ভারতের বেপরোয়া ধনীদের নিয়ন্ত্রণ করবে কে?

ভারতে ধনী-গরিবের মধ্যকার ব্যবধান দিন দিন বেড়েই চলেছে। মুম্বাই শহরের এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সুউচ্চ ভবনের পাশেই রয়েছে নিম্নবিত্ত শ্রেণির সারি সারি বাড়ি। ছবি: রয়টার্স
ভারতে ধনী-গরিবের মধ্যকার ব্যবধান দিন দিন বেড়েই চলেছে। মুম্বাই শহরের এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সুউচ্চ ভবনের পাশেই রয়েছে নিম্নবিত্ত শ্রেণির সারি সারি বাড়ি। ছবি: রয়টার্স
>ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ছিলেন অর্থনীতিবিদ রঘুরাম রাজন। তিনি বলছেন, ‘রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি নোংরা যোগসূত্র গড়ে উঠেছে। রাজনীতিবিদেরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছেন। সেই অর্থ ব্যয় হচ্ছে নির্বাচনে। এভাবে ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষার জন্যই নির্বাচনে বারবার জিতছেন রাজনীতিকেরা।’

আন্তিলিয়া। ভারতের রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রির কর্ণধার মুকেশ আম্বানি পরিবার নিয়ে এই ভবনে থাকেন। ধারণা করা হয়, বহুতল এই বাড়ি তৈরিতে মুকেশ খরচ করেছেন প্রায় ১০০ কোটি ডলার। এই বাড়ির পুরোটাই স্টিল ও কাচ দিয়ে তৈরি। শুধু গাড়ি রাখার জন্যই ছয়টি তলা ব্যবহার করা হয়। আছে ঝুলন্ত বাগান থেকে শুরু করে কৃত্রিম ফুটবল মাঠ পর্যন্ত! অথচ এই সুউচ্চ ভবনের ছাদ থেকে তাকালেই চোখে ভাসবে নিচের জীর্ণ ঘরবাড়ি ও বস্তি। মুম্বাইয়ের অর্ধেক মানুষ এখনো বস্তিতেই থাকেন।

বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারত ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক—দুই ক্ষেত্রেই ভারতের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী চীন। সামরিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে চীনের সঙ্গে ভারতের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। তবে বিশ্বায়নের যুগে অর্থনৈতিক প্রভাব বেশি কার্যকর। এই প্রতিযোগিতায় ভারতের রেসের ঘোড়া তার শতকোটিপতি বা বিলিয়নিয়াররা। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই বিলিয়নিয়াররাই ভারতে সম্পদের বৈষম্য প্রকট করে তুলছেন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রের আইনকানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গড়ে তুলছেন টাকার পাহাড়। সেই পাহাড়ের নিচেই চাপা পড়ছেন ভারতের খেটে খাওয়া সব মানুষ।

ভারতের বেপরোয়া শতকোটিপতিদের নিয়ে সম্প্রতি একটি বই লিখেছেন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের শিক্ষক জেমস ক্র্যাবট্রি। বইয়ের নাম ‘দ্য বিলিয়নিয়ার রাজ: আ জার্নি থ্রু ইন্ডিয়াস নিউ গিল্ডেড এজ’। লেখকের দাবি, ভারতের নব্য বিলিয়নিয়াররা খুব কম সময়ে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন। অর্থের সঙ্গে সঙ্গে বোনাস হিসেবে প্রচণ্ড ক্ষমতার অধিকারী হয়েছেন। বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় ভারতে এই ঘটনাটি সবচেয়ে দ্রুতগতিতে ঘটেছে।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতে ক্রমেই বেড়ে চলেছে বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতিদের সংখ্যা। বর্তমানে এই অভিজাত ক্লাবের সদস্য ১১৯ জন। গত বছরের হিসাব অনুযায়ী তাঁদের সবার মোট সম্পদের অর্থমূল্য প্রায় ৪৪ হাজার কোটি ডলার। অথচ বছরে ভারতের মানুষের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৭০০ ডলার। অর্থনৈতিক উন্নয়নের শুরুতে থাকা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় ভারতে নব্য শতকোটিপতিদের এই উত্থান বিস্ময়কর।

