নির্বাচনে জিতে মাদুরো আন্তর্জাতিক চাপের মুখে

ফল প্রকাশের পর সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন নিকোলাস মাদুরো। ছবি: রয়টার্স
ফল প্রকাশের পর সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন নিকোলাস মাদুরো। ছবি: রয়টার্স

ভেনেজুয়েলার সমাজতান্ত্রিক নেতা প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো এ নির্বাচনের নিন্দা জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।


প্রধান বিরোধী দলের নির্বাচন বয়কট ও ভোট কারচুপির অভিযোগের মধ্য দিয়ে আবার ছয় বছরের জন্য ক্ষমতায় এলেন মাদুরো।

৫৫ বছর বয়সী এই নেতা নিজের বিজয়কে ‘সাম্রাজ্যবাদের’ বিরুদ্ধে জয় বলে মনে করেন। তবে প্রধান বিরোধী দলগুলো অনিয়মের অভিযোগ তুলে এ ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি এখন কয়েক শ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এমনকি খাদ্য ও ওষুধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

মাদুরোর সমর্থকদের উল্লাস। ছবি: রয়টার্স
মাদুরোর সমর্থকদের উল্লাস। ছবি: রয়টার্স

ফল প্রকাশের পর মাদুরোর সমর্থকেরা প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস মিরাফ্লোরসের বাইরে লাল টুপি পরে ভেনেজুয়েলার পতাকা হাতে নেচে-গেয়ে বিজয় উদ্‌যাপন করে। রাজধানী কারাকাস শহরের কেন্দ্রস্থলে মধ্যরাত পর্যন্ত মাদুরোর সমর্থকেরা ‘চলো নিকো’ বলে স্লোগান দিতে থাকে।

উল্লসিত মাদুরো সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, বেঁচে থাকার বিপ্লব এটি। তিনি বলেন দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

এদিকে এ নির্বাচনকে ‘লজ্জা’ বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন দেশটি ভেনেজুয়েলার সব গুরুত্বপূর্ণ তেল খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও লাতিন আমেরিকার বেশির ভাগ মানুষ এ নির্বাচন পরিস্থিতিকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে বারবার সতর্ক করেছে।

চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা গতকালের ভোটের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলার নির্বাচন সত্যিকারের গণতন্ত্রের ন্যূনতম মান বজায় রাখেনি।’ অন্যান্য বড় বড় গণতান্ত্রিক দেশের মতো চিলিও এই নির্বাচনকে স্বীকার করে না।

মাদুরোর সমর্থকদের উল্লাস। ছবি: রয়টার্স
মাদুরোর সমর্থকদের উল্লাস। ছবি: রয়টার্স

পানামার সরকারও এই ফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। কিন্তু বামপন্থীদের পরিচালিত রাষ্ট্র কিউবা ও এল সালভাদর মাদুরোকে অভিনন্দন জানিয়েছে।

বিরোধী ডেমোক্রেটিক ইউনিটি জোট বলছে, জোটের বিভক্তির সুযোগ নিতেই এ নির্বাচন। কারণ, জোটের দুই জনপ্রিয় নেতাকে নির্বাচনের অংশ নেওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। আর অনেকে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।

গতকাল রোববার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিবিসির খবরে বলা হয়, এরই মধ্যে ৯০ শতাংশ ভোট গণনা করা হয়েছে। ন্যাশনাল ইলেকটোরাল কাউন্সিলের প্রধান তিবেসে লিউসেনা বলেন, মাদুরো পেয়েছেন ৫৮ লাখ ভোট, যা মোট ভোটের ৬৭ দশমিক ৭ শতাংশ। আর তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হেনির ফ্যালকন পেয়েছেন ১৮ লাখ ভোট, যা মোট ভোটের ২১ দশমিক ২ শতাংশ। এই নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৪৬ শতাংশ ভোট। ২০১৩ সালে প্রেসিডেনশিয়াল নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৮০ শতাংশ।