এক-চতুর্থাংশ শিশু যুদ্ধপীড়িত

সিরিয়ার এক যুদ্ধপীড়িত শিশু
সিরিয়ার এক যুদ্ধপীড়িত শিশু

বিশ্বের প্রতি চারটির মধ্যে একটি শিশু যুদ্ধ কিংবা দুর্যোগপীড়িত এলাকায় বসবাস করে। তাদের দুর্ভোগ অবর্ণনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। আক্রান্ত শিশুদের জন্য এই মুহূর্তে বড় ধরনের সহায়তা প্রয়োজন।

জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এই তথ্য দিয়ে আক্রান্ত শিশুদের জন্য এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ সহায়তা চেয়েছে। কেবল ২০১৮ সালের জন্যই ৩৬০ কোটি ডলার সহায়তা প্রয়োজন ইউনিসেফের। সংস্থাটি জানাচ্ছে সহিংসতা, দারিদ্র্য এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ইতিমধ্যে ৫০ লাখের বেশি শিশু বাস্তুহারা হয়েছে।

ইউনিসেফ যুক্তরাজ্যের নির্বাহী পরিচালক মাইক পেনরোস সতর্ক করে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ এবং সহিংসতা বাড়ছে। তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ইয়েমেনের শিশুরা। যুদ্ধপীড়িত দেশটিতে কলেরা ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপক হারে। এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। সেখানে শিশুদের জন্য সবচেয়ে বেশি সহায়তা প্রয়োজন। আর জাতিগত সহিংসতা থেকে বাঁচতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুরাও কলেরার ঝুঁকিতে রয়েছে। সেখানেও বড় ধরনের অর্থ সহায়তার প্রয়োজন হবে। এর পাশাপাশি দক্ষিণ সুদান, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো এবং মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রেও পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে অধিকাংশ সরকারি সেবা খাত ভেঙে পড়েছে। সেখানে সুপেয় পানি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার উদ্যোগগুলো ব্যাহত হয়েছে। ফলে আধুনিক ইতিহাসের ভয়াবহতম কলেরার প্রাদুর্ভাব ঘটেছে।

গত মঙ্গলবার ইউনিসেফ সতর্কবার্তা দিয়েছে, উত্তর কোরিয়ায় ৬০ হাজারের বেশি শিশু অনাহারে থাকার ঝুঁকিতে রয়েছে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে অর্থনীতি ঝুঁকিতে রয়েছে এবং ত্রাণ সরবরাহে চলছে ধীরগতি।

ক্রমবর্ধমান চাহিদা সত্ত্বেও ইউনিসেফ প্রয়োজনীয় পরিমাণ সহায়তা পাবে না বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। গেল ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ওই বছরে লক্ষ্যমাত্রার ৬৫ শতাংশ সহায়তা পেয়েছিল ইউনিসেফ।

মাইক পেনরোস বলেন, ‘আমরা সব সময়ই প্রত্যাশা করি, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা প্রায়ই তা পাই না।’

 ২০১৭ সালে প্রাপ্ত সহায়তার অর্ধেকের বেশি গিয়েছে দক্ষিণ সুদান এবং সিরিয়ার শিশুদের জন্য। অন্য আক্রান্ত দেশগুলো অনেক কম সহায়তা পেয়েছে।

গেল বছর ইউনিসেফে সর্বোচ্চ অর্থ সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র—৫০ কোটি ডলারের বেশি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থ সহায়তাকারী দেশ ছিল যুক্তরাজ্য।

জাতিসংঘের সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০১৮ সালে পাওয়া সহায়তার ৮৪ শতাংশ যাবে যুদ্ধ ও সংঘাতপীড়িত দেশগুলোর শিশুদের সহায়তার জন্য। অর্থের উল্লেখযোগ্য অংশ যাবে সিরিয়া, জর্ডান ও লেবাননে। আর জর্ডান ও লেবানন শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নিয়েছে সিরিয়া থেকে যাওয়া অনেক শিশু ও তাদের পরিবার।