টুইটে ছবিটি পোস্ট করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
ছবি: এএনআই

কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকর হাসপাতালে ছিলেন ২৭ দিন। গতকাল শনিবার হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। আজ রোববার ভোরে তিনি প্রয়াত হন। তাঁর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতে ঘোষণা করা হয়েছে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোক।

ভারতের রাষ্ট্রীয় এক অনুষ্ঠানে লতা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

আজ সকাল সাড়ে ১০টায় নরেন্দ্র মোদি টুইটে লিখেছেন, ‘আমি অবর্ণনীয় রকম শোকাহত। সদয় ও শ্রদ্ধেয় লতা দিদি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। তিনি আমাদের দেশে একটি শূন্যতা তৈরি করে গেলেন, যা পূরণ করা যাবে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাঁকে ভারতীয় সংস্কৃতির একজন বলিষ্ঠ ধারক হিসেবে মনে রাখবে, যার সুরেলা কণ্ঠ মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখত।’ আরেক টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘লতা দিদির গান নানা রকম আবেগ তুলে ধরেছে। তিনি গত কয়েক দশক ভারতীয় চলচ্চিত্রের পরিবর্তনগুলো নিবিড়ভাবে দেখেছেন। চলচ্চিত্রের বাইরে, তিনি সর্বদা ভারতের সমৃদ্ধির ব্যাপারে উৎসাহী ছিলেন। তিনি সব সময় একটি শক্তিশালী ও উন্নত ভারত দেখতে চেয়েছিলেন।’ আরেক টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘আমি সব সময় লতা দিদির অগাধ স্নেহ পেয়েছি, এ আমার সৌভাগ্য। তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। লতা দিদির প্রয়াণে ভারতবাসীর মতো আমিও শোকাহত। তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সমবেদনা জানিয়েছি।’

ভারতরত্ন লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বাংলা গান ও শিল্পীদের ভালোবাসার জন্য প্রয়াত শিল্পীকে বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি। সিরিজ টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘ভারতের প্রয়াত আইকন, ভারতরত্ন লতা মঙ্গেশকরকে আমার হৃদয় থেকে শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর পরিবার এবং বিশ্বের কোটি কোটি ভক্তের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। ভারতের নাইটিঙ্গেলের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর আর সব ভক্তের মতো আমিও তাঁর কণ্ঠ ও পরিবেশনায় মুগ্ধ ছিলাম। বাংলা এবং প্রাচ্যের শিল্পীদের হৃদয়ে ঠাঁই দেওয়া ও আমাদের সংগীতজগতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠার জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

আরও পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশে গান গেয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর

হিন্দি সিনেমার কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর ২৫ হাজারের বেশি গান করেন ৭ দশক ধরে। লতার ১৩ বছর বয়সে তাঁর বাবা পণ্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকর হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মঙ্গেশকর পরিবারের কাছের বন্ধু অভিনেতা ও পরিচালক বিনায়ক দামোদর লতার পরিবারের দায়িত্ব নেন। লতাকে সংগীতে ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করেন। ১৯৪৫ সালে লতা মঙ্গেশকর মুম্বাইতে ওস্তাদ আমান আলী খানের কাছে ধ্রুপদি শিখতে আসেন
ইনস্টাগ্রাম

করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় গত ১১ জানুয়ারি লতাকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যানডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। প্রথম থেকেই তাঁকে রাখা হয় নিবিড় পর্যবেক্ষণে (আইসিইউ)। ৩০ জানুয়ারি তাঁর কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় তিনি আর যুদ্ধ শেষ করতে পারলেন না। আজ রোববার সকালে ৮টা ১২ মিনিটে মাল্টি অর্গান ফেইলিওরে এই সুরসম্রাজ্ঞীর মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন

৬২ সালে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল