রাখাইনে জাতিগত নিধন অব্যাহত, ধরন বদলেছে: জাতিসংঘ

রাখাইনে গত বছর সহিংসতা শুরু হওয়ার পর বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ছবি: এএফপি
রাখাইনে গত বছর সহিংসতা শুরু হওয়ার পর বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন বন্ধ হয়নি। কেবল সহিংসতার ধরন বদলেছে। আজ মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কর্মকর্তা এ কথা বলেছেন। বিবিসির খবরে এ কথা বলা হয়েছে।

ছয় মাস আগে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সামরিক অভিযান শুরু হলে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়। ছয় মাস পর জাতিসংঘ বলছে, সেখানে ‘সন্ত্রাসী অভিযান’ অব্যাহত রয়েছে এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে খাদ্যসংকটে রাখা হয়েছে।

গত বছরের আগস্ট থেকে কমবেশি সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, মিয়ানমারের সেনারা তাদের হত্যা করেছে, তাদের বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ করেছে।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, রাখাইনে তারা রোহিঙ্গা জঙ্গিদের বিরুদ্ধের লড়াই করছে। বেসামরিক লোকদের তারা হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেনি।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সহকারী মহাসচিব অ্যান্ড্রু গিলমুর বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন অব্যাহত রয়েছে।’ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না কক্সবাজারে আমরা যা দেখেছি এবং শুনেছি, তাতে অন্য কোনো সিদ্ধান্তে আমরা আসতে পারি।’

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে সম্প্রতি আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলার পর গিলমুর বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর গত বছরের রক্তক্ষয়ী অভিযান ও গণধর্ষণের পর সহিংসতা এখনো থামেনি। সহিংসতার প্রকৃতি বদলেছে। এখন ‘সন্ত্রাসী অভিযান’ চলছে অল্প মাত্রায় এবং রোহিঙ্গাদের এখন অনাহারে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে। কিন্তু গত সপ্তাহে বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমার সেনাসমাবেশ ঘটায়। এতে করে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়।

জাতিসংঘের দূত আরও বলেন, ‘স্থায়ীভাবে, নিরাপদে এবং মর্যাদার’ সঙ্গে রাখাইনে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি যেকোনো রোহিঙ্গার কাছে কল্পনাতীত। গিলমুর বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার প্রস্তুত—বিশ্বকে মিয়ানমার যখন এ বার্তা দিতে ব্যস্ত, একই সময়ে তারা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠানো অব্যাহত রেখেছে।’