মুকেশ আম্বানি হলেন ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তাঁর বাসভবনের পাশেই দেখা যাবে জীর্ণশীর্ণ ভবন। ছবি: রয়টার্স
মুকেশ আম্বানি হলেন ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তাঁর বাসভবনের পাশেই দেখা যাবে জীর্ণশীর্ণ ভবন। ছবি: রয়টার্স

ধনীরা কেমন?
ভারতের অভিজাত বিলিয়নিয়ার ক্লাবের অনেক সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অর্থের ভান্ডার গড়ে তুলতে নানা অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। এসব করে পাওয়া অর্থ তাঁরা ব্যয় করছেন ব্যক্তিগত বিলাসিতায়। অথচ অনেক বিলিয়নিয়ারের প্রতিষ্ঠান প্রায় দেউলিয়া হয়ে গেছে। বেতন বাকি আছে কর্মীদেরও।

এমনই একজন হলেন বিজয় মাল্য। কয়েক বছর আগেও ভারতের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এখন তাঁর বিরুদ্ধে ভারত সরকার নানা অভিযোগ এনেছে। যদিও রাজ্যসভার সাবেক সদস্য বিজয়ের অভিযোগ, তাঁকে বলির পাঁঠা বানিয়ে ‘জাতীয় ভিলেনে’ পরিণত করেছে বিজেপি সরকার।

২০১৬ সালের শুরুতে দেশে অভিযোগের মুখোমুখি হয়ে বিজয় মাল্য ভারত ছাড়েন। এখন যুক্তরাজ্যে আছেন। বিজয়ের সঙ্গে গত বছর দেখা করেছিলেন জেমস ক্র্যাবট্রি। লন্ডনে বিজয়ের বাড়িতে ঢুকেই বিলাসবহুল রোলস রয়েস ও বেন্টলি গাড়ির সমাহার দেখতে পান লেখক। গাড়িগুলোর নম্বরপ্লেটে বিজয়ের নাম খোদাই করা ছিল। বাড়ির ভেতরে সব জায়গায় চোখে পড়ে বিলাসিতার ছাপ। এমনকি সেই বাড়ির শৌচাগারের সবকিছুই বিশেষভাবে সোনালি রঙে রাঙানো, খোদাই করা আছে বিজয়ের নামও। অথচ ভারতের মাটিতে বিজয় মাল্য একজন ঋণখেলাপি, যিনি তাঁর কিংফিশার নামের প্রতিষ্ঠানকে ডুবিয়েছেন।

অন্যদিকে, ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি রুপি তুলে নিয়ে স্রেফ হাওয়া হয়ে গেছেন নীরব মোদি। তাঁর গয়নার ব্যবসা ছিল। ফোর্বস সাময়িকীর তালিকায় ২০১৬ সালে ভারতের অন্যতম ধনকুবের ছিলেন এই হীরা ব্যবসায়ী। পরের বছর ধনকুবেরদের বিশ্ব তালিকাতেও স্থান পেয়েছিলেন। তিনি ২০১১ সাল থেকে এই ব্যাংক জালিয়াতি শুরু করেছিলেন। তা নীরবেই ছিল সাত বছর। চলতি বছর প্রকাশ্যে আসে। এরপর থেকেই লাপাত্তা ব্যবসায়ী নীরব মোদি। গত মে মাসে লন্ডনের রাস্তায় বহাল তবিয়তে ঘুরতে দেখা গেছে তাঁকে।

এ তো গেল দুটি উদাহরণ। এমন আরও আছে। অথচ শতাধিক বিলিয়নিয়ার থাকার পরও ভারত এখনো একটি দরিদ্র দেশ। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী, দেশটির সর্বোচ্চ রোজগার করা মাত্র ১০ শতাংশ ব্যক্তির দখলে আছে জাতীয় আয়ের ৫৫ শতাংশ। আর এতেই বৈষম্যের চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ভারতের নব্য বিলিয়নিয়ারদের নিয়ে বই লিখেছেন জেমস ক্র্যাবট্রি। বইটির প্রচ্ছদ। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের নব্য বিলিয়নিয়ারদের নিয়ে বই লিখেছেন জেমস ক্র্যাবট্রি। বইটির প্রচ্ছদ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের অবস্থা আদতে কী?
বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ ব্রাংকো মিলানোভিচের মতে, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও রাশিয়ার তুলনায় ভারতে আয়বৈষম্য সবচেয়ে বেশি। সংবাদমাধ্যম স্ক্রল ডট ইন এ খবর জানিয়েছে। বলা হচ্ছে, ভারতীয় সমাজে স্তরবিন্যাস অনেক বেশি। এ কারণেই দুর্নীতির বিস্তার হয়েছে দেশটিতে, যাকে আশ্রয় করে সহজেই সম্পদের পাহাড় গড়তে পেরেছেন ভারতের বিলিয়নিয়াররা।

