ভারতে আরেক স্বঘোষিত ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

দাতী মহারাজ। ছবি: সংগৃহীত
দাতী মহারাজ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে আবারও স্বঘোষিত এক ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। দাতী মহারাজ নামের ওই ধর্মগুরুর দক্ষিণ দিল্লির ফতেপুর এলাকায় ‘শ্রী শান্তি ক্ষেত্র’ নামে আশ্রম রয়েছে। তাঁর নামে ধর্ষণের মামলা করেছেন ওই আশ্রমেরই এক শিষ্যা।

২০১৬ সালে ওই আশ্রমের ভেতরে ২৫ বছরের ওই নারী ধর্ষণের শিকার হন। দীর্ঘদিন বিষয়টি চাপা থাকলেও গত সোমবার ওই তরুণী আশ্রমের মহারাজের বিরুদ্ধে স্থানীয় ফতেপুর বেরি থানায় একটি ধর্ষণের মামলা করেন। মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ইতিমধ্যে তদন্তও শুরু করেছে।

এরই মধ্যে ওই তরুণী অভিযোগ আবার করেছেন, ধর্ষণের মামলা দায়েরের পর ধর্মগুরুর শিষ্যরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাঁকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।

এর আগে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ধর্ষণের দায়ে হরিয়ানার ‘কথিত সাধু’ ও ডেরা সাচা সৌদার প্রধান গুরুমিত রাম রহিম সিং ইনসানকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে তাঁরই আশ্রমের দুই সাধ্বীকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এখন কারাগারে আছেন রাম রহিম।

রাম রহিমের ঘটনার সপ্তাহখানেক পর উত্তর প্রদেশের বস্তি জেলার ‘সন্তু কুটির’ আশ্রমে স্বঘোষিত আরেক ধর্মগুরু স্বামী সচ্চিদানন্দের সন্ধান মেলে। তাঁর বিরুদ্ধে ওই আশ্রমেরই চার সাধ্বী অভিযোগ তোলেন। তাঁরা জানান, ওই আশ্রমের স্বামীজি এবং তাঁর সঙ্গী সাধুরা আশ্রমের সাধ্বীদের যৌন নির্যাতন করতেন। ধর্ষণ করতেন, এমনকি গণধর্ষণেরও শিকার হয়েছেন বহু সাধ্বী।

এই ঘটনার মাঝেই নতুন করে আরেক স্বঘোষিত ‘গডম্যান’ বা বাবার সন্ধান মেলে দিল্লি রোহিণী এলাকার একটি আশ্রম ও আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই আশ্রমের প্রধান স্বঘোষিত বাবা বীরেন্দ্র দেব দীক্ষিত। তিনিও তাঁর আশ্রমের নাবালিকা কিশোরীদের ওপর যৌন নির্যাতন চালাতেন। বিষয়টি অনুসন্ধানে ওই আশ্রমের নাবালিকা মেয়েদের অভিভাবকেরা দিল্লি হাইকোর্টে একটি আবেদন জানান। পরে আদালতের নির্দেশে ওই আশ্রম থেকে উদ্ধার করা হয় ৪০ কিশোরীকে। তাদের দিল্লির বিভিন্ন হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি ভারতের ভণ্ড বাবাদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদ। দেশের আখড়াগুলোর এটি একটি বড় সংগঠন। গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর এই আখড়া পরিষদ প্রথম প্রকাশ করেছিল ভণ্ড বাবাদের প্রথম তালিকা। তখন ওই তালিকায় ছিল ১৪ জন ভণ্ড বাবার নাম। তাঁরা হলেন গুরুমিত রাম রহিম সিং, আশারাম বাপু, রাধে মা, সচ্চিদানন্দ গিরি, স্বামী ওম, নির্মল বাবা, ইচ্ছাধারী বাবা, স্বামী অসীমানন্দ, নারায়ণ সাঁই, রামপাল, আচার্য কুশমুনি, ব্রাহাস্পতি গিরি, ওম নম শিবায় বাবা, মালখান সিং। এরপর সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও তিন ভণ্ড বাবা। তাঁরা হলেন দিল্লির বীরেন্দ্র দীক্ষিত, উত্তর প্রদেশের বস্তির সচ্চিদানন্দ সরস্বতী এবং এলাহাবাদের ত্রিকাল ভগবান। সর্বশেষ সংযোজিত হয়েছে দিল্লির দাতী মহারাজের নাম।