উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ভারত রত্ন, সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর আজ চিরবিদায় নিলেন ৯২ বছর বয়সে। তাঁর মৃত্যুতে গোটা দেশের মতো কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গে নেমে এসেছে শোক। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা দিয়েছেন, কাল রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত লতা মঙ্গেশকরের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে কলকাতার রবীন্দ্র সদন চত্বরে। আজই তিনি লতার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে আরও ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ১৫ দিন রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বাজানো হবে লতা মঙ্গেশকরের গান।

লতা মঙ্গেশকর
ছবি: সংগৃহীত

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সংগীতশিল্পীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘সংগীতের জাদুতে লতাজি আট দশক আমাদের মুগ্ধ করে রেখেছেন। আমরা তাঁকে আমাদের রাজ্যের সংগীতজগতের সেরা সম্মান দেওয়ার উদ্যোগ নিলেও তাঁর অসুস্থতার কারণে তিনি আসতে পারেননি আমাদের অনুষ্ঠানে। সেই আফসোস রয়ে গেল। তিনি ১৮৫টির বেশি বাংলা গান গেয়ে আমাদের তাঁর সুরের মূর্ছনায় বন্দী করে রেখেছেন। ১৯৫৬ সালে তিনি গেয়েছেন প্রথম বাংলা গান। গান গেয়েছেন ৩৬ ভাষায়, ৩০ হাজারের বেশি।’
মমতা আরও বলেন, ‘প্রথম বাংলা গানের ক্যাসেট “আকাশ প্রদীপ” দিয়ে আজও আমি ক্যাসিনো বাজানো শুরু করি। আজ আমরা হারিয়েছি সংগীতজগতের সেই কিংবদন্তিকে, মহান এক শিল্পীকে। ঈশ্বর তাঁর আত্মার মঙ্গল করুন।’

লতা মঙ্গেশকর
ছবি: সংগৃহীত

লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে কলকাতার সাংস্কৃতিক জগতে নেমে এসেছে গভীর শোক। সাংস্কৃতিক জগতের মানুষেরা বলেছেন, কলকাতাবাসী হারাল এক জীবন্ত কিংবদন্তিকে। যে ক্ষতি কোনো কিছুর মূল্যে পূরণ করা সম্ভব নয়।
অভিনয়শিল্পী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বলেন, ‘তিনি ছিলেন আমাদের স্বপ্নের এক জাদুকর। সংগীত দিয়ে মুগ্ধ করে রেখেছিলেন সংগীতজগৎকে। তিনি আজও আছেন আমাদের হৃদয়ে। তিনি অমর। তাঁর সুর বেঁচে থাকবে অনন্তকাল।’
চিরঞ্জিৎ বলেন, ‘তাঁর গান আজন্ম বেঁচে থাকবে আমাদের হৃদয়ে যুগ যুগ ধরে।’
সংগীতশিল্পী কুমার শানু বলেন, ‘আজ সত্যিই মাকে হারালাম। সংগীতজগতের এক সুরেলা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হলো।’

লতা মঙ্গেশকর
ছবি: সংগৃহীত

রূপঙ্কর বাগচী বলেন, ‘আমি আজ মাতৃহারা হলাম।’ অনুপম রায় বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে কাজ না করার আফসোস রয়ে গেল আমার।’ লোপামুদ্রা মিত্র বলেন, ‘এ যেন আমার কাছে জীবন্ত দেবীর বিসর্জন। সরস্বতী পূজার পরদিন চলে গেলেন তিনি।’
হৈমন্তী শুক্লা বলেন, ‘হিন্দির চেয়ে তাঁর গাওয়া বাংলা গানের প্রতি আমার মন পড়ে থাকত বেশি।’ কৌশিকী চক্রবর্তী বলেন, ‘তিনি ছিলেন আমার ভগবান। সেই ভগবান আজ চলে গেলেন। মেনে নিতে পারছি না।’