পশ্চিমবঙ্গে মাছের জোগান বাড়াতে সমুদ্রে খাঁচা পেতে ভেটকির চাষ হবে

ভেটকি মাছ
ভেটকি মাছ

মাছের জোগান বাড়াতে সমুদ্রে খাঁচা পেতে ভেটকি মাছের (কোরাল) চাষ করার উদ্যোগ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পরীক্ষামূলক প্রকল্প হিসেবে চলতি বছরেই রাজ্যের মৎস্য দপ্তর শুরু করছে এই খাঁচা পেতে ভেটকি মাছের চাষ।

প্রথম পর্যায়ে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার সমুদ্রে খাঁচা পেতে শুরু করা হবে এই চাষ। মৎস্যজীবীদের গড়া সমবায় সমিতি এই ভেটকি মাছের চাষের সঙ্গে যুক্ত থাকবে এবং দেখভাল করবে।

চাষের জন্য সমুদ্রে পাতা হবে ২০০টি খাঁচা। পূর্ব মেদিনীপুরের মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) রামকৃষ্ণ সরদার বলেছেন, এই জেলার খেজুরি থেকে দীঘা পর্যন্ত সমুদ্রে পাতা হবে ১০০টি খাঁচা। বাকি ১০০টি পাতা হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সমুদ্রে। প্রতিটি খাঁচা নির্মাণের খরচ পড়বে পাঁচ লাখ রুপি।

গত বছর পশ্চিমবঙ্গের মৎস্য দপ্তরের সাহায্য নিয়ে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যানিমেল অ্যান্ড ফিশারি সায়েন্স ইউনিভার্সিটি’ পরীক্ষামূলকভাবে সমুদ্রে খাঁচা ফেলে ভেটকি মাছের চাষে সফলতা পায়। এরপরেই রাজ্য মৎস্য দপ্তর এবার বাণিজ্যিকভাবে এই খাঁচা পেতে মৎস্য চায়ের উদ্যোগ গ্রহণ করে।

জানা গেছে, সমুদ্রে ২৬ ফুটের বেশি যেখানে পানির গভীরতা রয়েছে, এমন জায়গায় পাতা হবে এই খাঁচা। খাঁচা ভাসিয়ে রাখার জন্য ভাসমান ড্রাম বা বয়া ব্যবহার করা হবে। মরচে ধরার সমস্যা এড়ানোর জন্য খাঁচাগুলো লোহার রড দিয়ে তৈরি করা হলেও খাঁচার ওপর থাকবে ফাইবারের পুরো কোটিং। নৌকা বা ট্রলারের মতো এই খাঁচাগুলো নোঙর দিয়ে আটকানো থাকবে। ভাসমান খাঁচা থেকে ১২ ফুট লম্বা জাল ফেলা হবে। এই জালকে পানিতে ডুবিয়ে রাখার জন্য নিচে ভারী লোহার বল দেওয়া হবে। এরপর ওই জালের মধ্যে ছোট ভেটকি মাছের পোনা ছাড়া হবে।

জালের মধ্যে থাকা মাছের জন্য ওপর থেকে খাবার দেওয়া হবে। বছরের মধ্যে নয় মাস এই খাঁচায় ভেটকি মাছের চাষ করা যাবে। এই পরীক্ষামূলক প্রকল্প সফল হলে ভবিষ্যতে এই খাঁচার সংখ্যা বাড়িয়ে ভেটকি মাছের উৎপাদন বাড়ানো হবে। পরবর্তী সময়ে এভাবে অন্য মাছের চাষ করারও উদ্যোগ নেওয়া হবে।