কঠোর বিধিনিষেধে চলছে সীমিত আকারে শুটিং
ঈদের পর থেকেই শুরু হয় কঠোর বিধিনিষেধ। নাটকের সংগঠনগুলো ছোট পর্দার সব শুটিং বন্ধ ঘোষণা করে। ফুটেজ শেষ হয়ে যাওয়ায় এখন বাধ্য হয়ে কিছু ধারাবাহিকের শুটিং শুরু করেছেন কয়েকজন নির্মাতা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা ও এর বাইরে একাধিক শুটিং বাড়িতে ৬ আগস্ট থেকে শুটিং শুরু হয়েছে। ‘বাকের খনি’, ‘বিবাহ হবে’, ‘গোবিন্দপুরের গল্প’সহ একাধিক নাটকের শুটিং চলছে।
ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘কিছু চলমান ধারাবাহিক নাটকের প্রচার আটকে যাচ্ছিল। বাধ্য হয়ে তাঁদের শুটিং করতে হয়েছে। কারণ, ঈদের আগে নির্দিষ্ট একটি সময় পর্যন্ত সবার শুটিং করা ছিল। কিছু দৃশ্যের জন্য যাঁদের প্রচার আটকে যাচ্ছিল, শুধু তাঁরাই শুটিং করছেন। এখানে মানবিক অনেক বিষয় থাকে। যে কারণে সাংগঠনিকভাবে জোর দিয়ে শুটিং বন্ধ করার কথা বলা যাচ্ছে না। শুটিং করার খবর শুনেছি। কিন্তু কেউ জানিয়ে শুটিং করেনি।’
হাতে গোনা কিছু শিল্পী ও কলাকুশলী নিয়ে উত্তরার রংঢং শুটিং বাড়িতে শুরু হয়েছে ‘বাকের খনি’ নাটকের শুটিং। স্বল্প পরিসরে নাটকটির শুটিং প্রসঙ্গে পর্ব পরিচালক তাসদিক শাহরিয়ার খান বলেন, ‘আমরা বাধ্য হয়ে শুটিং করেছি। খুবই কম শিল্পী নিয়ে। বাড়ির বাইরে কোনো দৃশ্যের শুটিং করছি না। অল্প সময় শুটিং করছি। এটা সংগঠনকে জানানো আছে। শুটিং না করলে আগামীকাল আমাদের নাটকটির প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা সরকারি সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে কাজ করছি। কঠোর বিধিনিষেধ শেষ হলে আমরা নিয়মিত শুটিং শুরু করব।’ নাটকটির অভিনেতা মীর সাব্বির বলেন, ‘আমরা সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুটিং করছি। শুটিং না করলে পর্ব আটকে যাবে। বাধ্য হয়েই শুটিংয়ে আসা।’
৫ তারিখের পর শুটিং শুরু হবে, এটা ধরে নিয়ে আগে থেকেই শুটিংয়ের জন্য আবেদন করা ছিল। মৌখিকভাবে অনুমতিও পেয়েছেন বলে জানান অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম। তিনি বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট সরকারি পর্যায়ে আবেদন করে রেখেছিলাম। তখন এটাও বলেছিলাম, শুটিংয়ের জন্য আমাদের আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়। কিছু ধারাবাহিকের শুটিং না করলেই নয়। তাঁরাই সীমিত আকারে শুটিং করছেন। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন। নতুন কোনো নাটকের শুটিং কেউ করছেন না। সবাইকে বলব, প্রয়োজন ছাড়া ১০ তারিখের পরে শুটিং করুন।’
গাজীপুর পুবাইলের বিলবিলাই, মেঘলাসহ পাঁচটি বাড়িতে শুটিংয়ের কথা জানা গেছে। বিলবিলাই শুটিং বাড়ির ম্যানেজার খোকন হোসেন বলেন, ‘৫ আগস্টের পর শুটিং করা যাবে কি না, সেটা আমাদের কেউ বলেননি। আমাদের শুটিং বাড়িতে নিয়মিত কিছু ধারাবাহিকের শুটিং হতো। তাদের প্রচার আটকে যাচ্ছিল, এ জন্য এক দিন কিছু সময় “বিবাহ হবে” নাটকের দু–তিনটি দৃশ্যের শুটিং হয়েছিল। আরেকটি নাটকের শুটিং হয়েছে। তবে সবাইকে বলে দিয়েছি, ১০ আগস্টের পর নিয়ম মেনে শুটিং করতে।’
উত্তরার বেশির ভাগ শুটিং বাড়িতেই শুটিং চলছে বলে জানান শুটিং বাড়ি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম। তিনি বলেন, ‘১ আগস্ট থেকে শুটিং শুরু হয়েছে। ৫ আগস্টের পর থেকে শুটিংয়ে কোনো বাধা নেই। আমার “আপন ঘর” শুটিং বাড়িতে নাটক, বিজ্ঞাপনের শুটিং চলছে। এখন সব বাড়িতেই শুটিং চালু হয়ে গেছে। তবে সবাইকে বলছি, বাড়ির বাইরে শুটিং করা যাবে না।’
‘বিবাহ হবে’ নাটকের নির্মাতা রওনক হাসান বলেন, ‘৭ আগস্ট শুটিং না করলে আগামীকাল নাটকটির প্রচার বন্ধ হয়ে যেত। আমি একসঙ্গে দুটি শুটিং বাড়ি নিয়ে বাড়তি সতর্কতায় শুটিং করেছি। সব সময় সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক ছিল। শুধু ক্যামেরার সামনে মাস্ক খোলা যেত। কাউকে যাতে পাশাপাশি দাঁড়াতে না হয়, চিত্রনাট্য এমনভাবে লেখা ছিল। লাফালাফি বা উচ্চ স্বরে বা এক দৃশ্যে অনেক শিল্পী থাকবে না। সচেতনতাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছি।’