বিশ্বনেতাদের নিন্দা ও সংহতি

সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে লন্ডনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। গতকাল বহুতল ভবন শার্ড টাওয়ার ও লন্ডন ব্রিজ রেলস্টেশনের বাইরে সশস্ত্র পুলিশের পাহারা l ছবি: এএফপি
সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে লন্ডনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। গতকাল বহুতল ভবন শার্ড টাওয়ার ও লন্ডন ব্রিজ রেলস্টেশনের বাইরে সশস্ত্র পুলিশের পাহারা l ছবি: এএফপি

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। একই সঙ্গে তাঁরা যুক্তরাজ্য ও আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য প্রার্থনা এবং তাঁদের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন।

স্থানীয় সময় গত শনিবার রাতে লন্ডন ব্রিজ এবং পাশের একটি মার্কেটে হামলায় ৭ জন নিহত ও কমপক্ষে ৪৮ জন আহত হন। ৩ জন হামলাকারীকেও পুলিশ গুলি করে হত্যা করে।

ফ্রান্স

লন্ডনে শনিবার রাতের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ফরাসি নাগরিক। এ হামলার প্রতিক্রিয়ায় ফ্রান্সের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেছেন, তাঁর দেশ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও বেশি করে যুক্তরাজ্যের পাশে থাকবে। তিনি বলেন, ‘আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তাঁদের প্রিয়জনদের প্রতি আমার সমবেদনা।’

জার্মানি

দেশটির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, ‘এই ভয়াবহতা এবং শোকে আজ আমরা সবাই একতাবদ্ধ এবং দৃঢ়চেতা। এই একতা দেশের সীমান্তের গণ্ডি পেরিয়ে।’ বিবৃতিতে তিনি বলেন, জার্মানি এই প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করছে, যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যের পাশে থাকবে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্র

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটার বার্তায় বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের সহায়তায় যা করা সম্ভব যুক্তরাষ্ট্র তা করবে। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।’ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে কাপুরুষোচিত হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, তারা যুক্তরাজ্যকে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে।

সংগীতশিল্পী আরিয়ানা গ্রান্ডে, ম্যানচেস্টারে যাঁর কনসার্টে হামলা হয়েছিল কিছুদিন আগে, এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘লন্ডনের জন্য প্রার্থনা।’ ম্যানচেস্টারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশের জন্য তিনিসহ আরও কয়েকজন সংগীতশিল্পীর সেখানে আরেক কনসার্টে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল বলেছেন, ব্রিটিশ জনগণের জন্য প্রার্থনা ও তাঁদের প্রতি দৃঢ় সংহতি রয়েছে তাঁর। টার্নবুল জানান, হামলায় তাঁদের একজন নাগরিক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

রাশিয়া

রুশ প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিন এই হামলায় মর্মাহত হয়েছেন এবং ব্রিটেনের জনগণের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র রুশ বার্তা সংস্থাকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

তুরস্ক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বলেন, ‘বাগদাদ, কাবুলের পর এবার লন্ডন। আমরা সন্ত্রাসের নিন্দা জানাই, তা যেখানেই সংঘটিত হোক না কেন। আমাদের যৌথ প্রচেষ্টায় সন্ত্রাসবাদকে পরাজিত করতে হবে।’

ইউরোপীয় ইউনিয়ন

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ-ক্লদ জাঙ্কার বলেছেন, ‘আমি জানি, লন্ডনবাসী এই ঘটনা পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার স্পর্ধা রাখে, যেমনটা কিছুদিন আগে দেখিয়েছে ম্যানচেস্টারবাসী। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এর সদস্য রাষ্ট্র এবং মিত্ররা লন্ডনের পাশে আছে।’

কানাডা

প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘লন্ডনে বন্ধুদের জন্য ভালোবাসা এবং সমর্থন জানাচ্ছে কানাডার লোকজন।’

ইতালি

প্রধানমন্ত্রী পাওলো জেনটিলোনি বলেছেন, ‘আক্রান্ত এবং আহতের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা। সন্ত্রাসবাদ প্রতিহত করতে আমাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির পুনর্ব্যক্ত করছি।’

আরব লিগ

সংস্থাটির প্রধান আহমেদ আবুল গেইত বলেন, সন্ত্রাসবাদ এবং উগ্রবাদের শক্তি খর্বে এখনই আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন।

ভ্যাটিকান

পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘প্রার্থনা করছি, পবিত্র আত্মা সারা বিশ্বে শান্তি নামিয়ে আনুক এবং যুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদের মহামারি থেকে রক্ষা করুক, যা গত রাতে লন্ডনে নিরীহ মানুষের জীবন নিয়েছে।’

লন্ডন হামলার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানানো বিশ্বনেতাদের তালিকায় আরও আছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বিল ইংলিশ, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট প্রমুখ।