ফেসবুক ও টুইটারকে অভিযুক্ত করেছে ইসি

ব্যবহারকারীদের নানা তথ্য মুছে দেওয়া ও তাদের না জানিয়ে গোপনে শর্তাবলি পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারকে অভিযুক্ত করেছে ইউরোপীয় কমিশন (ইসি)। কমিশন বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) পরিচালিত গ্রাহক সুরক্ষা আইনের সঙ্গে ফেসবুক ও টুইটারের আচরণ সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ইউরোপীয় কমিশনের বরাত দিয়ে জার্মান প্রেস এজেন্সির এক খবরে আজ বৃহস্পতিবার বলা হয়েছে, ফেসবুক ও টুইটার গ্রাহকদের আপলোড করা তথ্যাদি মুছে ফেলছে এবং ব্যবহারকারীদের অবহিত না করেই ব্যবহারের নিয়মাবলি পরিবর্তন করছে। ইইউভুক্ত দেশগুলোতে এ দুটি সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারকারীদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণের তারা প্রমাণ পেয়েছে, যা ইইউ আইনের ভোক্তা সুরক্ষা আইনের পরিপন্থী। এ ক্ষেত্রে ইইউভুক্ত দেশগুলো এই দুটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে জরিমানা করতে পারে।

২০১৭ সালের মার্চ মাসে ইউরোপীয় কমিশন ওই দুটি সামাজিক মাধ্যমকে ইইউ ভোক্তা আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং ভোক্তাদের সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে সামাজিক মাধ্যম দুটি ব্যবহারকরীদের জন্য নিয়মাবলি ও শর্ত তৈরি করতে বলেছিল।

ইউরোপীয় কমিশনের বিচার, ভোক্তা ও লিঙ্গ সমতাবিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনার ভেরা জারোভা, সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলো তাদের ব্যবসায়িক অবস্থার সংশোধন না করলে জোর করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার হুমকি দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে ইইউ ভুক্ত দেশগুলোর এ নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীদের মামলা দায়ের করার অনুমতি দেবে।

ইউরোপীয় কমিশনের মতে, এসব নেটওয়ার্ক শুধু বিজ্ঞাপনের লেবেল এবং স্পনসর কনটেন্টের বিষয়টি আমলে নিয়েছে। জার্মানির রাজধানী বার্লিনে এই সপ্তাহে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষাবিষয়ক একটি সংগঠনের করা মামলায় ফেসবুক ব্যবহারকরীরা সফলতা অর্জন করেছেন। বার্লিন জেলা আদালতের নির্দেশে এখন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবহারকারী প্রকৃত নাম ব্যবহার ও নাম পরিবর্তনের বিষয়ে যে বাঁধা নিষেধ ছিল তা তুলে নেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে ব্যবহারকারীদের প্রকৃত নাম ব্যবহারে বাধ্য করা যাবে না। অর্থাৎ ভবিষ্যতে ফেসবুককে তার পরিষেবার জন্য ডিফল্ট সেটিংসে পরিবর্তন আনতে হবে।

এ ছাড়া বার্লিনের আদালত আরেক নির্দেশে মোবাইল ফোনের জন্য ফেসবুক অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহারকারীদের অবস্থান ও চ্যাটে অংশীদারদের নিজের অবস্থান শনাক্তকরণসহ গোপনীয় সেটিংস ডিফল্টের মাধ্যমে যে শনাক্তকরণ সার্চ ইঞ্জিন চালু রয়েছে, আদালত সেসব অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে।

বার্লিনের আদালতের এসব নির্দেশের বিরুদ্ধে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আরও ঊর্ধ্বতন আদালতে আপিল করবে বলে জানিয়েছে। তারা আরও বলেছে, ২০১৫ সাল থেকেই ফেসবুকে পণ্য এবং অন্যান্য বিষয়ে তাদের নীতিমালা অনেকটা পরিবর্তন করেছে। এ ছাড়া ২০১৮ সালের প্রথম থেকেই আরও কিছু নীতিমালা পরিবর্তনের কথা তারা চিন্তা করছে। কারণ এ বছর মে মাস থেকেই ইইউভুক্ত দেশগুলোতে এ যাবৎ কালের আইন সংশোধনী নীতি কার্যকর হবে।