পশ্চিমবঙ্গে জ্যান্ত সাপ নিয়ে অভিনয় করতে গিয়ে যাত্রাশিল্পীর মৃত্যু

যাত্রাপালার শিল্পী কালীদাসী মণ্ডল করলেন কী, দৃশ্যে বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলতে একটি জ্যান্ত সাপই নিয়ে গেলেন মঞ্চে। আর বিষধর সাপটিও সুযোগ বুঝে মেরে দিল ছোবল। ফলে যা হওয়ার তা-ই। প্রাণটাই গেল চলে।

পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাসনাবাদ থানার বরুণহাট বাজারের কাছে এ ঘটনা ঘটে। এ এলাকার কদমতলা গ্রামে কালীদাসী মণ্ডল (৬৩) থাকতেন। ২০ বছর ধরে ‘মনসামঙ্গল’ পালা করে এলাকায় নাম কুড়ান কালীদাসী। মনসা দেবীর ভূমিকায় অভিনয় করে আসছিলেন তিনি।

কালীদাসী এত দিন প্লাস্টিকের সাপ নিয়েই যাত্রাপালা করে এসেছেন। সম্প্রতি যাত্রাপালায় চমক দেওয়ার জন্য জীবন্ত সাপ নিয়ে পালা শুরু করেন।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে ‘মনসামঙ্গল’ পালা ছিল বরুণহাটের কাছে মনোরঞ্জন দাসের বাড়ি চত্বরে। মনোরঞ্জন দাস প্রতিবছর মনসাপূজার সময় যাত্রাপালার আয়োজন করে আসছেন। দুদিন ধরে চলছিল মনসাপূজার সেই অনুষ্ঠান। চার হাজার টাকার বিনিময়ে একটি জ্যান্ত গোখরো সাপ নিয়ে আসেন ওঝারা। কিন্তু কালীদাসী জানতেন না যে ওঝা ওই বিষধর সাপের বিষদাঁত না ভেঙেই এনেছেন। পালা চলাকালে একপর্যায়ে সাপটি হঠাৎ ছোবল মারে কালীদাসী মণ্ডলকে।

তিন ঘণ্টা ধরে ঝাড়ফুঁক দেওয়ার পর গ্রামের লোকজন কালীদাসীকে নিয়ে কাছের হাসপাতালে যান। চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, ২০ বছর ধরে কালীদাসী ‘মনসামঙ্গল’ পালা করে এলাকায় প্রচুর সুনাম কুড়ান। হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, বসিরহাট, বনগাঁসহ সুন্দরবন এলাকায় তাঁর প্রচুর নাম। আগে তিনি প্লাস্টিকের সাপ নিয়ে পালা করলেও কয়েক মাস ধরে তিনি জ্যান্ত সাপ নিয়ে এই পালা করছিলেন। আর জ্যান্ত সাপের পালা শুনে এলাকায় এই যাত্রাপালা দেখতে প্রচুর মানুষের ভিড় হয়।

এ ঘটনা জানার পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য বন অধিকর্তা রবিকান্ত সিনহা সাংবাদিকদের বলেন, জ্যান্ত সাপ নিয়ে খেলা দেখানো বেআইনি। এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।