ত্রিপুরায় বন্দুকতন্ত্র চলছে: মোদি

ত্রিপুরায় গণতন্ত্র নেই, ‘গান (বন্দুক) তন্ত্র’ চলছে। দ্বিতীয় দফায় ভোট চাইতে এসে এমনটাই দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভোট প্রচারের শেষ দফায় অরুণাচল থেকে আগরতলায় উড়ে আসেন মোদি। বিমানবন্দর থেকেই উড়ে যান দক্ষিণ ত্রিপুরার শান্তিরবাজারে। সেখান থেকে উড়ে আসেন আগরতলায়। রাজধানী আগরতলার বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামেও নির্বাচনী সভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। দুটি জনসভাতেই মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

শুক্রবার বেলা চারটায় ত্রিপুরা বিধানসভার ভোট প্রচার শেষ। এর আগে জমে উঠেছে প্রচার। তবে বৃহস্পতিবার প্রচারের বেশির ভাগ আকর্ষণটাই কেড়ে নেন নরেন্দ্র মোদি। এদিন তিনি বিজেপি প্রার্থীদের হয়ে দুটি সভা করেন।

সভা দুটিতেই রাজ্য সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে গণতন্ত্রের বদলে ‘গান (বন্দুক) তন্ত্র’ চলছে। সেই সঙ্গে অভিযোগ করেন কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের ‘দোস্তি’র। প্রথম দফার ভোট প্রচারে কংগ্রেসের নাম উচ্চারণ না করলেও এবার কংগ্রেসকে ‘ভোট কাটনে কা পার্টি’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।

মোদির ভাষণে বারবার উঠে আসে উন্নয়নের প্রশ্নে ত্রিপুরা সরকারের ব্যর্থতার বিষয়টি। সবকিছুতেই দলবাজির অভিযোগ করেন তিনি। ত্রিপুরার সরকারি কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারের বেতন থেকে শুরু করে বেকারদের কর্মসংস্থান—সব বিষয়েই একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দেন মোদি। ডাক দেন, ‘নিউ ইন্ডিয়া’র পাশাপাশি ‘নিউ ত্রিপুরা’ গড়ে তোলার।

মোদির এই ভোট প্রচারের পাশাপাশি কংগ্রেসের হয়ে এদিন প্রচারে ঝড় তোলেন অভিনেত্রী নাগমা, অভিনেতা রাজ বব্বর, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত প্রমুখ। প্রত্যেকের দাবি, নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা গোটা দেশেই কমছে। ত্রিপুরাতেও তার প্রভাব পড়বে। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে জনবিরোধী কার্যকলাপের উদাহরণ তুলে ধরেন তাঁরা। শুক্রবার শেষ বাজারে ত্রিপুরায় প্রচারে ঝড় তুলতে আসছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।

তৃণমূলের পক্ষেও বৃহস্পতিবার ভোট প্রচার করা হয়। ধলাই জেলার কুলাইতে তৃণমূলের জোটসঙ্গী আঞ্চলিক দল আইএনপিটির হয়ে ভোট প্রচারে নামেন অভিনেতা সোহম, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সৌগত রায়। সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও তৃণমূলের ভোট প্রচারে নামেন।

বিরোধীদের ভোট প্রচারের পাশাপাশি বামেরাও ভোট প্রচারে ঝড় তোলেন গোটা রাজ্যে। সুভাষিণী আলি, বৃন্দা কারাট, মো. সেলিমদের মতো সর্বভারতীয় সিপিএম নেতৃত্বের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারও এদিন একাধিক জনসভায় ভাষণ দেন। তুলে ধরেন বিজেপির অপশাসনের ছবি। দাবি করেন, ত্রিপুরায় অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার গঠন হচ্ছেই।

এদিকে নির্বাচন দপ্তরের তরফ নির্দেশ জারি করা হয়, বহিরাগতদের অবিলম্বে ত্রিপুরা ছাড়তে হবে। অর্থাৎ ভিন্ন রাজ্য থেকে আসা নেতা-কর্মীরা শুক্রবার বিকেলের পর ভোট না শেষ না হওয়া পর্যন্ত ত্রিপুরায় থাকতে পারবেন না। এ জন্য প্রতিটি জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৬০ সদস্যের ত্রিপুরা বিধানসভার ৫৯ আসনে ভোট গ্রহণ রোববার সকাল সাতটা থেকে। ইভিএমে ভোট নেওয়া হবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। ভোট গণনা ৩ মার্চ। একটি আসনে প্রার্থীর মৃত্যুতে ভোট হবে ১২ মার্চ। সেখানে গণনা ১৫ মার্চ।