পশ্চিমবঙ্গে কাল গণনা হবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোট

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্থগিত হওয়া ১৯ জেলার ৫৭২টি কেন্দ্রে ভোট হয়েছে আজ বুধবার। আজকের নির্বাচনেও বিভিন্ন কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া গেছে। কাল বৃহস্পতিবার ৩০৩টি কেন্দ্রে ভোট গণনার মধ্য দিয়ে শেষে হবে পশ্চিমবঙ্গের আলোচিত এ পঞ্চায়েত নির্বাচন।

গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গের ২০টি জেলায় তিন স্তরের ওই পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিশৃঙ্খল পরিবেশের কারণে ৫৭২টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছিল। মোট আসনের ৩৪ শতাংশে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই জিতে নেওয়ায় ভোট হয়েছিল ৬৬ শতাংশ আসনে। মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ৪৩ হাজার ৬৭টি।

আজ সকাল সাতটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এ ভোট গ্রহণ চলে। এর মধ্যে উত্তর দিনাজপুরে রায়গঞ্জে ভোটকর্মীদের নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ এনে বিক্ষোভ দেখান ভোটকর্মীরা। এ সময় রায়গঞ্জের এসডিও লাঞ্ছিত হন। তাঁর দিকে জুতো ছুড়ে মারা হয়, গায়ে পানি ঢেলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাঁকে মারধর করারও অভিযোগ ওঠে। উত্তর ২৪ পরগনার ভালুকা ভোটকেন্দ্রে শাসক দলের কর্মীরা ভোটকেন্দ্রে হামলা চালালে পুলিশ দুজনকে আটক করে। মালদহের রতুয়ায় শাসক দলের সমর্থকেরা অস্ত্র হাতে ব্যালট বাক্স লুট করে। এ সময় আতঙ্কে ভোটকর্মীরা পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে ব্যালট বাক্স উদ্ধার করে। মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায় একটি ভোটকেন্দ্রে বোমাবাজি করে ভোটকেন্দ্র দখল করে শাসক দলের সমর্থকেরা। এ সময় বোমার আঘাতে তিন ভোটার আহত হন বলে জানা যায়। পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থেকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র, বারুদ ও টিনের তৈরি বর্ম জব্দ হয়। হুগলির আরামবাগের একটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ পাশের ঘরে ঘুমিয়ে পড়লে ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা চালায় শাসক দলের কর্মীরা। বর্ধমানের রাণীগঞ্জে শাসক দল ভোটকেন্দ্রে ঢুকে পুলিশকে বাইরে দাঁড় করিয়ে সিল মারে। এ ছাড়া হাওড়ার উলবেড়িয়ার একটি কেন্দ্রে ভোট লুটের চেষ্টা চালানো হয়। তবে বুধবারের নির্বাচনে জীবনহানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

এর আগে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতায় ২৩ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ইতিহাসে একসঙ্গে এত প্রাণহানির ঘটনা কোনো দিন ঘটেনি। পাশাপাশি কিছু কেন্দ্রে পুনরায় ভোট নেওয়ার ঘটনাও এবার প্রথম ঘটে।

বুধবার পুনরায় যে ৫৭২টি কেন্দ্রে ভোট হয়, তার মধ্যে উত্তর দিনাজপুর জেলার ৭৩টি মুর্শিদাবাদের ৬৩, নদীয়ার ৬০, উত্তর ২৪ পরগনায় ৫৯, মালদহ ৫৫, হাওড়ায় ৩৮, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৩৫, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২৯, পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৯ ও পূর্ব বর্ধমানের ১৮টি কেন্দ্র ছিল।