জেমস ক্র্যাবট্রি বলছেন, ভারতে এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, যেখানে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের দহরম-মহরম বেশি। এই বাড়তি খাতিরই ব্যবসায়ীদের দিচ্ছে বাড়তি সুবিধা। মাত্রাছাড়া এই ধনী ব্যক্তিরা দেশের প্রচলিত আইনের ধার ধারেন না। তাঁরা নিজেদের নিয়মে চলেন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, ভারতের ১৩০ কোটি মানুষ যে আইন মেনে চলেন, গুটিকয় মানুষের ক্ষেত্রে তা বদলে যাচ্ছে। যে আইনে সাধারণ মানুষকে পোরা হচ্ছে গারদে, সেই আইনকেই বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন বিলিয়নিয়াররা।

মুম্বাইভিত্তিক চিন্তক প্রতিষ্ঠান আইডিএফসি ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী রুবেন আব্রাহাম বলেন, ‘ভারতের এই বড় ব্যবসায়ীদের নিয়মের অধীনে নিয়ে আসাই আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ভারতের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্যই এটি ঠিক করা প্রয়োজন।’

ফোর্বস ম্যাগাজিন বিলিয়নিয়ারদের তালিকা তৈরি করছে অনেক দিন ধরেই। ১৯৯০-এর দশকে এই সাময়িকীর তৈরি বার্ষিক তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন মাত্র দুজন ভারতীয় ধনকুবের। অথচ ২০১৬ সালের তালিকায় ঢুকেছে ৮৪ জনের নাম। মজার ব্যাপার হলো, ভারতের জিডিপি এখন যত, তা ২০০৬ সালেই অর্জন করেছিল চীন। কিন্তু তখন চীনে বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ছিল মোটে ১০!

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ১৯৯১ সালের পর সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া অর্থনৈতিক সংস্কারের সূত্র ধরেই এই উত্থান সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে, ২০০০ সালের পর থেকে বিশ্বব্যাপী সুদের হার কমে যাওয়ায় ভারতের নব্য বিলিয়নিয়াররা ব্যাংক থেকে দুহাতে ঋণ নিয়েছেন। এর সঙ্গে ছিল বিদেশি বিনিয়োগ। ফলে ব্যাংক-ব্যালেন্স বাড়াতে খুব একটা কষ্ট হয়নি তাঁদের।

বইয়ে জেমস ক্র্যাবট্রি লিখেছেন, বর্ণ, জাত ও ধর্মের ভিত্তিতে ভারতীয় সমাজ বহু ভাগে বিভক্ত। এই বিভক্ত সমাজে নানামাত্রিক বৈষম্য আগে থেকেই ছিল। তাই আয় ও সম্পদের দিক থেকে দেশটিতে নতুন করে যে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে, সেটি বিশ্বব্যাপী খুব একটা আলোড়ন ফেলেনি। ১৯৪৭ সালের আগে ভারতের ছিল ঔপনিবেশিক শাসন। ব্রিটিশ রাজপরিবারের শাসন থেকে মুক্তির পর শুরু হয় স্বাধীন সরকারের শাসন। এখন ভারতে চলছে বিলিয়নিয়ারদের শাসন।

ব্যাংক জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি রুপি হাতিয়ে নিয়েছেন নীরব মোদি। ছবি: সংগৃহীত
ব্যাংক জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি রুপি হাতিয়ে নিয়েছেন নীরব মোদি। ছবি: সংগৃহীত

বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে?
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সাধারণ ভোটারদের আশা ছিল, এসব বিলিয়নিয়ার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেবে মোদির সরকার। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদি তেমন কিছুই করতে পারেননি। বিজয় মাল্য বা নীরব মোদির মতো কিছু ঘটনা প্রকাশ্যে এলেও তার মধ্য দিয়ে সামগ্রিকভাবে সরকারি নিয়ন্ত্রণের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাতন্ত্রেও কোনো পরিবর্তন আসেনি।

জেমস ক্র্যাবট্রি লিখছেন, ভারতে থাকা পুরোনো সরকারব্যবস্থায় দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে শুরু থেকেই। এই দুর্নীতির আখের গুড় খাচ্ছেন আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। যে উদ্দেশ্য নিয়ে দেশটিতে মুক্ত বাজার অর্থনীতির সূচনা হয়েছিল, তা পূরণ হয়নি। দেশটিতে আগে খুচরা দুর্নীতি চালু ছিল। কিন্তু অর্থনৈতিক সংস্কারের পর তা পাইকারি হারে ছড়িয়ে পড়ে। এখন সরকারি সেবা পেতেও দেশটিতে ঘুষ দিতে হয় নাগরিকদের।

ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোর তহবিল ফুলেফেঁপে উঠছে বিলিয়নিয়ারদের অর্থে। কিছু পেতে চাইলে কিছু তো দিতেই হয়! সেটিই করছেন রাজনীতিবিদেরা। ফলাফল, অন্ধকারে থেকে যাচ্ছে ধনকুবেরদের অনিয়ম। বিশেষ নাগরিকের মর্যাদা পাচ্ছেন তাঁরা।

নানা অভিযোগের মুখোমুখি হয়ে দেশ ছেড়েছেন বিজয় মাল্য। ভারতে সরকারি হিসাবে তিনি ঋণখেলাপি। কিন্তু লন্ডনে আরাম-আয়েশেই দিন কাটছে তাঁর। ছবি: রয়টার্স।
নানা অভিযোগের মুখোমুখি হয়ে দেশ ছেড়েছেন বিজয় মাল্য। ভারতে সরকারি হিসাবে তিনি ঋণখেলাপি। কিন্তু লন্ডনে আরাম-আয়েশেই দিন কাটছে তাঁর। ছবি: রয়টার্স।

ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ছিলেন অর্থনীতিবিদ রঘুরাম রাজন। তিনি বলছেন, ‘রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি নোংরা যোগসূত্র গড়ে উঠেছে। রাজনীতিবিদেরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছেন। সেই অর্থ ব্যয় হচ্ছে নির্বাচনে। এভাবে ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষার জন্যই নির্বাচনে বারবার জিতছেন রাজনীতিকেরা।’

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে ভারতে ধনী ও গরিবের পার্থক্য বাড়তেই থাকবে। দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত নিবন্ধে ফরাসি অর্থনীতিবিদ থোমা পিচেতি বলেছেন, এভাবে বৈষম্য বাড়তে থাকলে ধনী-গরিবের মধ্যকার উত্তেজনাও বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, ‘সমাজে খুব বেশি বৈষম্য থাকলে এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তার যদি শান্তিপূর্ণ সমাধান করা না যায়, তবে একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দেয়। কারণ, তখন এই বৈষম্যকে অন্য প্রক্রিয়ায় সমাধান করার চেষ্টা হতে পারে। আর সেটি খুবই ভয়ানক পন্থা।’

জেমস ক্র্যাবট্রি বলছেন, ১৯ শতকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে গিয়েছিল, সেটি এখন ভারতে হচ্ছে। আর এর বেশির ভাগটাই এসেছে বেসরকারি উদ্যোগে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের নেতৃত্ব চীনের হাত থেকে ভারতের কাছে চলে যাওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে ভারতের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যদি সঠিক না থাকে, তার সদ্ব্যবহার সম্ভব হবে না। এ জন্য বিলিয়নিয়ারদের কর্তৃত্ব কমিয়ে আনতে হবে—এটি কখনোই চিরস্থায়ী ব্যবস্থা হতে পারে না। অন্যথায়, ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোর ভবিষ্যৎ আরও শোচনীয় হবে।