ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু এজেন্সি বন্ধ করতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন

জ্যারেড কুশনার। রয়টার্স ফাইল ছবি
জ্যারেড কুশনার। রয়টার্স ফাইল ছবি

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু এজেন্সি (আনরোয়া) বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া কুশনারের ই-মেইল থেকে জানা গেছে, তিনি মনে করেন, আনরোয়া বন্ধ হলে তা মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়ার জন্য সহায়ক হবে।

ওয়েব পত্রিকা এক্সিওস জানিয়েছে, এ বছরের গোড়ার দিকে এক ই-মেইলে কুশনার আনরোয়ার কার্যাবলি ‘ব্যাহত’ করার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেন, জাতিসংঘের এই সংস্থা দুর্নীতিগ্রস্ত ও অদক্ষ। এর কার্যক্রম মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়ার পক্ষে মোটেই সহায়ক নয়। এই সংস্থা মধ্যপ্রাচ্যে অচলাবস্থা টিকিয়ে রাখার পক্ষে কাজ করছে।

উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর লাখ লাখ ফিলিস্তিনি আরব নিজ গৃহ হারিয়ে জর্ডান ও একাধিক নিকটবর্তী আরব দেশে আশ্রয় গ্রহণ করলে তাদের জরুরি সাহায্যার্থে জাতিসংঘের উদ্যোগে আনরোয়ার প্রতিষ্ঠা হয়। ৭০ বছর ধরে এই সংস্থা উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিদের খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন জরুরি সাহায্য দিয়ে আসছে। বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ ফিলিস্তিনি এই সংস্থার কাছ থেকে সাহায্য পেয়ে থাকে।

আনরোয়া বিলুপ্তির দাবি এই প্রথম উঠল তা নয়; ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছেন। ইসরায়েল মনে করে, আনরোয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ফলে ফিলিস্তিনিদের ‘উদ্বাস্তু’ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। ভবিষ্যতে কোনো এক সময় এসব উদ্বাস্তু তাদের নিজ বাসভূমে ফিরে আসার দাবি জানাতে পরে। আনরোয়া বিলুপ্ত হলে তেমন দাবির যৌক্তিকতা আর থাকবে না। একই লক্ষ্যে গত মাসে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট ইসরায়েলকে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে। ইসরায়েলি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প প্রশাসন এই বছর জানুয়ারিতে আনরোয়ার জন্য মার্কিন অনুদান ৫০ শতাংশ হ্রাস করার কথা ঘোষণা করে। কুশনারের ই-মেইল থেকে পরিষ্কার, শুধু অনুদান হ্রাস নয়, হোয়াইট হাউসে এই সংস্থা পুরোপুরি বিলুপ্ত করার পক্ষে।

উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর জামাতাকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন। জানা গেছে, কুশনারের নেতৃত্বে একটি শান্তি পরিকল্পনা ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ বছরের গোড়ার দিকে পরিকল্পনাটি আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থিত করার কথা ছিল। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আপত্তির কারণে তা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গি ও জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের প্রতিবাদে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এক বছর ধরে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে শান্তিপ্রক্রিয়া বিষয়ে সব আলোচনা বয়কট করে আসছে।