উপনির্বাচনে ধরাশায়ী বিজেপি

গত বছর একই আসনে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। অথচ বছর ঘুরতেই হার দেখতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদির দলকে। বুধবার উত্তর প্রদেশে লোকসভার দুটি আসনের উপনির্বাচনে ভোট গণনা শুরু হয়েছে। ওই আসন দুটি আবার ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যের! জয়ের স্বাদ পেতে চলেছে সমাজবাদী পার্টি ও মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টির জোট।

অন্যদিকে বিহারে লোকসভার একটি ও বিধানসভার দুটি কেন্দ্রেও উপনির্বাচন হচ্ছে। তাতেও খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই বিজেপি। আরারিয়া লোকসভা কেন্দ্রে এগিয়ে আছে লালুপ্রসাদ যাদবের দল রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। উপনির্বাচন হচ্ছে বিধানসভার ভাবুয়া ও জেহানাবাদ আসনে। এর মধ্যে ভাবুয়া আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। কিন্তু জেহানাবাদে জয়ী হয়েছে আরজেডি।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি ও মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টির মধ্যে পুরোনো শত্রুতা ছিল। কিন্তু বিজেপিকে ঠেকাতে এবার এই দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐতিহাসিক সমঝোতা হয়েছে। দুই দলের পক্ষ থেকেই বলা হয়েছে, সময়ের প্রয়োজনেই এই বিরল সমঝোতা। আর তাতেই টলে গেছে বিজেপির দুর্গ। গোরখপুরে এগিয়ে আছে বিজেপি বিরোধীরা। অন্যদিকে ফুলপুর আসনে জয়ী হয়েছে সমাজবাদী পার্টি।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, উত্তর প্রদেশ ও বিহারে বিজেপি-বিরোধীদের সাফল্যের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে টুইট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অখিলেশের সমাজবাদী পার্টি, মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টি ও লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি-কে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।

উত্তর প্রদেশের গোরখপুর ও ফুলপুর আসন দুটি থেকে এর আগে নির্বাচিত হয়েছেন যথাক্রমে যোগী আদিত্যনাথ ও কেশব প্রসাদ মৌর্য। কিন্তু রাজ্য সরকারে বিজেপির এ দুই রাজনীতিক যোগ দেওয়ার পর আসন দুটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। ৪৫ বছর বয়সী যোগী আদিত্যনাথ গত ১৯ বছর ধরে গোরখপুর আসন থেকে বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। মূলত স্থানীয় গোরখনাথ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত এত দিন ওই আসনে জয়ী হয়েছেন। আদিত্যনাথের আগে তিনবার এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন মন্দিরের সাবেক প্রধান মোহান্ত আবেদ্যনাথ। এরপর মন্দিরের প্রধান হন যোগী আদিত্যনাথ। তিনি টানা পাঁচবার গোরখপুর থেকে নির্বাচিত হন। গত বছর আদিত্যনাথের নেতৃত্বেই উত্তর প্রদেশে বিজেপি সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।

উত্তর প্রদেশের এই দুই আসনে উপনির্বাচন উপলক্ষে বিজেপির পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি বলেছিলেন, এই উপনির্বাচনের মধ্য দিয়েই সামনের বছর অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আদিত্যনাথ বলেছিলেন, ‘আমাদের বিজয় হবে ২০১৪ সালের মতো।’ তবে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর ভোজবাজির মতো পাল্টে গেছে সব।

২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে ৮০টি আসনের মধ্যে ৭৩টিতে জয়ী হয়েছিল বিজেপি ও এর জোট। ওই সময় বহুজন সমাজবাদী পার্টি কোনো আসনেই জিততে পারেনি। তবে সমাজবাদী পার্টি পেয়েছিল পাঁচটি আসন।

গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশের ৪০৪টি আসনের মধ্যে ৩২৫টিতে জয় পেয়েছিল বিজেপি। অখিলেশ যাদবের দল জিতেছিল মাত্র ৪৭টি আসনে। অন্যদিকে বহুজন সমাজবাদী পার্টি ১৯টি আসনে জয় পেয়েছিল। কংগ্রেসের দখলে ছিল মাত্র ৭টি আসন।