'পুতিন হলেন রাশিয়ার রজনীকান্ত'

বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল শেষে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের সব আলো কেড়ে নেন ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: টুইটার
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল শেষে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের সব আলো কেড়ে নেন ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: টুইটার

২০১৮ বিশ্বকাপ শেষ। চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ও রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া দেশে ফিরেছে। আয়োজনের জন্য সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে রাশিয়া। আয়োজনের কোথাও ছিল না কোনো কমতি। জমকালো স্টেডিয়াম, স্টেডিয়ামে বিনা মূল্যে ট্রেনযাত্রার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সবকিছুতেই ধন্যবাদ পাওয়ার মতোই করেছে রাশিয়া। সেই ধন্যবাদের মধ্যেই একটি কারণে নেটিজেনদের ট্রলের শিকার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ঘটনাটি রোববারের ফাইনাল শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সময়ে। সেখানে পুরো আলোটাই নিজের দিকে টেনে নিয়েছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। আরও যথার্থভাবে বললে বলা ভালো তাঁর ছাতা। পুরস্কার প্রদান শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই মস্কোয় শুরু হয়ে যায় প্রবল বৃষ্টি। আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করেই পুতিন প্রস্তুতি সেরেই এসেছিলেন। বৃষ্টি শুরু হতেই দেখা যায়, দেহরক্ষী বিশাল ছাতা মেলে ধরেছেন পুতিনের মাথায়। অথচ তখন পাশে দাঁড়িয়ে ভিজছেন তিন-তিনজন প্রেসিডেন্ট। ফিফার জিয়ান্নি ইনফান্তিনো, ফ্রান্সের ইমানুয়েল মাখোঁ ও ক্রোয়েশিয়ার কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ। আর ঘটনা চোখ এড়াইনি অনেকেরই। শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যঙ্গ, সমালোচনা। ব্যঙ্গ করে একজন বলেছেন, আমার ছাতা কেন অন্যদের দেব। কেউ কেউ আবার প্রশংসাও করেছেন। বলেছেন, এতেই প্রমাণিত হয় তিনিই আসলে বস। তিনি রাশিয়ান রজনীকান্ত।

বৃষ্টি শুরু হলেই দেহরক্ষী বিশাল ছাতা খুলে ধরেন পুতিনের মাথায়। কিন্তু পাশে থাকা জিয়ান্নি ইনফান্তিনো, ইমানুয়েল মাখোঁ ও কলিন্দা গ্রাবার-তারোভিচ ভিজছেন। ছবি: টুইটার
বৃষ্টি শুরু হলেই দেহরক্ষী বিশাল ছাতা খুলে ধরেন পুতিনের মাথায়। কিন্তু পাশে থাকা জিয়ান্নি ইনফান্তিনো, ইমানুয়েল মাখোঁ ও কলিন্দা গ্রাবার-তারোভিচ ভিজছেন। ছবি: টুইটার

এবারের বিশ্বকাপের সেরা উদীয়মান এমবাপ্পে, সেরা খেলোয়াড় কিংবা কলিন্দা গ্রাবারের প্রাণোচ্ছল উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা না হয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রে পুতিনের ছাতা। বিশ্বকাপের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান মঞ্চে বাঁ পাশ থেকে প্রথমেই ছিলেন ইনফান্তিনো, পুতিন, ইমানুয়েল মাখোঁ ও কলিন্দা গ্রাবার। বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখেই হয়তো প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলেন পুতিন। বৃষ্টি শুরু হতেই দেখা যায়, পুতিনের দেহরক্ষী বিশাল ছাতা খুলে ধরেছেন তাঁর মাথায়। দুই পাশে থাকা জিয়ান্নি ইনফান্তিনো, ইমানুয়েল মাখোঁ ও কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ ভিজছেন। ছাতার নিচে পুতিনের মুখে অকৃত্রিম স্মিত হাসি। এই মুহূর্তটি নেটিজেনদের চোখ এড়ায়নি। তাই পুরস্কার বিতরণীর পর থেকে যাবতীয় বিষয় ছাপিয়ে চর্চা শুরু হয় পুতিনের ছাতা নিয়ে। ঠাট্টা-রসিকতার ঝড় বইছে। তবে কিছুক্ষণ পরই অবশ্য বাকি তিনজনের মাথায় ছাতা মেলে ধরা হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন বলছেন, পুতিন দেখিয়ে দিলেন কেন তিনি পুতিন। কেউ বলছেন, ছাতা দিয়েই তিনি বাকি সবার আলো ঢেকে দিলেন। আবার পুতিনের ‘পাওয়ার স্ট্যান্স’ দেখে অনেকেই মনে করেছেন ‘গডফাদার’-এর কথা।

বৃষ্টি শুরু হলেই দেহরক্ষী বিশাল ছাতা খুলে ধরেন পুতিনের মাথায়। কিন্তু পাশে থাকা জিয়ান্নি ইনফান্তিনো, ইমানুয়েল মাখোঁ ও কলিন্দা গ্রাবার-তারোভিচ ভিজছেন। ছবি: টুইটার
বৃষ্টি শুরু হলেই দেহরক্ষী বিশাল ছাতা খুলে ধরেন পুতিনের মাথায়। কিন্তু পাশে থাকা জিয়ান্নি ইনফান্তিনো, ইমানুয়েল মাখোঁ ও কলিন্দা গ্রাবার-তারোভিচ ভিজছেন। ছবি: টুইটার

একজন নেটিজেন মজা করে লিখেছেন, পুতিন মাখোঁকে বলছেন, ‘আমার ছাতা আমারই। এটা তোমার নয়। ফ্রান্স ফ্রাই পানিতে ভিজে সিক্ত হয়ে যাও।’

একজনের মন্তব্য এমন, ‘স্যার, আমরা কয়টি ছাতা আনব? পুতিনের উত্তর, শুধু একটা। তারা আমাদের জিততে দেয়নি। তাদের ভিজতে দাও।’ ভারতের দক্ষিণের সিনেমার অন্যতম শক্তিমান অভিনেতার রজনিকান্তের সঙ্গে পুতিনের তুলনা করে একজন লিখেছেন, ‘পুতিন হলেন রাশিয়ান রজনীকান্ত।’

তবে বিশ্বকাপ আয়োজন করে কিন্তু সন্তুষ্ট রুশ প্রেসিডেন্ট। নিজেদের আয়োজনকে এক শতে এক শ দিয়েছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, এ রকম একটি সফল বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পেরে তিনি গর্বিত। অবশ্য বিশ্বকাপ আয়োজনের সাফল্যের প্রথম সার্টিফিকেটটাই কিন্তু পুতিনকে দিয়েছেন বিশ্বের আরেক ‘পাওয়ারফুল’ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, টিওআই, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।