কোলাজ: একটু থামুন

: স্যার, আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশেষত্ব কী?

: এখানে আপনি যে সুবিধা পাবেন, তা পৃথিবীর আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পাবেন না!

: বাহ্! গবেষণার সুবিধা নিশ্চয়ই?

: গবেষণা কেন হবে? গবেষণা তো অনেক মেহনতের কাজ। বাচ্চারা ভার্সিটিতে এসে এত কঠিন কাজ করলে হবে? সার্টিফিকেট পাওয়ার পর তো জীবনসংগ্রামে নামবেই। তখন এমনিতেই কঠিন কঠিন কাজ করবে তারা।

: তাহলে নিশ্চয়ই ক্লাস লেকচার, ভালো ভালো টিচার...?

: ক্লাস লেকচার, টিচার দিয়ে কী হবে? কী সব সেকেলে কথাবার্তা বলছেন! শুধু ক্লাসে পড়ে থাকলে হবে? ওরা শিখবে প্রকৃতি থেকে, বাস্তবতা থেকে। মাঠে থাকবে, মাঠে থেকে শিখবে। ভার্সিটিতে এসে যদি এগুলো না করে, সে কীভাবে ছাত্র হবে? এই ইট–কাঠের ক্লাসে কি সব শেখা হয়? আপনিও নিশ্চয়ই পড়াশোনা করেননি, ফাঁকি দিয়েছেন? পড়েননি—‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র’?

: জি জি, পড়েছি। বুঝতে পারিনি। কিন্তু কিসে স্পেশাল, সেটা যদি একটু বলতেন!

: এমন একটা বিষয়ে আমার বিশ্ববিদ্যালয় স্পেশাল, চাইলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও নাম লেখানো যাবে! খালি ওদের জানালেই হবে।

: বাহ্! নির্ভার করলেন। ছেলেমেয়েকে কোথায় পড়াব, এ নিয়ে খুব টেনশনে ছিলাম। আপনার কথায় টেনশনমুক্ত হলাম। নিশ্চয়ই র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথম দিকে, তাই বিনয়ে সব চেপে যাচ্ছেন, তাই না, স্যার?

: আরে নাহ্। র‌্যাঙ্কিং-ট্যাঙ্কিং নিয়ে আমি ভাবি না। ওসব র‌্যাঙ্কিং-ট্যাঙ্কিং ছোটলোকি চিন্তা। তা ছাড়া একধরনের রেসিজমও। আমি সাম্যে বিশ্বাসী। সবার জন্য সমান।

: বাহ্ বাহ্! স্যার, একটু যদি বলতেন, সবার জন্য কী সমান?

: চা-চপ–শিঙাড়া!

: মানে স্যার...ঠিক বুঝলাম না!

: বুঝলেন না? বুঝবেন কী করে, পড়াশোনা তো করেননি! আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক সবার জন্য ক্যান্টিনে মাত্র ১০ টাকায় চা-চপ–শিঙাড়া পাওয়া যায়!

: জি!

: জি! অবাক হচ্ছেন? পৃথিবীর একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে মাত্র ১০ টাকায় চা-চপ–শিঙাড়া পাওয়া যায়। এদিক দিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে নম্বর ওয়ান বলতে পারেন!

: স্যার, আমি উঠি। কিছু মনে করবেন না, আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে, আমি বোধ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বদলে ভুল করে কোনো রেস্তোরাঁয় ঢুকে পড়েছি।

: আরে আরে, উঠবেন কেন? এসেছেন যখন, চা-চপ–শিঙাড়াটা খেয়েই যান!