যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী জোট গঠনে তৎপর চীন

শি জিনপিং ও ডোনাল্ড ট্রাম্প
শি জিনপিং ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতির বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো নিয়ে জোট গঠনের জোর তৎপরতা চালাচ্ছে চীন। এর অংশ হিসেবে চলতি মাসে আরও পরের দিকে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠেয় এক সম্মেলনে ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে যৌথ বিবৃতি প্রদানে ইইউকে চাপও দেওয়া হচ্ছে। তবে চীনের এ পদক্ষেপ বাধার মুখে পড়ছে। ইউরোপের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

ইইউ, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে ইস্পাত আমদানিতে ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ১ জুন থেকে কার্যকর হয়েছে। ইউরোপ থেকে গাড়ি আমদানির ওপরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি চীনা পণ্যের ওপরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন। এই ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয় ইইউ ও চীন।

চীনের বেইজিংয়ে ১৬-১৭ জুলাই সিনো-ইউরোপীয় সম্মেলন সামনে রেখে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসসহ বিভিন্ন স্থানে ইইউর নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন চীনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বৈঠকে দুই অর্থনৈতিক শক্তিধরের মধ্যে একটি জোট গঠন এবং ব্যবসায়িক সুযোগ বাড়ানোর অংশ হিসেবে বেশি করে চীনা বাজার গড়ার প্রস্তাব দেন তাঁরা। বৈঠকে চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী লিউ হি ও স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ইও ছিলেন।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চীন ও ইইউর যৌথ পদক্ষেপ শুরু করার একটি প্রস্তাবও রয়েছে। তবে ইইউর পাঁচ কর্মকর্তা ও কূটনীতিক বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য গোষ্ঠী ইউরোপীয় ইউনিয়ন ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে গিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে জোট বাঁধার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে।

এরপরও সিনো-ইউরোপীয় সম্মেলন থেকে একটি ন্যায়সংগত ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হতে পারে। ঘোষণাপত্রে বহুপক্ষীয় বাণিজ্য-ব্যবস্থায় উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করা এবং ডব্লিউটিওর আধুনিকীকরণ একটি কর্ম কমিটি গঠনের প্রতিশ্রুতি থাকবে।

চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী লিউ হি বলেন, আসন্ন সম্মেলনে প্রথমবারের মতো কিছু পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে চীন, যেটি ইউরোপীয় বিনিয়োগ মুক্ত করতে পারে। ওই সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, প্রধানমন্ত্রী লি কেছিয়াং ও ইইউর শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

কর্মকর্তারা বলেছেন, ইইউকে কাছে টানার অংশ হিসেবে চীনের গণমাধ্যমগুলোয় প্রচার হচ্ছে, ইইউ চীনের পাশে রয়েছে। যদিও দক্ষিণ চীন সাগর ও বাণিজ্য বিতর্কে মতভেদের কারণে ২০১৬ ও ১৭ সালে আগের দুই সম্মেলন শেষ হয় বিবৃতি ছাড়াই।

একজন ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেন, ‘ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ইইউকে পাশে চায় চীন। আমরা এটা করতে চাই না এবং আমরা তাদের সেটা জানিয়েছি।’

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেইজিং সম্মেলনের এই রকম উদ্দেশ্যের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।

তবে বুধবার চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ায় এক মতামতে বলা হয়েছে, ‘চীন ও ইইউকে হাতে হাত রেখে বাণিজ্য সংরক্ষণবাদ রোখা উচিত। চীন ও ইউরোপীয় দেশগুলো প্রকৃত অংশীদার। তারা প্রবলভাবে বিশ্বাস করে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য মুক্তবাণিজ্য একটি শক্তিশালী পন্থা।