ক্লান্ত, বীতশ্রদ্ধ হয়ে আত্মহত্যা করলেন ভাইয়ূজি

ভারতের স্বঘোষিত এক মহারাজ ‘ভাইয়ূজি মহারাজ’ আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে নিজের আশ্রম বাড়িতে মাথায় গুলি চালান তিনি। পরে ঘরের দরজা ভেঙে তাঁকে বের করা হয়। কিন্তু স্থানীয় এম ওয়াই সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

৫০ বছর বয়সী এই মহারাজ মৃত্যুর আগে একটি সুইসাইড নোট লিখে যান। তাতে তিনি লেখেন, ‘পরিবারের দায়িত্ব নিতে কাউকে না কাউকে এগিয়ে আসতে হবে। আমি চলে যাচ্ছি। বড় বেশি ক্লান্ত, বীতশ্রদ্ধ’।

মধ্য প্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রে এই ধর্মগুরুর ছিল প্রচুর ভক্ত বা শিষ্য। তাঁর আসল নাম ছিল উদয় সিং দেশমুখ। এক সময় এই মহারাজ চাকরি করেছেন, মডেলিং করেছেন। সরাসরি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ না নিলেও তাঁর সঙ্গে ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের গভীর সম্পর্ক। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের বিখ্যাত সব মানুষের সঙ্গে ছিল তাঁর যোগাযোগ।

২০১১ সালে লোকপাল বিলের দাবিতে দিল্লিতে যখন আন্না হাজারে অনশন পালন করছিলেন তখন এই মহারাজ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অবতীর্ণ হন। তাঁকে সেদিন নিয়োগ করেছিলেন তৎকালীন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বিলাশ রাও দেশমুখ। ২০১১ সালে আবার গুজরাটের রাজধানী আহমেদাবাদে মোদিকে ফলের রস পান করিয়ে‘সদ্ভাবনা উপবাস’ ভাঙিয়েছিলেন।

আবার ২০১৬ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মহারাজ আহত হলে সেদিন তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন প্যাটেল প্রমুখরা।

মধ্যপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রে তাঁর প্রচুর ভক্ত থাকলেও তিনি মূলত আশ্রম চালাতেন মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে। মহারাজ ভাইয়ূজির প্রথম স্ত্রী মাধবী মারা যান ২০১৫ সালের নভেম্বরে। এরপর গত বছর এপ্রিলে তিনি ফের বিয়ে করেন ইন্দোরের মেয়ে আয়ূসী শর্মাকে। তাঁদের রয়েছে একটি কন্যাসন্তান।

মৃত্যুর ৪২ মিনিট আগে টুইটারে ভক্তদের জন্য মাসিক শিবরাত্রির শুভকামনা জানিয়েছিলেন।

এই মৃত্যুর পর মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা মানাক আগরওয়াল সরাসরি অভিযোগ তুলেছে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের বিরুদ্ধে। বলেছেন, ভাইয়ূজিকে দিয়ে মধ্য প্রদেশ সরকার অনেক কাজ করিয়ে নিয়েছে যেটা তিনি রাজি ছিলেন না। ফলে এতে বিরক্ত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।