তাজমহলের মালিকানা কার!

তাজমহল। ছবি: রয়টার্স
তাজমহল। ছবি: রয়টার্স

তাজমহলের মালিকানা কার? প্রশ্ন শুনে অবাকও হতে পারেন কেউ কেউ। কিন্তু হ্যাঁ, এ বিষয় নিয়েই ভারতে এখন গুঞ্জন। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।

উত্তর প্রদেশের সুন্নি ওয়াক্‌ফ বোর্ড ইতিমধ্যেই দাবি করেছে, তাজমহলের মালিকানা তাদের। সংস্থাটি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে বলছে, সম্রাট শাহজাহান একটি ওয়াক্‌ফনামায় তাজমহলসহ গোটা সম্পত্তি তাদের লিখে দিয়েছিলেন।

গত মঙ্গলবার এ নিয়ে শুনানি হয় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চে। এই বেঞ্চের অন্য দুজন সদস্য হলেন বিচারপতি এ এম খান উইলকর ও বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এদিনই সুপ্রিম কোর্ট ওয়াক্‌ফ বোর্ডের কাছে সম্রাট শাহজাহানের স্বাক্ষরিত নথি আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন।

প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ভারতের কেউ বিশ্বাস করবেন না যে তাজমহল ওয়াক্‌ফ বোর্ডের সম্পত্তি। এটা আদালতের সময় নষ্ট করা ছাড়া আর কিছু নয়।

সুন্নি ওয়াক্‌ফ বোর্ডের আইনজীবী ভি ভি গিরি আদালতে বলেন, সম্রাট শাহজাহান নিজেই তাজমহলকে ওয়াক্‌ফ বোর্ডের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। তখনই তিন বিচারপতি এ-সংক্রান্ত নথি দেখতে চান। প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে ওয়াক্‌ফনামায় স্বাক্ষর করতে পারেন সম্রাট শাহজাহান? কারণ, ১৬৫৮ সালে পুত্র আওরঙ্গজেব সম্রাট শাহজাহানকে বন্দী করে আগ্রা দুর্গের একটি কোঠায় রেখেছিলেন। সেখান থেকেই কারাবন্দী শাহজাহান স্মৃতিসৌধটি (তাজমহল) দেখতেন।

বিশ্বের সপ্তাচার্যের একটি ভারতের উত্তর প্রদেশের আগ্রা শহরে অবস্থিত তাজমহল। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর সহধর্মিণী বেগম মমতাজের স্মৃতি রক্ষায় ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে এই সৌধ গড়ে তোলেন। ৪২ একর জায়গাজুড়ে ১৬৩২ থেকে ১৬৫৩ সালের মধ্যে এটি তৈরি করা হয়। ১৯৮৩ সালে ইউনেসকো তাজমহলকে বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্মৃতিসৌধের তালিকাভুক্ত করে। তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই)। ১৬৬৬ সালে সম্রাট শাহজাহানের মৃত্যু হয়। তাজমহলের কাছেই আগ্রা দুর্গ অবস্থিত। দুটি স্থাপনাই যমুনা নদীর তীরে।