মেরিল-প্রথম আলো ২০১৫ পুরস্কার অনুষ্ঠানে জামদানি কাপড়ে তৈরি একটি পোশাক পরেছিলেন অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম৷ ফিউশনধর্মী পোশাকটি নজর কেড়েছিল অনেকেরই৷ শাড়ি, সালোয়ার-কামিজের পাশাপাশি একটু অন্য ধাঁচের এমন পোশাক এখন তৈরি করছেন আমাদের ডিজাইনাররা৷ গত কয়েক বছর তরুণীদের উৎসবের পোশাকে গাউন বাজিমাত করলেও ডিজাইনাররা বলছেন বছরের শেষ থেকে তেমনটা দেখা যাবে না একেবারেই৷ এর পরিবর্তে পোশাকে থাকবে দেশীয় ঘরানার ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সমন্বয়৷ যাকে বলে ফিউশন৷ বছরের শেষ সময়টা আমাদের দেশে চলে বিয়ের মৌসুম৷ আর তাই এই সময় থেকে তরুণীদের পোশাকে যুক্ত হবে নতুন ফ্যাশনধারা৷
এখনকার তরুণীরা গৎবাঁধা ফ্যাশনধারায় নিজেকে আটকে রাখতে চায় না। এটাই অনুপ্রাণিত করেছে ডিজাইনারদের—জানালেন ‘আনোখি’র ডিজাইনার হুমায়রা খান৷ এদিকে নতুন ধারার পোশাক তৈরি করতে তো প্রয়োজন নতুন নতুন ধারণা৷ পোশাকের কাটছাঁট কী হবে, তা ঠিক করতে রীতিমতো মতো গবেষণা চলে আমাদের সংস্কৃতির ইতিহাস নিয়ে। নানা সময়ে নানা সংস্কৃতির মানুষ এসেছিল এই অঞ্চলে৷
পোশাকের ধারাতেও ছিল ভিন্নতা৷ এই সময়ে এসে ডিজাইনাররা বেছে নিচ্ছেন সেই ধারণা৷ যেমন মোগল আমলে সারারা আর গারারার মতো পোশাকগুলো এ অঞ্চলে বেশ প্রচলিত ছিল৷ সেই ঘরানার পোশাকগুলোই ডিজাইনাররা ফিরিয়ে আনছেন নতুন করে৷ পোশাকের কাটছাঁটে যুক্ত হচ্ছে নিত্যনতুন ভাবনা৷ আর সেই ভাবনা থেকেই পোশাকের ধারা তৈরি হচ্ছে বলে জানালেন কোরাল ক্লজেট বাই রুপো শামস অ্যান্ড সামিরা ইজলালেন ডিজাইনার রুপো শামস৷
এদিকে কয়েক বছর ধরে পোশাকে ছিল হালকা রঙের প্রাধান্য। এখন তেমনটা একেবারেই দেখা যাবে না৷ কারণ আন্তর্জাতিক ফ্যাশনে রাজত্ব করবে রয়্যাল ব্লু, সবুজ আর লালের মতো উজ্জ্বল রং৷ এই রংগুলোর ব্যবহার পোশাকে তুলে ধরে আভিজাত্য। নকশায় জমকালো চুমকি, পাথর আর মুক্তার কাজ থাকলেও সেখানটায় দেখা যাবে নতুনত্ব। টিল্লা ওয়ার্ক, থ্রিডি ওয়ার্কের কাজগুলো প্রাধান্য পাবে পোশাকে৷ ফ্যাব্রিকে থাকবে ভেলভেটের জয়জয়কার৷
একই পোশাকে থাকবে মসলিন, জামদানি, বেনারসি বা ভেলভেটের ব্যবহার৷ রুপো শামসের কাছেই জানা গেল, প্যান্ট আর সালোয়ারের কাটে সবচেয়ে বেশি বৈচিত্র্য থাকবে এবার৷ পালাজ্জোটা বিদায় নেবে ফ্যাশন থেকে৷ সালোয়ার আর প্যান্টের সঙ্গে যুক্ত হবে কিউলট, স্ট্রেট, বেলবটম, ফেয়ারি এমন নতুন নতুন সব নাম৷ পোশাকের ওপর কেপ পরার চলটা এই বছরও থাকবে৷ তবে কেইপের দৈর্ঘ্যেও থাকবে নতুনত্ব। কামিজে আবারও দেখা যাবে কলির ব্যবহার৷ পার্টির পোশাকে বরাবরের মতোই থাকবে শিফন জর্জেটের ব্যবহার৷ লং লাইনের শিফন জর্জেটে মুক্তার কাজ তুলে ধরবে পোশাকের আভিজাত্য৷
ফ্যাশন-সচেতন তরুণীদের তো জানিয়ে দেওয়া হলো উৎসবের পোশাকের নতুন ধারার কথা৷ তবে এ ধরনের পোশাক পরার আগে কিছু বিষয় বিবেচনায় রেখে পোশাক নির্বাচনের পরামর্শ দিলেন হুমায়রা খান৷ যেমন: অনেকেরই ধারণা যাদের উচ্চতা কম তাদের এসব জমকালো পোশাকে একেবারেই মানায় না৷ এ ক্ষেত্রে হুমায়রা খানের পরামর্শ হলো একেবারে পা পর্যন্ত লম্বা পোশাক পরলে তা সব ধরনের উচ্চতায় মানিয়ে যাবে৷