শ্রমিকনেতা থেকে প্রেসিডেন্ট

সিরিল রামাফোসা। ছবি: রয়টার্স
সিরিল রামাফোসা। ছবি: রয়টার্স

দক্ষিণ আফ্রিকায় সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার পরই সবচেয়ে উচ্চারিত নাম সিরিল রামাফোসা। গতকাল তিনি নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।

রামাফোসার জন্ম ১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর জোহানেসবার্গের পশ্চিমে সোয়োতো শহরতলিতে। বর্ণবাদী শাসনবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলোর একজন তিনি। সত্তরের দশকে আইন বিষয়ে পড়ালেখার সময় তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭৪ সালে গ্রেপ্তার হন, ১১ মাস কারাভোগের পর মুক্তি পান। এরপর আবার পড়ালেখায় মনোনিবেশ।

শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর শ্রমিকনেতা হিসেবে আবির্ভূত হন রামাফোসা। ১৯৮২ সালে ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মাইনওয়ার্কার্স (এনইউএম) গঠন করেন তিনি। এই সংগঠনের ৩০ হাজার সদস্যের ১৯৮৭ সালের খনি অবরোধে নড়ে যায় শ্বেতাঙ্গ শাসনের ভিত। ১৯৯০ সালে নেলসন ম্যান্ডেলা মুক্তি পাওয়ার পর গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সময়টায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একজন ছিলেন রামাফোসা। নতুন সংবিধান প্রণয়ন কমিটিতে নেতৃত্ব দেন তিনি।

৬৫ বছর বয়সী রামাফোসার মধ্যে বহু আগেই সম্ভাবনা দেখেছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। তাঁর মতে রামাফোসা হলেন ‘নতুন প্রজন্মের সবচেয়ে প্রতিভাবান নেতাদের একজন’। ক্ষমতাসীন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে (এএনসি) ম্যান্ডেলা–পরবর্তী নেতা হিসেবে ১৯৯৯ সালে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন রামাফোসা। কিন্তু সে দফায় ব্যর্থ হতে হয় তাঁকে। এরপর ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। সাফল্যও পান। প্রভাবশালী বাণিজ্য সাময়িকী ফোর্বস-এর ২০১৫ সালের আফ্রিকার ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ৪২ নম্বরে ছিলেন রামাফোসা। 

রাজনৈতিক অঙ্গনে এক দশক অনুপস্থিত থাকার পর আবারও সক্রিয় হন রামাফোসা। ২০১২ সালে তিনি এএনসির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে ডেপুটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। গত ডিসেম্বর মাসে এএনসির সম্মেলনে জুমা-পরবর্তী নেতা হিসেবে তাঁকে নির্বাচন করা হয়।