একজনকে খুঁজতে ৬ হাজার পুলিশ!

জাপানে কারাগার থেকে পালানো এক আসামিকে খুঁজতে কাজ করছেন ছয় হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য। প্রতীকী ছবি: রয়টার্স
জাপানে কারাগার থেকে পালানো এক আসামিকে খুঁজতে কাজ করছেন ছয় হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য। প্রতীকী ছবি: রয়টার্স

কারাগার থেকে পালানো এক আসামিকে খুঁজতে কাজ করছেন ছয় হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য। এ ঘটনা ঘটেছে জাপানে। এক সপ্তাহের বেশি সময় আগে ২৭ বছর বয়সী ওই আসামি কারাগার থেকে পালিয়ে যান। এত দিনেও তাঁকে গ্রেপ্তার করতে না পারার দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাপানের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক মন্ত্রী।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, কারাগার থেকে পালানো ব্যক্তির নাম তাতসুমা হিরাও। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাতসুমার বিরুদ্ধে কারাগারে চুরির অভিযোগও রয়েছে। তাঁর পালানোর খবর জাপানের স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে।

তাতসুমা হিরাওকে যে কারাগারে রাখা হয়েছিল, সেটি একটি মডেল কারাগার। সেখানে কারাবন্দীরা পরস্পরের সঙ্গে মেলামেশার অবাধ সুযোগ পান এবং কারাগারের ভেতরে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারেন। স্থানীয় পুলিশ বিভাগ বলছে, তাতসুমা উধাও হয়ে যাওয়ার পর থেকে কারাগারের বেশ কিছু জিনিস পাওয়া যাচ্ছে না। চুরি যাওয়া জিনিসের মধ্যে রয়েছে মোজা, একটি মোবাইল ফোন, একটি ওয়ালেট, এক জোড়া জুতা এবং গাড়ির একটি চাবি।

৮ এপ্রিল কারাগার থেকে পালান তাতসুমা। গাড়ি খোয়া যাওয়ার পর এর মালিকের জন্য একটি চিরকুটও রেখে গেছেন তিনি। পুলিশ সেই চিরকুট পেয়েছে। তাতে লেখা, ‘আমি আপনার গাড়িটি ধার নিচ্ছি, কিন্তু আমি এর কোনো ক্ষতি করব না।’

এখন পুলিশের হাজার হাজার সদস্য তাতসুমাকে ফের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। কিন্তু এখনো তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাপানের বিচারমন্ত্রী ইয়োকো কাওয়াকামি। তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ওই এলাকায় অনেক বয়স্ক লোক বাস করেন। তাই আমি দুঃখিত।’

বিচারমন্ত্রী ইয়োকো কাওয়াকামি আরও বলেন, জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মুকাইশিমা দ্বীপের স্কুলগুলোর আশপাশে কারাগারের ৯৬ জন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানেই লুকিয়ে আছেন তাতসুমা।

ওই দ্বীপটির আয়তন প্রায় ২২ বর্গকিলোমিটার এবং সেখানকার মোট অধিবাসীর সংখ্যা ২২ হাজার। সেখানকার স্থানীয় টেলিভিশন ফুজি টিভির খবরে বলা হয়েছে, কারাগার থেকে পালানো অপরাধীর লুকিয়ে থাকার খবরে শান্তিপূর্ণ দ্বীপটিতে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।

তাতসুমা যে কারাগার থেকে পালিয়েছেন, তা ১৯৬১ সালে চালু করা হয়েছিল। ওই সময় থেকে মাত্র ২১ জন অপরাধী এই কারাগার থেকে পালাতে পেরেছেন। উন্নত দেশ হিসেবে জাপানে অপরাধ সংগঠনের হার অনেক কম। কিন্তু দেশটিতে অপরাধীদের বারবার একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ার হার বেশি।