ঈদে মোশাররফ করিমের বাড়ি ফেরা (প্রথম পর্ব)
ঈদের সময় চার বছর ধরেই মন কিছুটা খারাপ থাকে অভিনেতা মোশাররফ করিমের। কারণ, এখন আর আগের মতো ঈদ এলে গ্রামে ফেরার তাড়া থাকে না। একসময় অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও ঈদের সময়টা পিঙ্গলকাঠি গ্রামেই কাটাতেন। রাতদিনের শুটিং শেষে ঈদের ছুটির অবসরে ছুটতেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পিঙ্গলকাঠিতে। ‘ঢাকা থেকে বাড়ি যাওয়ার সেই সময়টুকু ছিল অন্য রকম উচ্ছ্বাসে ভরা। আর গ্রামে আমি যখন এলাম, তখন তো আমি আর মোশাররফ করিম নেই, আমি তখন শামীম।’
মোশাররফ করিম কথা বলছিলেন। তবে তাঁর কথার ভেতর থেকে বারবার বেরিয়ে আসছিলেন ‘গাঁয়ের ছেলে’ শামীম। কারণ, গ্রামে মোশাররফকে সবাই শামীম নামেই ডাকেন। শামীম এলেই বন্ধুবান্ধব মিলে শুরু হয়ে যায় ধুন্ধুমার আড্ডা।
এই ঈদে সেই আড্ডা কি হবে?
প্রশ্নটি করতেই একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল মোশাররফের মুখ থেকে, ‘আমার মায়ের শরীর কিছুটা খারাপ। এ অবস্থায় তাঁর পক্ষে এতটা পথ ভ্রমণ করা খুব কঠিন। তাই এবার ঈদে আর বাড়িতে যাওয়া হচ্ছে না।’ করোনাসহ নানা কারণে পরপর চার বছর ঈদে গ্রামে যাওয়া হয় না মোশাররফ করিমের।
এবারের ঈদেও ঢাকায় থাকবেন। কিন্তু মোশাররফের ভেতরে ‘শামীম’ নামের যে ছেলের বাস, তাঁর মনটা তো পড়ে থাকবে সেই পিঙ্গলকাঠি গ্রামে।
চল মন বাড়ির পথে
মোশাররফের কাছে ঈদের আনন্দ মানেই গ্রাম। বললেন, ‘২০০৮ সাল থেকে টানা চাঁদরাত পর্যন্ত শুটিং করতে হতো। তারপরই ছুটতাম গ্রামে—কখনো এক দিন আগে, কখনোবা ঈদের দিন হলেও বাড়িতে পৌঁছাতাম। ঈদে পিঙ্গলকাঠিতে আমার যাওয়া লাগবেই।’ আবার কখনো এমনও হয়েছে, ঈদের দিন বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন।
কেন গ্রামে যাওয়ার প্রতি এত টান?
প্রশ্নটি করতেই শামীমের ভেতরে থাকা মোশাররফ করিম মুখ খুললেন, ‘এটা টানটা আসলে বলে বোঝানো যাবে না। এটা আমি ফিল করি। আমি জীবনানন্দ দাশের কবিতা পড়ে আনন্দ পাই। এখন কেউ যদি জানতে চান, কেমন আনন্দ হয়—সেটা কি বোঝানো যায়?
এই আনন্দটাও এ রকম। ঈদ এলেই আমার ভেতর থেকে কেউ আমার অবচেতন মনকে মনে করিয়ে দেয়, গ্রামে যেতেই হবে। তবে কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করি একটি ঈদে যাব। এখন সেটাও আর হয়ে উঠছে না। আমার পরিবারের অনেকেই ঢাকায় আছেন। তারপরও গ্রামে ঈদ করার জন্য একটা অন্য রকম টান ফিল করি। অবসরে গ্রামের প্রকৃতি আর আত্মীয়দের সান্নিধ্যে কাটাতে খুব ভালো লাগে। মাটির এই টান আসলে বলে বোঝানো যাবে না।’