গান সন্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করে, অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা

মা-বাবা যদি সন্তানকে, বিশেষ করে কিশোর-কিশোরী সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে গান শোনেন, তাহলে ভবিষ্যতে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে।

গবেষকেরা দেখেছেন, যেসব অল্প বয়সী নারী বা পুরুষ শিশুকালে, বিশেষ করে কিশোর বয়সে গান শোনার অভিজ্ঞতা মা-বাবার সঙ্গে বিনিময় করেছেন, ভবিষ্যতে মা-বাবার সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক গভীর হয়েছে।

অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান ও এ-সম্পর্কিত গবেষণা প্রবন্ধের সহলেখক জেক হারউড বলেন, ‘আপনার যদি ছোট শিশু থাকে এবং আপনি যদি তার সঙ্গে গান শোনেন, তাহলে গান আপনাদের পরস্পরকে কাছে আসতে সাহায্য করে। পরবর্তী জীবনে তারা আপনার কাছে আরও আসবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনার যদি কিশোর বা কিশোরী সন্তান থাকে এবং আপনি যদি সফলভাবে তাদের সঙ্গে গান শোনেন, অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন, তাহলে ভবিষ্যতে সম্পর্ক অনেক দৃঢ় হবে। সম্পর্কের ব্যাপারে শিশুদের ধারণা কৈশোরের প্রারম্ভেই তৈরি হতে থাকে।’

গবেষকেরা অল্পবয়সী নারী-পুরুষের ওপর জরিপ করেছেন। এদের গড় বয়স ২১ বছর। জরিপে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা ৮ থেকে ১৩ বছর বয়সে এবং ১৪ বছর বা তার বেশি বয়সে মা-বাবার সঙ্গে সময় কাটানো, একসঙ্গে গান শোনা, কনসার্টে অংশ নেওয়া, যন্ত্র বাজানো এসব বিষয়ে স্মৃতিনির্ভর তথ্য দেন গবেষকদের। তাঁরা মা-বাবার সঙ্গে সম্পর্ককে কীভাবে দেখেন, সেই তথ্যও দেন। গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি ‘জার্নাল অব ফ্যামিলি কমিউনিকেশন’-এ ছাপা হয়েছে।
দুটো কারণে সম্পর্ক ভালো হয় বলে গবেষকেরা মনে করেন। প্রথমত, গান বা সংগীতের সময় যুগপৎ কিছু ঘটনা ঘটে, কিছু ঘটনার সমন্বয় হয়। যেমন একই সঙ্গে নাচা বা গান গাওয়া। এতে একের প্রতি অন্যের আগ্রহ ও পছন্দ বাড়ে। দ্বিতীয়ত, গান অন্যের আবেগ-অনুভূতির প্রতি একাত্ম করে তোলে। এই একাত্মতা বোধ ও সমন্বয় ভবিষ্যৎ সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করে।

গবেষকেরা বলছেন, সম্পর্ক গভীর করার জন্য জটিল কোনো কর্মপদ্ধতি বের করার দরকার নেই। সহজ উপায় আছে। আপনারা হয়তো গাড়িতে যাচ্ছেন। শিশুর কানে ইয়ারফোন থাকলে তাকে খুলে রাখতে অনুরোধ করুন এবং গাড়িতে সন্তানের সঙ্গে একই গান শুনুন। গবেষকেরা বলছেন, শিশুদের সঙ্গে গান শোনার, গান গাওয়ার সময় যত পারেন বাড়িয়ে চলুন।