। প্রথম দিনের পরই তারা বন্ধু হয়ে যায়। একে অপরের সঙ্গে কথা বলা শুরু করে। নিজেরা একটা গ্রুপ তৈরি করে। গ্রুপে তারা চ্যাট করত। মজা করত। কারও না কারও বাসায় আড্ডা দিত। শুটিংয়ে গিয়ে দেখি, ওদের বন্ধুত্ব অনেক গাঢ় হয়েছে। এখন তো শুনি, এখনো ওরা একসঙ্গে ঘুরেফিরে, আড্ডা দেয়। এখনো তারা সিনেমার চরিত্রের মধ্যেই আছে। আমি কষ্ট করেছি এবং আমার প্রত্যেক শিল্পীও কষ্ট করেছে। রেজাল্ট ওরাও পাচ্ছে, আমিও পাচ্ছি।

কাজে কতটা স্বাধীনতা পেয়েছেন?

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘চরকি’ আমাকে চূড়ান্ত স্বাধীনতা দিয়েছে। সত্যি কথা বলতে কি, চ্যালেঞ্জটা আমি নিতেই চাইনি। আমি সব সময় যেহেতু একটা গল্প বলার চেষ্টা করি; আরও সুন্দর, পরিপাটি এবং বড় আয়োজনে প্রথম সিনেমায়ও তাই চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস ছিল, গল্পটা যদি ঠিকঠাক বলতে পারি, দর্শকের ভালো লাগবেই। যেহেতু সিনেমা, সবকিছু বড় ক্যানভাসে করতে পেরেছি।

গেল বৃহস্পতিবার মুক্তি পেয়েছে আরিয়ান পরিচালিত প্রথম ওয়েব ফিল্ম ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’
ছবি: ফেসবুক

প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত। এটা কি পরের সিনেমায় কাজের ক্ষেত্রে চাপ তৈরি করবে?

আমি এখন পরের সিনেমার স্ক্রিপ্টিংয়ে আছি। টেনশন বা চাপটা আমি নিতেই চাই না। চাপ নিলেই কাজ খারাপ হবে। আমি সব সময় যেটা করে আসছি, চাপ না নিয়ে কাজ করার। আগের কাজের চেয়ে পরের কাজে ছাড়িয়ে যাওয়ার চিন্তা কখনো করি না। যে গল্পটা নিয়ে কাজ করি, সেটা নিয়েই ভাবতে থাকি। গল্পের সেরা ভার্সনটা তৈরি করার চেষ্টা থাকে। এত দিনের জার্নিতে এটা জেনে গেছি যে আমার দর্শকেরা কী পছন্দ করে।

একজন পরিচালক কি দর্শকের পছন্দকে প্রাধান্য দেবেন, নাকি তাঁর মতো করে নির্মাণ করবেন?

একটার সঙ্গে আরেকটার কানেকশন আছে বলে মনে করি। ফাইনালি আমরা দর্শকের জন্যই কাজ করি। বিশ্বাস করি, পৃথিবীর প্রত্যেক চলচ্চিত্রকার দর্শকের জন্যই কাজ করেন। দর্শকের ভালো লাগা মানে আমি যে গল্পটা বলতে চাই, দর্শক যেন ভালোভাবে গ্রহণ করে।

‘নেটওয়ার্কের বাইরে’র অভিনেতাশরিফুল রাজের সঙ্গে মিজানুর রহমান আরিয়ান

নতুন কাজের পরিকল্পনা?

টেলিভিশনের জন্য তো কাজ করবই। একটা সিনেমার গল্প চূড়ান্ত। আরেকটার স্ক্রিপ্টিং শুরু হয়েছে। বছরে আমি দুটো সিনেমা বানাব।

নতুন ছবির গল্প কী নিয়ে?

দুটো সিনেমার গল্পের একটি ড্রামাটিক, আরেকটা অ্যান্থলজি ফিল্ম, যেখানে পাঁচটা গল্প থাকবে।